যে কোনো সময় গ্রেপ্তার হতে পারেন সদর-রামু আসনের বিএনপি দলীয় সাংসদ লুৎফুর রহমান কাজল। গত ২৯ সেপ্টেম্বর রাতে রামুর সহিংসতার পরের দিন ৩০ সেপ্টেম্বর সরাষ্ট্রমন্ত্রীর রামু পরিদর্শন করে যাওয়ার পথে ঢাকার বিমানবন্দরে উপস্থিত সাংবাদিকদের কাছে এ সহিংসতার জন্য স্থানীয় সাংসদ কাজলকে দায়ী করেন। আর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সেই বক্তব্যের পর থেকে সাংসদ কাজল আটক হতে পারে বলে ধারণা প্রবল হতে থাকে। এমনকি খোদ সাংসদ কাজল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর এই বক্তব্যের পর সংবাদ সম্মেলন করেন। এতে তিনি নিজেই যেকোন মুহুর্তে গ্রেপ্তার হতে পারেন বলে ঐ সময় উপস্থিত সাংবাদিকদের কাছে সংশয় প্রকাশ করেন। আর সাংসদ কাজল নিজ মুখে গ্রেপ্তার হওয়ার এই আশংকা প্রকাশ করার পরপরই জেলা জুড়েই সাংসদ কাজলের গ্রেপ্তার আলোচনা চলছে। সর্বশেষ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আসার আগের দিন থেকে আইন শৃখংলা বাহিনীর তৎপরতা আর জল্পনা-কল্পনা বাড়তে থাকে। সচেতন মহল ধারণা করছিলেন, প্রধানমন্ত্রী রামু আসবেন। তিনি তার বক্তব্যে ঘটনার জন্য এমপি কাজলকে দায়ী করবেন। এবং তারপর গ্রেপ্তার করা হবে এমপি কাজলকে। এই কারণে গতকাল সোমবা সন্ধ্যার পর থেকে এমপি কাজল গ্রেপ্তার হচ্ছেন বলে গুজব ছড়িয়ে পড়ে শহরজুড়ে। এক পর্যায়ে গুজব ওঠে, সার্কিট হাউস রোডের নিরিবিলি হোটেল কম্পাউন্ডে অভিযান চালিয়েছে র্যাব,কিন্তু এমপি কাজলকে ধরতে পারে নি। তবে তাৎক্ষণিকভাবে র্যাব ও পুলিশের দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের সাথে কথা বলে এই অভিযানের সত্যতা পাওয়া যায় নি।
গতকাল রামুর জনসভায় প্রধানমন্ত্রী সাংসদ কাজলকে সহিংসতার জন্য অভিযুক্ত করায় জেলাব্যাপী সাংসদ কাজল আটকের আলোচনা চলছে। চায়ের দোকান ,ফুটপাত, রেষ্টুরেন্ট সব জায়গায় সাংসদ কাজল আটক হচ্ছেন বলে জল্পনা চলছে। এদিকে গতকাল প্রধানমন্ত্রী রামুর ধ্বংসস্তুপ পরিদর্শন শেষে রামু খিজারী হাইস্কুল মাঠে জেলা আওয়ামীলীগ আয়োজিত এক সমাবেশে ২৯ সেপ্টেম্বরের সহিংসতার উস্কানিদাতা হিসাবে স্থানীয় সাংসদ কাজলকে চিহ্নিত করে বলেন,“ ঘটনার দিন রাতে স্থানীয় প্রশাসন ও উপজেলা চেয়ারম্যান উত্তেজিত জনতাকে শান্ত করেন। কিন্তু স্থানীয় সাংসদ বিক্ষোভস্থলে এসে উস্কানীমূলক কথা বলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনের বাইরে নিয়ে যান। স্থানীয় সাংসদ এখানে আধ ঘণ্টা ছিলেন। রাত ১২টায় চলে যান। আর ওই সাংসদ ঘটনাস্থল ত্যাগ করার পরই মন্দির ও বসতঘরে হামলা শুরু হয়। তিনি সাংসদ কাজলের প্রতি হুশিয়ারি উচ্চারন করে বলেন, এ ঘটনায় জড়িত থাকার কারণ তাকেই জবাবদিহি করতে হবে।” এই বক্তব্যকে এমপি কাজলকে গ্রেপ্তার করার পরোক্ষ নির্দেশ বলেই মনে করছে কক্সবাজারবাসী ধারনা। এদিকে প্রধানমন্ত্রী কক্সবাজার ত্যাগ করার পরপরই সাংসদ কাজলের গ্রেপ্তারের গুঞ্জন ভারি হতে শুরু করে। সাংসদ কাজল গ্রেপ্তার হয়েছেন কীনা এই খবর নিচ্ছিল সবাই। রাত বাড়ার সাথে সাথে এই গুঞ্জনের ডালপালা গজাতে থাকে।
এদিকে গতকাল সন্ধ্যার পর থেকেই হোটেল-মোটেল জোনের নিরিবিলি অর্কিডে অবস্থান করছিলেন এমপি কাজল। রাতে তিনি টিভি চ্যানেলসহ জাতীয় ও স্থানীয় সাংবাদিকদের নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন। তিনি রাতেই গ্রেপ্তার হতে পারেন, এই আশংকায় সেখানে সাংবাদিক পরিবেষ্টিত হয়ে অবস্থান করছিলেন বলে জানা গেছে।
সর্বশেষ (এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত) সোমবার দিবাগত রাত দেড়টায় এমপি লুৎফর রহমান কাজল অবস্থান করছিলেন নিরিবিলি অর্কিডে।
Leave a Reply