১৭ বিজিবির হাতে মহিষের গাড়িসহ ইয়াবা জব্দ করাকে কেন্দ্র করে তুলকালাম হয়েছে কক্সবাজার কাস্টমসে। গভীর রাতে জব্দ করা মহিষ ছাড়িয়ে নিতে গিয়ে ভেস্তে গেলো দফারফা। সূত্রে ওই ১২টি মহিষের দাম কোটি টাকা!
টেকনাফ সড়কের মরিচ্যা চেকপোস্টে গতকাল বুধবার বিকাল সাড়ে ৩ টায় মহিষ বহনকারী একটি গাড়ীতে তল্লাশি চালিয়ে বিজিবি সদস্যরা ইয়াবা উদ্ধার করে এবং মহিষসহ ট্রাকটি জব্দ করে। বিজিবি সূত্রে জানা যায়, টেকনাফের শাহপরীরদ্বীপ করিডোর থেকে আসা গাড়ীতে করে ইয়াবার একটি চালান চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে যাত্রা করে। মহিষ বহনকারী ট্রাকটি মরিচ্যা চেকপোস্টে পৌঁছালে কর্তব্যরত বিজিবি সদস্যরা গাড়ীতে তল্লাশি করে। তল্লাশীর সময় গাড়ীর হেলপার, চালক ও পাচারকারী চক্র সটকে পড়ে। পরে বিজিবি ট্রাকটির চালকের সিটের নিচে লুকিয়ে রাখা ৪ হাজার ২০ পিস ইয়াবা উদ্ধার করে ও ১২টি মহিষসহ ট্রাকটি জব্দ করে। আর ট্রাকটি জব্দের পরেই একটি সিন্ডিকেট মহিষগুলো ছাড়িয়ে নিতে উঠে পড়ে লাগে। ওই সিন্ডিকেট বিজিবির সাথে বিষয়টি দফারফা করার চেষ্টা করে। কিন্তু বিজিবি তাদের অনৈতিক দাবী মেনে নেয়নি। পরে বিজিবি ১২ টি মহিষসহ জব্দকৃত ট্রাকটি কক্সবাজার কাস্টমসের কাছে হস্তান্তর করে। এরপর থেকেই শুরু হয় জব্দ করা মহিষ ছাড়িয়ে নেওয়ার জন্য জোরালো তদবীর। ১০/১৫ টি মোটর সাইকেল নিয়ে মহিষ ছাড়িয়ে নিতে আসে সরকার দলীয় অঙ্গ সংগঠনের পরিচয় দেয়া কতিপয় যুবক। নানা তদবীর ও ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে ১ লাখ ২০ হাজার টাকার ছাড়িয়ে নেয়ার জন্য দফারফাও হয়। আর এ বিষয়ে কক্সবাজার কাস্টমসের পক্ষে দর কষাকষি করে ওই অফিসের উচ্চমান সহকারী সাইফুদ্দিন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে সংবাদকর্মীরা পৌছালে ভেস্তে যায় ওই ভেস্তে যায় সব কিছু। জব্দ করা মহিষ আর ছাড়িয়ে নিতে পারেনি ঐ গ্রুপ। এ সময় সংবাদকর্মীরা দফারফার বিষয়টি সাইফুদ্দিনের কাছে জানতে চাইলে তিনি নীরব থাকেন এবং ঘটনাস্থল থেকে সটকে যায়। পরবর্তীতে রাতের আধারেই নিলামের চেষ্টা চালায় কাস্টমস। কিন্তু তাতে বাঁধ বাধে বিজিবি। বিজিবির দাবী তাদের উপস্থিতিতে যথাযথ নিয়ম অনুযায়ী আজ(বৃহস্পতিবার) নিলাম হতে হবে। নিলামে কোন কারচুপি কিংবা সমঝোতা হলে বিজিবি আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে।
কক্সবাজার ১৭ বিজিবির অধিনায়ক লে: কর্ণেল খালেকুজ্জামান পিএসসি জানান, উদ্ধারকৃত ইয়াবা, মহিষ ও পাচারে ব্যবহৃত ট্রাক সহ প্রায় ৮১ লাখ টাকার মালামাল উদ্ধার করা হয়েছে। তিনি আর ও জানান, জব্দকৃত মহিষের নিলাম যথাযথ নিয়মেই হবে। এত কোন ধরনের কারচুপি হলে বিজিবি যথাযথ ব্যবস্থা নিবে বলে ও জানান।
এদিকে একটি সূত্র জানায়, বিজিবির জব্দকৃত মহিষের পেটে ইয়াবার বিশাল চালান রয়েছে। আর ইয়াবার জন্যই এই সিন্ডিকেট মহিষগুলো ছাড়িয়ে নিতে মরিয়া হয়ে আছে। এ সূত্রের দাবী মতে প্রায়ই কোটি টাকার ইয়াবা রয়েছে ১২ টি মহিষের পেটে।