মায়ানমারে সাম্প্রতিক ঘটে যাওয়ায় দাঙ্গার ৪৪ দিন অতিবাহিত হলেও এখনো পর্যন্ত ব্যবসায়ীদের বর্ডার পাস ও একদিনের ট্রানজিট পাস বন্ধ রয়েছে। ফলে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা বিপাকে পড়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এতে করে সীমান্ত বাণিজ্যর সাথে জড়িতরা দূর্বিসহ দিন কাটাচেছ বলে জানিয়েছে ভূক্তভোগীরা।
এদিকে, মায়ানমারে রাখাইনদের অত্যাচারে মুসলিম রোহিঙ্গা নাগরিকরা টেকনাফ সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের চেষ্টায় রয়েছে। ৮ জুন শুক্রবার জুমার নামাজের পর মায়ানমার মংডুতে সম্প্রদায়িক দাঙ্গা শুরু হলে ১১ জুন থেকে ট্রলার ও নৌকা যোগে রোহিঙ্গারা বঙ্গোপসাগর ও নাফনদী হয়ে শাহপরীরদ্বীপ ও সেন্টমার্টিন সীমান্ত এলাকা দিয়ে অনুপ্রবেশের চেষ্টা চালাচ্ছে। বর্ডার র্গাড বাংলাদেশ বিজিবি ও কোস্টগার্ড তার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলে। বর্তমানে দালাল চক্র ও প্রভাবশালীর কারনে কিছু এলাকায় রোহিঙ্গা ঢুকে পড়েছে বলে স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন। গতকাল রবিবার পর্যন্ত বিজিবি, কোষ্টগার্ড ও পুলিশ ১ হাজার ৫৫৮ জন রোহিঙ্গাকে মায়ানমারে ফেরত পাঠিয়েছে। স্থানীয় কয়েকজন দালালসহ ২৮ জনকে আটক করে আদালতে প্রেরন করেছে সংশ্লিষ্টরা।
কোষ্টর্গাড সূত্র জানায়, সাগর ও নদীতে কোষ্টগার্ডের টহল জোরদার রাখা রয়েছে। মায়ানমারে দাঙ্গার পর থেকে এ পর্যন্ত টেকনাফ, শাহপরীরদ্বীপ ও সেন্টমাটিন থেকে ৩৬৭ জন রোহিঙ্গাকে মানবিক সহযোগিতা দিয়ে স্বদেশে ফেরত পাঠানো হয়। ইতিমধ্যে কতিপয় পাচারকারী দালাল প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে কিছু রোহিঙ্গার অনুপ্রবেশ ঘটিয়েছে।
পুলিশ সুত্র জানায়, মায়ানমার দাঙ্গার পর রোহিঙ্গা নাগরিকরা সীমান্ত দিয়ে অনুপ্রবেশের চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। বিজিবি, কোষ্টগার্ডের পাশাপাশি পুলিশও কিছু রোহিঙ্গা আটক করে। আটকৃতদের বিজিবির মাধ্যমে স্বদেশে ফেরত পাঠানো হয় এবং ১৩ রোহিঙ্গাসহ চিহ্নিত পাচারকারী দালালদের আটক ও আসামী করে মামলা রুজু করা হয়। তাছাড়া রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ রোধে এলাকার প্রধান সড়ক গুলোতে পুলিশ চেকপোষ্ট বসায়। এছাড়াও বিভিন্ন এলাকায় বাড়ানো হয়েছে নজরদারী।
অন্যদিকে দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রতি বজায় রাখতে রাখাইন পল্লী ও দোকান পাটেও পুলিশি টহল ও গোয়েন্দা নজরদারী বৃদ্ধি করা হয়।
বিজিবি সূত্র জানা যায়, সীমান্ত এলাকায় বিজিবির কড়া নজরদারী রয়েছে। মায়ানমারে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার পর থেকে রবিবার পর্যন্ত শাহপরীরদ্বীপ, সাবরাং, টেকনাফ, দমদমিয়া, লেদা, হ্নীলা, জিম্মংখালী ও হায়াইক্যং বিওিপি বিজিবির জওয়ানরা ১ হাজার ১৯১ জন রোহিঙ্গাকে মানবিক সহযোগিতা দিয়ে স্বদেশে ফেরত পাঠিয়েছে। রবিবার পর্যন্ত ১৫ রোহিঙ্গাসহ স্থানীয় পাচারে সহযোগীতাকারী কিছু দালালদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। তাছাড়া সীমান্ত পরিস্থিতি নিয়ে মায়ানমারের নাসাকা বাহিনীকে পতাকা বৈঠকের জন্য কয়েক বার আমন্ত্রণ জানানো হলেও তারা কোন সাড়া দিচেছনা। মায়ানমারের সাথে পতাকা বৈঠকের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। বর্তমানে সীমান্ত দিয়ে কতিপয় পাচারকারী প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে কিছু রোহিঙ্গাদের অনুপ্রবেশ ঘটাচেছ। তাদের বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা নেওয়া হচেছ বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট।
এসব তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন টেকনাফ ৪২ বিজিবি ব্যাটালিয়ন কমান্ডার লে. কর্ণেল জাহিদ হাসান।
Leave a Reply