আনোয়ারা হোছাইন, ঈদগাঁও ……….কক্সবাজার সদর উপজেলার ঈদগাঁওয়ে টানা বর্ষন ও পাহাড়ী ঢলের বন্যায় বৃহত্তর ঈদগাঁওর ৬ ইউনিয়ন বন্যায় কবলিত হয়েছে। ১৯৯১ ঘুর্ণিঝড় পরবর্তী এবারই ভয়াবহ বন্যায় ৫ সহস্রাধিক পরিবার এখনো পানি বন্ধি রয়েছে। ২৬ জুন রাতে বন্যার পানির তোড়ে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের ঈদগাঁওয়ের নাছির খালের উপর নির্মিত ব্রীজ ধ্বসে পড়ায় ঐদিন রাত থেকে কক্সবাজার-শহরের সাথে ঢাকা-চট্টগ্রামের সকল প্রকার সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছিল। এদিকে ১৭ ইসিবির অক্রান্ত পরিশ্রমে ও স্থানীয় চেয়ারম্যান সোহেল জাহান চৌধুরীর সহায়তায় অবশেষে দীর্ঘ ৪৮ ঘন্টা পর সড়কে গাড়ী চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে। ফলে জনদূর্ভোগ বলতে গেলে নেমে গেছে। সরেজমিনে দেখা যায় বৃহত্তর ঈদগাঁওর ৬ ইউনিয়নের প্রতিটি গ্রামে গঞ্জে বন্যার প্লাবিত হয়েছে। এদিকে অতীতের আলোচিত পাল পাড়া ভাঙ্গন ও ভোমরিয়াঘোনা ৯নং ওয়ার্ডস্থ একাধিক ভাঙ্গনে ঈদগাঁও-ঈদগড় বাইশারী সড়ক বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। তাছাড়া ইসলামাবাদের খোদাইবাড়ী ওয়াহেদর পাড়া ইউছুপেরখীল, বোয়ালখালী, চর পাড়া, গজালিয়া, ঈদগাঁওর সদর ইউনিয়নের ভোমরিয়াঘোনা, শিয়াপাড়া, কানিয়াছড়া, চৌধুরী পাড়া, কুলাল পাড়া, জাগির পাড়া, কালির ছড়া ও সাত ঘরিয়া পাড়া, ইসলামপুরের ৯নং ওয়ার্ডস্থ খাঁন ঘোনা এলাকার জনগণ এখনো পানি বন্ধি অবস্থায় রয়েছে। পোকখালীর পশ্চিম গোমাতলী, পূর্ব পোকখালী, সিদকার পাড়া, মুসলিম বাজার, জালালাবাদের লরাবাগ, ফরাজি পাড়া, মোহনভিলা, চৌফলদন্ডী ইউনিয়নের মাইজ পাড়া, ঘোনা পাড়া, নতুন মহাল, ভারুয়াখালীর ঘোনা পাড়া, বাজার এলাকা সহ বিভিন্ন গ্রামে গঞ্জের ৫ সহস্রাধিক পরিবার এখনো পানি বন্ধি অবস্থায় রয়েছে। গোটা এলাকায় সরে জমিনে দেখা যায়, বৃহত্তর ঈদগাঁও প্রায় ৫ শতাধিক বাড়ী পাহাড়ী ঢলের বন্যায় ভেসে গেছে। বিশেষ করে ইসলামপুরের খাঁনঘোনা এলাকাও চৌফলদন্ডী একাংশের খোলা আকাশের নিচে বসবাস করতেও দেখা গেছে। আবার বন্যার পানি বিভিন্ন এলাকা থেকে নেমে না যাওয়ায় ডায়েরিয়া সহ পানি প্রবাহিত রোগ ছড়িয়ে পড়ছে বলেও এলাবাসীর দাবী। সর্বশেষ বন্যা কবলিত এলাকায় ইসলামুপরের চেয়ারম্যান মাস্টার আব্দুল কাদের নৌকার মাধ্যমে পানিবন্দি এলাকায় ২৭ জুন সারাদিন ত্রান সামগ্রী বিতরণ করেন। অপরদিকে চৌফলদন্ডীর চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলম, ঈদগাঁও ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের মেম্বার আব্দুল হাকিম, ইসলামাবাদ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নুরুল হক, প্যানেল চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হক ও ঈদগাঁও সাংগঠনিক উপজেলা যুবদলের নব নির্বাচিত সাংগঠনিক সম্পাকদ মুফিজ উদ্দিন আহমেদ স্ব-স্ব ইউনিয়ন ও এলাকায় ত্রান সামগ্রী বিতরণ করেছেন। সর্বশেষ রিপোর্টে জানা যায়, বৃহত্তর ঈদগাঁওর পানিবন্দি এলাকায় জরুরী ভিত্তিতে ত্রান সামগ্রী না পাঠালে হয়তো অনাহারে লোকজন মারা যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। অপর দিকে শিল্প নগরী ইসলামপুর ইউনিয়নের ইউনিলিভার বাংলাদেশ লিঃ এর ভাড়কৃত লবণের গোদাম(ভাই ভাই এর মালিকানাধীন) টি বন্যার পানিতে ভেসে গিয়ে ৩০ হাজার মন লবণ পানির সাথে ভেসে গিয়ে মিশে যাওয়ায় প্রায় কোটি টাকা ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে কোম্পনীর কো- অর্ডিনেটর কাজী আবুল মাসুদ জানান । সব মিলিয়ে বৃহত্তর ঈদগাঁওতে ১০ কোটির ও অধিক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। সচেতন লোকজন ক্ষতিগ্রস্থ এলাকাকে অবিলম্বে দুর্গত এলাকা ঘোষনার দাবী জানিয়েছে।
Leave a Reply