হেলাল উদ্দিন, টেকনাফ ॥ টেকনাফের হ্নীলা-হোয়াইক্যংয়ের ১ হাজার ৪শ’ বেকার জনগোষ্ঠীর কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে সরকার গৃহীত ৪০ দিনের কর্মসৃজন প্রকল্প চলছে কাগজে-কলমে। প্রকৃত শ্রমিক ও কাজের মান তদারকের দায়িত্বে নিয়োজিত কর্তাকর্তারা ‘সব ঠিক আছে’ মার্কা নামকাওয়াস্তে পরির্দশন করছেন। এ নিয়ে খোদ ১৬ প্রকল্প বাস্তবায়নকারী অধিকাংশ চেয়ারম্যান ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়, উপজেলার হ্নীলা ও হোয়াইক্যং ইউনিয়নে ২০১২-’১৩ সেশনের কর্মসৃজন প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য ১৬ প্রকল্পের অধীনে ১ হাজার ৪শ’ শ্রমিকের বিপরীতে ৯৮ লাখ টাকা বরাদ্ধ দেয়া হয়। এরমধ্যে হ্নীলা ইউনিয়নে ৭ প্রকল্পের অধীনে ৭শ’ শ্রমিকের মধ্যে ১নং ওয়ার্ডে ইউনুছ মেম্বারের অধীনে ১শ’ ৪০ জন শ্রমিকের বিপরীতে ৯ লাখ ৮০ হাজার টাকা, ২নং ওয়ার্ডে ফরিদুল আলম মেম্বারের অধীনে ৬০ জন শ্রমিকের বিপরীতে ৪ লাখ ২০ হাজার টাকা, ৩নং ওয়ার্ডে মোহাম্মদ হোছন বাইলা মেম্বারের অধীনে ৬০ শ্রমিকের বিপরীতে ৪ লাখ ২০ হাজার টাকা, ৪নং ওয়ার্ডে হোছাইন আহমদ মেম্বারের অধীনে ২শ’ ৬০ জন শ্রমিকের বিপরীতে ১৮ লাখ ২০ হাজার টাকা, ৫নং ওয়ার্ডে রাশেদা মহিলা মেম্বারের অধীনে ৬০ জন শ্রমিকের বিপরীতে ৪ লাখ ২০ হাজার টাকা, ৬নং ওয়ার্ডে আবুল হোছন মেম্বারের অধীনে ৬০ জন শ্রমিকের বিপরীতে ৪ লাখ ২০ হাজার টাকা, ৭ নং ওয়ার্ডে সফিক আহমদ মেম্বারের অধীনে ৬০ জন শ্রমিকের বিপরীতে ৪ লাখ ২০ হাজার টাকাসহ সর্বমোট ৪৯ লাখ টাকা বরাদ্ধ দেয়া হয়।
অপরদিকে হোয়াইক্যং ইউনিয়নে ৯ প্রকল্পের অধীনে ৭শ’ শ্রমিকের মধ্যে ২নং ওয়ার্ডে মোস্তফা কামাল মেম্বারের অধীনে ৫০ জন শ্রমিকের বিপরীতে ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা, ৫নং ওয়ার্ডে ছৈয়দ হোছন মেম্বারের অধীনে ৫০ জন শ্রমিকের বিপরীতে ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা, ৬ নং ওয়ার্ডে নূর আহমদ মেম্বারের অধীনে ৫০ শ্রমিকের বিপরীতে ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা, ৭নং ওয়ার্ডে রৌশন আলী মেম্বারের অধীনে ৫০ জন শ্রমিকের বিপরীতে ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা, ৮নং ওয়ার্ডে জাহেদ মেম্বারের অধীনে ৬০ জন শ্রমিকের বিপরীতে ৪ লাখ ২০ হাজার টাকা, ৯নং ওয়ার্ডে হাছান আহমদ মেম্বারের অধীনে ৫০ জন শ্রমিকের বিপরীতে ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা, মহিলা মেম্বার ছেনুয়ারা বেগমের অধীনে ২৯০ জন শ্রমিকের বিপরীতে ২০ লাখ ৩০ হাজার টাকা, মমতাজ মহিলা মেম্বারের অধীনে ৫০ জন শ্রমিকের বিপরীতে ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা এবং জেসমিন আরা মহিলা মেম্বারের অধীনে ৫০ জন শ্রমিকের বিপরীতে ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকাসহ সর্বমোট ৪৯ লাখ টাকা বরাদ্ধ দেয়া হয়।
সরেজমিন পরিদর্শনকালে দেখা গেছে, প্রায় প্রকল্পে কাজ চললেও নির্দিষ্ট সংখ্যক শ্রমিক উপস্থিত নেই। যা উপস্থিত আছে তাতেও প্রকল্প চেয়ারম্যানের অনুপস্থিতির সুযোগে কাজ চলছে ঢিলেঢালাভাবে। পরিদর্শনকালে দেখা গেছে, বেশীরভাগ প্রকল্পের ক্ষেত্রে নামেমাত্র মাটি চাপা দেয়া হচ্ছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রকল্প কাজ দেখতে তদরকী দায়িত্বে নিয়োজিত ট্যাগ অফিসাররা ‘কখনো-সখনো’ ‘দায়সারাভাবে’ প্রকল্প এলাকা ঘুরে যান।
এদিকে চলমান প্রকল্পের মধ্যে বেশীরভাগ শ্রমিক ও বরাদ্ধ জনৈক ক্ষমতাসীন নেতার প্রকল্পে হওয়ায় অন্যান্যদের মধ্যে ক্ষুদ্ধ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়।
Leave a Reply