শুক্রবার ০৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৮ ৯:১৯ অপরাহ্ন
826 বার এই নিউজটি পড়া হয়েছে
টেকনাফ নিউজ ডেস্ক []
সীমান্ত লঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে নিজ নিজ দেশের প্রচলিত আইনে ব্যবস্থা গ্রহণে সম্মত হয়েছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও ভারতীয় সীমান্ত রক্ষা বাহিনী (বিএসএফ)। একই সাথে অসতর্কতাবশত সীমান্ত অতিক্রমকারী নাগরিকদের নিজ দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর নিকট হস্তান্তরের ক্ষেত্রেও একমত পোষণ করেছে দুই বাহিনী। শুক্রবার সন্ধ্যায় নয়াদিল্লিতে বিজিবি-বিএসএফ মহাপরিচালক পর্যায়ের সম্মেলন শেষে দুই বাহিনীর যৌথ বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়।বিজিবির জনসংযোগ কর্মকর্তা মুহম্মদ মোহসিন রেজা পরিবর্তন ডটকমকে এ তথ্য জানান।
এর আগে শুক্রবার নয়াদিল্লিতে জয়েন্ট রেকর্ড অব ডিসকাশন (জেআরডি) স্বাক্ষরের মধ্যদিয়ে বিজিবি-বিএসএফ মহাপরিচালক পর্যায়ের সম্মেলনের আনুষ্ঠানিকতা শেষ হয়। শনিবার ভারতে অবস্থানরত বাংলাদেশ প্রতিনিধিদল দেশে ফিরবেন।দুই বাহিনীর যৌথ বিবৃতিতে জানানো হয়, সম্মেলনের নির্ধারিত বিষয়ের উপর আলোচনার মাধ্যমে বিজিবি-বিএসএফ বেশ কিছু সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে।
সম্মেলনে সীমান্তে বাংলাদেশি নাগরিক হতাহতের ঘটনা রোধে বিএসএফ পদক্ষেপ গ্রহণ করায় বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মো. সাফিনুল ইসলাম বিএসএফ প্রধানকে ধন্যবাদ জানান। তবে হতাহতের ঘটনা এখনো শূন্যের কোঠায় নেমে না আসায় উদ্বেগ প্রকাশ করেন তিনি।
অন্যদিকে বিএসএফ মহাপরিচালক কে কে শর্মা বলেন, সীমান্তে হতাহতের ঘটনা এড়াতে বিএসএফ নন-লিথেল (Non-leathal) অস্ত্র ব্যবহার করছে। এমনকি সশস্ত্র সীমান্ত অপরাধীদের বিপদজনক আক্রমণের শিকার হয়েও বিএসএফ সর্বোচ্চ সহিষ্ণুতা প্রদর্শন ও ন্যুনতম শক্তি প্রয়োগের নীতি অনুসরণ করে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, সীমান্ত অপরাধীদের দ্বারা অবৈধভাবে সীমান্ত অতিক্রম বন্ধ করাসহ তাদের বিরুদ্ধে দেশের প্রচলিত আইনে ব্যবস্থা গ্রহণ করার মাধ্যমে হতাহতের ঘটনা শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনা সম্ভব। এ বিষয়ে প্রতিরোধমূলক যৌথ প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে। বিএসএফ মহাপরিচালক ভারতীয় বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীদের অনুসন্ধানে বিজিবিসহ বাংলাদেশি অন্যান্য সংস্থার সহযোগিতার প্রশংসা করে এ বিষয়ে আরো সহযোগিতা অব্যাহত রাখার অনুরোধ জানান।
বাংলাদেশে এ ধরণের কোন গোষ্টীর অস্তিত্ব নেই উল্লেখ করে বিজিবি মহাপরিচালক সুস্পষ্টভাবে জানিয়ে দেন যে, বাংলাদেশ কখনই তার ভূমি অন্য কোনো দেশের বিরুদ্ধে কোন অপরাধী/সন্ত্রাসী গোষ্ঠীকে ব্যবহারের সুযোগ দেয় না।এছাড়া ইচ্ছাকৃত সীমান্ত লঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে নিজনিজ দেশের প্রচলিত আইনে ব্যবস্থা গ্রহণ এবং অসতর্কতাবশত সীমান্ত অতিক্রমকারী নাগরিকদের নিজ দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর নিকট হস্তান্তরের ক্ষেত্রেও দুই বাহিনী সম্মত হয়েছেন।
দুই বাহিনী মানব পাচারের বিরুদ্ধে প্রতিরোধমূলক প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখার পাশাপাশি পাচারের শিকার হওয়া নাগরিকদের দ্রত উদ্ধার করাসহ তাদের পুনর্বাসনে নিজ নিজ দেশের আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণে সম্মত হয়েছেন।বিএসএফ মহাপরিচালক ভারতীয় জাল মুদ্রা পাচার রোধে সহযোগিতা প্রদানের জন্য বিজিবিসহ বাংলাদেশের অন্যান্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর প্রশংসা করেন।
দুই পক্ষ মাদক, অস্ত্র, স্বর্ণ পাচারসহ সবধরনের চোরাচালান বন্ধে একে অপরের গৃহীত পদক্ষেপের প্রশংসা করেন এবং চোরাচালান রোধের যৌথ প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে সম্মত হন।সীমান্তে উন্নয়নমূলক অধিকাংশ কাজ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে আলোচনার মাধ্যমে উভয়পক্ষ পরস্পরের সম্মতি লাভ করায় নিজেদের সন্তুষ্টি ব্যক্ত করেন।দুই মহাপরিচালক যশোর সীমান্তে ‘ক্রাইম ফ্রি জোন’ এর কার্যকারিতার প্রশংসা করেন এবং অন্যান্য সীমান্তে পর্যায়ক্রমে ‘ক্রাইম ফ্রি জোন’ ঘোষণা করতে নীতিগতভাবে সম্মতি প্রকাশ করেন।মহাপরিচালক পর্যায়ের পরবর্তী সীমান্ত সম্মেলন ২০১৯ সালের মার্চ/এপ্রিল মাসে ঢাকায় অনুষ্ঠানের ব্যাপারেও এই সম্মেলনে দুই বাহিনী নীতিগতভাবে সম্মত হয়েছেন।