ফরিদুল মোস্তফা খান..কক্সবাজার সদর-রামু আসনের সংসদ সদস্য লুৎফুর রহমান কাজল রামুতে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের ক্যাং (উপাসনালয়) ও বসতবাড়িতে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় তাকে অভিযুক্ত করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দেওয়া বক্তব্যকে অবিবেচনাপ্রসূত, বালখিল্য ও ঘটনায় জড়িত প্রকৃত অপরাধীদের আড়াল করার সামিল বলে মন্তব্য করেছেন। এমপি কাজল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্য নাকচ করে দিয়ে বলেন, এক বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী যুবকের ফেসবুকে কোরআন অবমাননামূলক ছবি পোস্ট করার প্রতিবাদে রামুতে মুসলমানরা বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠলে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের অনুরোধে আমি রাত ১২টার পর রামুর উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেই। রামু সদরে পৌঁছে আমি দেখি, বিক্ষুব্ধ লোকদের সমাবেশে উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান সোহেল সরওয়ার কাজল বক্তব্য দিচ্ছেন। পরে আমিও বক্তব্য দিই এবং লোকজনকে শান্ত থাকতে বলি। এসময় ইউএনও, ভাইস চেয়ারম্যান মুন্নী, এসএসপি সার্কেল এবং ওসিও ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন। এসময় আমি উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে ১৪৪ ধারা জারি করতে এবং পুলিশ সুপারকে অতিরিক্ত ফোর্স মোতায়ানের অনুরোধও করি। পরে রাত প্রায় সোয়া ২টার দিকে আমি কক্সবাজারে ফিরে আসি। রোববার দুপুরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ঘটনাস্থলে পরিদর্শনে আসেন। এসময় মন্ত্রী ঘটনার জন্য তার মন্ত্রণালয়ের পুলিশ বাহিনীর গাফিলতিকে দায়ী করেন। কিন্তু ঢাকায় ফিরে তিনি ঘটনার জন্য উল্টো আমাকে দায়ী করলেন। যা অবিবেচনাপ্রসূত, বালখিল্য, রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত ও ঘটনায় জড়িত প্রকৃত অপরাধীদের আড়াল করার সামিল।
আমি দ্ব্যর্থভাবে বলতে চাই যে, হিন্দু, মুসলমান, বৌদ্ধ, খৃস্টান সবাই আমরা বাংলাদেশী ভাই। এটাই আমাদের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি। এটা আমাদের গর্বও। এই সম্প্রীতি বজায় রাখার জন্য আমি প্রত্যেক ধর্মীয় অনুষ্ঠানে বারবার একথা বলে আসছি। অতীতে কখনও মুসলমানদের সাথে বৌদ্ধদের কোন দ্বন্দ্ব সংঘাত হয়নি। কিন্তু বর্তমান মহাজোট সরকার আমাদের জাতির উপর আজ এক কলংক তিলক লাগিয়ে দিয়েছে। এরআগে হাটহাজারীতেও সংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতন চালানো হযয়েছে। বিগত আওয়ামীলীগ সরকারের আমলে মহেশখালীতে হিন্দু মন্দির ভাংচুর হয়েছে। কিন্তু কখনও বিএনপি সরকারের আমলে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট হয় এমন ধিক্কারজনক ঘটনা ঘটেনি। রামুর ঘটনাটিও সরকারী দলের কিছু সংখ্যক নেতাকর্মী সংঘটিত করেছে বলে আমার ধারণা। ইতোমধ্যে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা ঘটনায় জড়িতদের ব্যাপারে সরকারের বিভিন্ন সংস্থাকে তথ্য দিয়েছে। ফলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী উদোড় পিন্ডি বুদোড় ঘাড়ে চাপতে আমি দায়ী করে বক্তব্য দিয়ে জনগণকে প্রকৃত সত্য আড়াল করার চেষ্টা করছেন। আমি মনে করি, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ধরে রাখতে ব্যর্থতার জন্য অবিলম্বে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পদত্যাগ করা উচিৎ।
পরিশেষে, আমি বৌদ্ধদের পবিত্র উপাসনালয় ও বসতবাড়ীতে হামলার তীব্র নিন্দা ও ধিক্কার জানিয়ে প্রকৃত দোষীদের অবিলম্বে খুঁজে বের করে তাদের শাস্তি বিধানের দাবী জানাচ্ছি। পাশাপাশি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করার উস্কানী দাতা পবিত্র কোরআনের অবমাননাকারী যুবকেরও কঠোর শাস্তির দাবী জানাচ্ছি।
Leave a Reply