আকবর হোসেন বিবিসি বাংলা, ঢাকা…বাংলাদেশের পার্বত্য জেলা রাঙামাটিতে বাঙালিদের সাথে পাহাড়িদের সংঘর্ষের পর সেখানে উত্তেজনা বিরাজ করছে।পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে, টহল দিচ্ছে সেনাবাহিনী। পুলিশ বলছে, সংঘর্ষে অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছে।
সম্পর্কিত রাঙামাটি সরকারি কলেজে একজন পাহাড়ি এবং একজন বাঙালি ছাত্রের মধ্যে কথা কাটাকাটির জের ধরে এই সহিংসতার সূত্রপাত হয়েছিল বলে স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তারা বলছেন।পরে পাহাড়ি এবং বাঙালির মধ্যকার এই সহিংসতা পুরো রাঙামাটি শহরে ছড়িয়ে পড়ে।
স্থানীয় প্রশাসনের ভাষ্য অনুযায়ী এই সহিংসতা থামাতে গিয়ে পুলিশসহ অন্তত ত্রিশজন আহত হয়েছে।
রাঙামাটির স্থানীয় সাংবাদিক সুনীল কান্তি দে’র বর্ণনায় সহিংসতার কারণে পুরো শহরজুড়ে ব্যাপক আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
“রাঙামাটি শহর জুড়ে ইতোপূর্বে এ মাত্রায় সহিংসতা দেখা যায়নি।”
সুনীল কান্তি দে, রাঙামাটি সাংবাদিক
মি: দে বলেন সহিংসতার সময় রাস্তায় বিভ্ন্নি ধরনের ধারালো অস্ত্র নিয়ে অনেককে মহড়া দিতে দেখা গেছে।
“রাঙামাটি শহর জুড়ে ইতোপূর্বে এ মাত্রায় সহিংসতা দেখা যায়নি।”
তিনি বলেন এ সময় অনেকে ঘর থেকে বের হতে সাহস পাননি। নিজেদের নিরাপত্তার জন্য স্কুল-কলেজ এবং দোকানপাটে তালাবন্ধ করে রাখেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
সহিংসতা প্রথমে শুরু হলে পুলিশ সেটি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করলে পরিস্থিতি তাদের জন্য কঠিন হয়ে ওঠে।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশের পাশাপাশি সেনাবাহিনী এবং সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবিও মাঠে নামে। রাঙামাটির পুলিশ সুপার মাসুদ-উল-হাসান বলেন সহিংসতা এরকম ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ার বিষয়টি প্রশাসনের কাছে অপ্রত্যাশিত ছিল।
“সহিংসতার সময় বাঙালিরা বাঙালি এলাকায় এবং পাহাড়িরা পাহাড়ি এলাকায় অবস্থান নেয়। এ ঘটনার জন্য আমরা একেবারেই প্রস্তুত ছিলাম না।”
মাসুদ উল হাসান, রাঙামাটি পুলিশ সুপার
“সহিংসতার সময় বাঙালিরা বাঙালি এলাকায় এবং পাহাড়িরা পাহাড়ি এলাকায় অবস্থান নেয়। এ ঘটনার জন্য আমরা একেবারেই প্রস্তুত ছিলাম না। এটা কোনভাবেই আঁচ করা যায়নি।”
পুলিশ সুপার আরো বলেন পার্বত্য এলাকায় যে কোন ধরনের সহিংসতা হলেই পুলিশ এবং সেনাবাহিনী যৌথভাবে কাজ করে। এ ঘটনার ক্ষেত্রেও সেটি হয়েছে বলে পুলিশ সুপার জানান।
তিনি বলেন পার্বত্য এলাকায় সেনাবাহিনীর ‘অপারেশন উত্তরণের’ আওতায় সেনাবাহিনী সবসময় টহলে থাকে।
পুলিশ সুপার জানান সেনাবাহিনী এবং বিজিবি এখনও টহলে রয়েছে।
এদিকে পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য স্থানীয় প্রশাসন রাঙামাটি শহরে ১৪৪ ধারা জারি করছে। পুলিশ সুপার জানান ১৪৪ ধারা জারির পর শহরের পরিস্থিতি এখন শান্ত।
অন্যদিকে আবার নতুন করে যাতে সহিংসতার সৃষ্টি না হয় সেটি নিশ্চিত করার জন্য পাহাড়ি এবং বাঙালিসহ বিভিন্ন পক্ষের সাথে প্রশাসন একটি বৈঠক করেছে।
Leave a Reply