সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি খুনের ঘটনায় সাতজনকে গ্রেফতার করেছে র্যাব। আজ মঙ্গলবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাগর-রুনির হত্যাকাণ্ডের তদন্ত সংশ্লিষ্ট তথ্য প্রদানে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী এই তথ্য জানান। গ্রেফতারকৃতরা হলেন, রফিক, বকুল, মিন্টু, সাইদ, কামরুল, পলাশ রুদ্র পাল ও তানভির। এদের মধ্যে তানভির রুনির বন্ধু ছিলেন।
রফিক, বকুল, মিন্টু, সাইদ ও কামরুল ডা. নিতাই হত্যাকাণ্ডের আসামি। এছাড়া পলাতক সিকিউরিটি গার্ড হুমায়নকে ধরতে ১০ লক্ষ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করা হয়েছে। প্রেস ব্রিফিংয়ে স্বরাষ্টমন্ত্রী আরো জানান, এই হত্যাকাণ্ডের সঠিক মটিভ এখনো উত্ঘাটিত হয়ন
সাগর-রুনি খুনের ঘটনার তদন্তে অনেক প্রশ্নের উত্তর মিলেনি। এ হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে ডা. নিতাই হত্যার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ৫ জন, রুনির বন্ধু তানভীর গ্রেফতার এবং পলাতক সিকিউরিটি গার্ড হুমায়ন ওরফে এনামুলকে ধরিয়ে দিতে ১০ লাখ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করা নিয়ে অনেকটা রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে। পেশাদার ডাকাতের সঙ্গে রুনির বন্ধু তানভীরের কী সম্পর্ক থাকতে পারে তা নিয়ে কোন তদন্ত এখনও করেনি র্যাব।
অন্যদিকে, সিকিউরিটি গার্ড হুমায়ন কবীরকে খুনের ঘটনার দিন আটক করা হলেও তিন দিন পর ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ তাকে ছেড়ে দেয়। এমনকি হুমায়ন কবীরে মোবাইল ফোনটি ডিবির সহকারী কমিশনার সুলাইমানের ভাই মোসলেম উদ্দিনের কাছ থেকে উদ্ধার করে র্যাব। প্রশ্ন উঠেছে- হুমায়ন কবীরকে এখন ধরিয়ে দিতে ১০ লাখ টাকা পুরস্কার ঘোষণা একটি আইওয়াশ হতে পারে।
অন্যদিকে, ডা. নিতাই হত্যাকাণ্ডে গ্রেফতারকৃত ৫ জনের ডিএনএ নমুনার সঙ্গে সাগর-রুনির হত্যাকাণ্ডে সংগৃহীত আলামতের ডিএনএ নমুনার কোন মিল খুঁজে না পাওয়া গেলেও কী কারণে ঐ ৫ জনকে এই হত্যার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট করা হচ্ছে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। উল্লেখ্য, গত ২৩ আগস্ট ভোর রাতে মহাখালী বক্ষব্যাধি হাসপাতালের কোয়ার্টারে ডাকাতদের হাতে খুন হন ডা. নারায়ন চন্দ্র দত্ত নিতাই।
তানভীরের সঙ্গে রুনির ঘনিষ্ঠতা ও বন্ধুত্বের অনেক প্রমাণ র্যাব পেয়েছে। এমনকি সাগর-রুনি খুন হওয়ার আগে ১০ ফেব্রুয়ারি রুনির সঙ্গে তানভীর দেখা করেছিলেন এমন তথ্যও পেয়েছে। কিন্তু রুনির সঙ্গে কাজী গোলাম তৌফিক নামে আরো একজন বন্ধুর ঘনিষ্ঠতা ছিল। রুনির মোবাইল ফোনে নিহতের ৭ দিন পূর্ব পর্যন্ত যে ৫০৮ টি কল (ইনকামিং ও আউটগোয়িং) করা হয়েছে তার মধ্যে একটি নম্বর থেকে ২৬৬ টি কল ও ৯৬ টি এসএমএস আদান-প্রদান হয়েছে। গোয়েন্দারা এই মোবাইল ফোন নম্বরের মালিক কাজী গোলাম তৌফিককে ঐ সময় আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করে ছেড়ে দেয়। এর আগে সাগর-রুনি নিহত হওয়ার আগের দিন ৫৮/এ/১, পশ্চিম রাজাবাজারের ফ্ল্যাটে তৌফিক নামে এক ব্যক্তি ঐ ফ্ল্যাটে প্রবেশের ব্যাপারে অ্যাপার্টমেন্টের রেজিস্টার বুকে নাম লিপিবদ্ধ ছিল। তবে সেখানে কমলাপুরের ঠিকানা দিয়ে কেটে দেয়া হয়েছিল। ২৬৬ বার কল করা ঐ ব্যক্তির সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তখন জানানো হয়, তার নাম কাজী গোলাম তৌফিক, বাসা তেজগাঁওয়ের মনিপুরী পাড়ার ১৯/৪/বি নম্বর বাড়িতে। কাজী গোলাম তৌফিক প্রভাবশালী ব্যক্তি হওয়ায় র্যাব তাকে আটক করেও ছেড়ে দেয়।
Leave a Reply