টেকনাফ/উপকূলীয় (বঙ্গোপসাগর ও দুই দেশের জলপথ ব্যবহার) যোগাযোগব্যবস্থা গড়ে তুলবে বাংলাদেশ-মিয়ানমার। রাজধানীর একটি হোটেলে গতকাল সোমবার শেষ হওয়া দুই দিনব্যাপী ‘বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের যৌথ বাণিজ্য কমিশনের (জেটিসি)’ বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়েছে।
বৈঠক শেষে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে বাণিজ্যসচিব মাহবুব আহমেদ এ কথা জানান। শিগগির উভয় দেশের মধ্যে এ ব্যাপারে একটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষর করা হবে বলেও জানান বাণিজ্যসচিব। বাংলাদেশের পক্ষে তিনিই ২৬ সদস্যের দলের নেতৃত্ব দেন। আর মিয়ানমারের পক্ষে সরকারি ও বেসরকারি খাতের ১৬ সদস্যের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন দেশটির বাণিজ্য উপমন্ত্রী পুইন্ট সান।
সচিব জানান, ‘স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর (এসওপি) অন কোস্টাল অ্যান্ড মেরিটাইম শিপিং’ এবং ‘অ্যাগ্রিমেন্ট অন কোস্টাল অ্যান্ড মেরিটাইম শিপিং’ বিষয়ে এমওইউর খসড়া তৈরি করে মিয়ানমারকে দেওয়া হয়েছে। তাদের সঙ্গে চুক্তিটি স্বাক্ষর করবে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়। জানা গেছে, বর্তমানেও সামুদ্রিক ও নৌ যোগাযোগব্যবস্থা একরকমভাবে চালু রয়েছে মিয়ানমারের সঙ্গে। কিন্তু এর আইনিকাঠামো অতটা সুসংহত নয়।
বৈঠকে ছয়টি বিষয়ে আলোচনা হয়েছে বলে জানান বাণিজ্যসচিব। এগুলো হচ্ছে: উভয় দেশের মধ্যে সরাসরি বিমান যোগাযোগ চালু, সীমান্ত বাণিজ্য সম্প্রসারণ, সীমান্তে দুটি পাইকারি বাজার স্থাপন, বিদ্যুৎ ও চাল আমদানি, কৃষিজমি ইজারা নিয়ে চাষাবাদ এবং ব্যাংক লেনদেন পদ্ধতি সংস্কার।
সূত্র জানায়, বৈঠকে পারস্পরিক সীমান্ত বাণিজ্যে পণ্যের সংখ্যা বাড়ানোর বিষয়ে আলোচনা হয়। এ ছাড়া মিয়ানমারের আরাকান রাজ্যে অনাবাদি জমিতে চুক্তির ভিত্তিতে চাষাবাদ, মিয়ানমারে সোনালী ব্যাংক, এবি ব্যাংক ও ন্যাশনাল ব্যাংকের নির্দিষ্ট শাখার বাইরে আরও শাখায় লেনদেন চালু এবং একক ব্যাংক ড্রাফটের পরিবর্তে ঋণপত্রের (এলসি) মাধ্যমে লেনদেনের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।
২০১০ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর মিয়ানমারে অনুষ্ঠিত জেটিসির বৈঠকে মিয়ানমার বাংলাদেশে ৪০০ থেকে ৫০০ মেগাওয়াট জলবিদ্যুৎ রপ্তানি করবে বলেছিল। গত দুই দিনের বৈঠকে তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্যসচিব বলেন, আলোচনা হয়েছে। তবে যথেষ্ট বিদ্যুৎ নেই বলে এ সময়ে তারা রপ্তানি করতে পারছে না।
Leave a Reply