হাফেজ মুহাম্মদ কাশেম, টেকনাফ :::::সেন্টমার্টিনের পশ্চিমে বঙ্গোপসাগর থেকে আটক ২২০ মালয়েশিয়াগামী যাত্রীকে থানা পুলিশে সোপর্দ করেছে কোস্টগার্ড। আটককৃতদের মধ্যে ট্রলারের মাঝিমাল্লা ৬ রাখাইনসহ ১১ জন মিয়ানমারের নাগরিক। জানা যায়, গত সোমবার বিকেলে সেন্টমার্টিনস্থ কোষ্টগার্ড সদস্যরা সেন্টমার্টিনের অদূরে পশ্চিম গভীর বঙ্গোসাগর থেকে একটি ট্রলার বোঝাই ২২০ মালয়েশিয়াগামী যাত্রীকে আটক করে সেন্টমার্টিনদ্বীপে নিয়ে আসে। গতকাল ৯ জুলাই বিকেল ৩ ঘটিকার সময় আটককৃতদের ৩টি ট্রলার যোগে টেকনাফ স্থল বন্দরের বহিঃগমন ঘাট দিয়ে এনে টেকনাফ থানা পুলিশের হাতে সোপর্দ করে। এসময় উপজেলার বিভিন্ন আইন প্রয়োগ সংস্থার লোকজন উপস্থিত ছিলেন। আটককৃতদের মধ্যে, ৬ মাঝিমাল্লাসহ ১১ জন মিয়ানমারের নাগরিক, অন্যান্যরা নরসিংদীর জেলার ৬৫ জন, যশোর জেলার ৫২ জন, কুমিল্লার ১৮ জন, সাতক্ষীরার ১০ জন, নারায়নগঞ্জের ৮ জন, বগুড়ার ৭ জন, মেহেরপুরের ৬ জন, চুয়াডাঙ্গার ৬ জন, কক্সবাজার জেলার ৯ জন, রাজশাহীর ১ জন, সিরাজগঞ্জের ২ জন, ময়মনসিংহের ১ জন, জামালপুরের ১ জন, গাইবান্ধার ১ জন, ব্রাহ্মনবাড়িয়ার ৩ জন, টাঙ্গাইলের ১ জন, কুড়িগ্রামের ১ জন, বান্দরবানের ১ জন, কক্সবাজার জেলার ১৬ জন সহ মোট ২০৯ জন বাংলাদেশের নাগরিক। পুলিশ হেফাজতে থাকা আটক ব্যক্তিরা জানান, শুক্রবার রাতে কক্সবাজারের চকরিয়া. লোহাগাড়া পদুয়া ঘাট থেকে শতাধিক যাত্রী নিয়ে মালয়েশিয়ার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হলেও পথিমধ্যে উখিয়া, বাহারছড়া, টেকনাফ, সাবরাং ও শাহপরীর দ্বীপ থেকে আরও দেড় শতাধিক লোক বোটে তোলা হয়। সোমবার ভোররাতে কার্গোবোটের চালক (মাঝি) ও দালালরা মিলে সাগর উত্তাল থাকায় মিয়ানমারে তুলে দেওয়ার চেষ্টা করলে আমরা সকলে মিলে মাঝিসহ ছয় দালালকে রশি দিয়ে বেঁধে ফেলি এবং চলন্ত বোট নিয়ে সেন্ট মার্টিনের কাছাকাছি সাগরে দিকবেদিক ঘুরতে থাকি। পরে জ্বালানি তেল শেষ হয়ে যাওয়াই এক পর্যায়ে দুপুরের দিকে কয়েকটি মাছ ধরার নৌকা দেখতে পেয়ে তাদের কাছ থেকে সহযোগিতা চাইলে কেহ এগিয়ে আসেনি। পরে কোস্টগাড সদস্যরা আমাদের উদ্ধার করে সেন্টমার্টিনের কূলে নিয়ে আসে। এদিকে মালয়েশিয়া মানব পাচারকাজে ব্যবহৃত কার্গো বোটটি গত ২৩ জুন মিয়ানমার থেকে কাঠ বোঝাই করে টেকনাফ স্থল বন্দরে স্থানীয় ব্যবসায়ী মৌলভি বোরহানে কাছে নিয়ে আসে এবং গত ৫ জুলাই শুক্রবার সকালে মাল খালাশ করে মিয়ানমারের উদ্দেশ্যে বের হয়ে যায়। কিন্তু এ কার্গো ট্রলারটি মিয়ানমারে না গিয়ে পূর্বে পরিকল্পিতভাবে কক্সবাজার জেলার বিভিন্ন ঘাট থেকে মালয়েশিয়া গামী যাত্রী বোঝাই করে নিয়ে যাচ্ছিল। অবশেষে কোস্টগার্ডের হাতে আটক হয়। উল্লেখ্য যে, মৌলভি বোরহানের নেতৃত্বে একটি সিন্ডিকেট দীর্ঘদিন ধরে ইয়াবা, মানবপাচারসহ নানান অপরাধ মূলক কর্মকান্ড সংঘঠিত করে যাচ্ছে। এব্যাপারে টেকনাফ মডেল থানার ওসি (তদন্ত) দিদারুল ফেরদৌস বলেন, আটক মিয়ানমারের নাগরিক, দালালদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট ধারায় মামলা এবং বাংলাদেশীদের যাচাই-বাচাই শেষে নিকটতœীয়ের কাছে হস্তান্তর করা হবে।