তানভীর আহমেদ….ইউনাইটেড স্টেটের বিজ্ঞানীরা এবার ভাইরাস থেকে বিদ্যুৎ আবিষ্কার করে কাজে লাগালেন। বর্তমান বিশ্বে তো বটেই আসন্ন শতাব্দীতে এনার্জি বা বিদ্যুৎ একটি ভয়াবহ সংকটের নাম হতে যাচ্ছে। এ আসন্ন সংকটের কথা মাথায় রেখেই কাজ করে যাচ্ছিলেন একদল বিজ্ঞানী, অবশেষে সাফল্য পেয়েছেন তারা, ভাইরাস থেকে অল্প পরিমাণে হলেও বিদ্যুৎ পাওয়ার এ খবর বিশ্বব্যাপী আলোড়ন তুলেছে, ন্যাচার ন্যানোটেকনোলজি নামক একটি জনর্পিয় জার্নালে এ খবরটি নিশ্চিত করা হয়েছে। এ বিদ্যুৎ দিয়ে ছোটখাটো এলসিডি ডিসপ্লেতে পর্যাপ্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ করা যাবে। চাপ এবং কম্পন কাজে লাগিয়ে অপেক্ষাকৃত কম ক্ষতিকর ভাইরাস থেকে বিদ্যুৎ আবিষ্কারের খবর সর্ম্পতি স্বীকার করেছেন বিজ্ঞানীদল। এনার্জি সমস্যার বিপরীতে এই আবিষ্কার আধুনিক বিজ্ঞানের একটি মাইলফলক হিসেবে দেখা হচ্ছে। ভাইরাস থেকে যে অল্প পরিমাণ বিদ্যুৎ পাওয়া যাবে সেটিকে বহুমুখী কাজে লাগানোর চিন্তাভাবনা করছেন বিজ্ঞানীরা। এই স্বল্প পরিমাণ বিদ্যুৎ উৎপাদনের কৌশল ভিন্নভাবেও প্রয়োগ করার সুযোগ রয়েছে, জুতার সোলের নিচে বিশেষভাবে স্থাপন করেও বিদ্যুৎ জেনারেট করার মাইক্রোইলেকট্রোনিক্স ম্যাকানিজম ব্যবহার করে বিদ্যুৎ জেনারেট করা সম্ভব বলে বিষেজ্ঞরা মত দিয়েছেন, এখান থেকে যে পরিমাণ বিদ্যুৎ পাওয়া যাবে আশা করা হচ্ছে সেটুকু দিয়ে চলার পথেই আপনি নিজের মোবাইল ফোনের ব্যাটারিটি চার্জ করে নিতে পারবেন। এখানেও বিদ্যুৎ উৎপাদনের কৌশলটি কিন্তু একই, চলতে গিয়ে আপনার পায়ের চাপের ব্যবহার এবং জুতার ভেতরে পায়ের তলায় যে পরিমাণ তাপ সঞ্চিত করা সম্ভব হবে সেটি কাজে লাগিয়েই বিদ্যুৎ উৎপাদনের কথা বলেছেন গবেষক দল। ইতিমধ্যে এম ১৩ নামের একটি ভাইরাসকে শনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে। এ ভাইরাসটিকে বারবার ফার্মেশন করে ও বিভিন্নভাবে চার্জিত করে বিদ্যুৎ পাওয়া যাচ্ছে।
প্রাথমিকভাবে যে ফলাফল পাওয়া গেছে সেখানে এম ১৩ ভাইরাসটিকে অ্যামিনো এসিডের দ্রবণে প্রক্রিয়া করে স্বল্প পরিমাণে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা সম্ভব হয়েছে। বিজ্ঞানী সিয়াং ওয়াক লি বলেন, এখনও এটি প্রাথমিক গবেষণার পর্যায়ে রয়েছে। তবে ভাইরাস থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের কৌশলগত সাফল্য পাওয়া গেছে। অদূর ভবিষ্যতে এ কৌশলকে আরো প্রযুক্তি ও গবেষণালব্ধ উপাত্ত দিয়ে সমৃদ্ধ করা হলে নিঃসন্দেহে বিদ্যুৎ উৎপাদনের মূল সফলতা পাওয়া যাবে। ভাইরাসের ডিএনএ-এর রিকম্বিনেশন কাজে লাগিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদনের এ কৌশল অতি শিগগিরই আরও উন্নয়ন করা হবে বলে তিনি মত দিয়েছেন। ভাইরাসটি যখন ইলেকট্রোড দিয়ে আবৃত থাকে তখন এটি খুবই স্বল্প পরিমাণ বিদ্যুৎ নিঃসরণ করে। বিজ্ঞানী লি আরও জানান, আমরা এটির কর্মকৌশল নিয়েই মূলত কাজ করছি, এখন এই বিদ্যুৎ উৎপাদনের মাত্রা কিভাবে বাড়ানো যায় সেটির ওপর গবেষণা করা হবে। বর্তমান বায়োটেকনোলজি যেভাবে উন্নত হচ্ছে সেখানে বৃহৎ পরিসরে ভাইরাস থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন অসম্ভব নয়। তবে আমাদের সাফল্য ভাইরাস থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন এবং মাইক্রোইলেকট্রনিক্স ম্যাকানিজম ব্যবহারে যে নতুন ও মৌলিক পথ দেখিয়েছে সেটি এই দিগন্তে পৌঁছার জন্য একটি অনবদ্য কৌশল।
ভাইরাস থেকে বিদ্যুৎ
Leave a Reply