নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার পুনর্বহালের দাবিতে ১৮ দলীয় জোটের ঈদ পরবর্তী আন্দোলন নিয়ন্ত্রণে রাখতে আইনশৃংখলা বাহিনীকে সতর্কাবস্থায় রেখেছে সরকার। এ মুহূর্তে বিরোধী দলীয় জোটের দু’শতাধিক নেতার বাসা-বাড়ি, অফিস ও গতিবিধির ওপর কড়া নজর রাখা হচ্ছে বলে জানিয়েছে গোয়েন্দা সূত্র।
পুলিশের এক সুত্র জানায়, নিরাপত্তাজনিত কারণে আইনশৃংখলা বাহিনী বিশেষ কিছু দায়িত্ব পালন করে থাকে। নজরদারি এরই একটি অংশ। তবে পুলিশ কারও বাড়িতে গিয়ে কাউকে অহেতুক হয়রানি করছে না।
সুত্র জানায়, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ড. আবদুল মঈন খান, মির্জা আব্বাস, নজরুল ইসলাম খান, ড. এম ওসমান ফারুক, গযেশ্বর চন্দ্র রায়, ভাইস-চেয়ারম্যন আলতাফ হোসেন চৌধুরী, সাবিহ উদ্দিন আহমেদ, সাংবাদিক শফিক রেহমান, যুবদল সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, সাধারণ সম্পাদক সাইফুল আলম নিরব, স্বেচ্ছাসেবক দল সভাপতি হাবিব উন নবী খান সোহেল, যুবদল নেতা এসএম জাহাঙ্গির, মামুন হাসান, হামিদুর রহমান হামিদ, রফিকুল আলম মজনু, ছাত্রদল নেতা ইসহাক সরকারসহ দু’শতাধিক নেতার বাসা বাড়ি ও গতিবিধির ওপর সার্বক্ষণিক লক্ষ্য রাখছে সরকারি সংস্থার লোকেরা।
সুত্রমতে, একইভাবে ১৮ দলীয় জোটের জামায়াতসহ অন্যান্য দলের ২২ নেতার ওপরও নজর রাখছে সরকারি সংস্থাগুলো।
বিরোধী দলীয় জোটের বেশ ক’জন নেতা বাংলানিউজের এরইমধ্যে এমন নজরদারির অভিযোগ করেছেন। এমনকি সরকার বিরোধী দলের আন্দোলন বাধাগ্রস্ত করতে ঈদের দিনও দেশের বিভিন্ন স্থানে নেতা-কর্মীদের উপর হামলা চালিয়েছে বলেও দাবি করছেন তারা।
এমন নজরদারি সম্পর্কে জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা) সভাপতি সভাপতি শফিউল আলম প্রধান বাংলানিউজকে বলেন, “আগের চেয়ে চা বেশি খরচ হচ্ছে এজেন্সির লোকদের পেছনে। কারণ ইদানিং বেশি নজরদারি চালাচ্ছে তারা।”
তিনি অভিযোগ করেন, “সরকারের যখন আমাদের এতোই ভয়, তাহলে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের ঘোষণা দিলেই তো হয়ে যায়। কেন এটা ঝুলিয়ে রেখেছে।”
এ প্রসঙ্গে ঢাকা মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব আব্দুস সালাম বাংলানিউজকে বলেন, “এ আর নতুন কি? সবসময়ই পুলিশের লোকেরা বিএনপি নেতাদের খোঁজ খবর রাখছে। এমন কি কারও কারও বাড়িতে হামলাও চালানো হচ্ছে। আটক করা হচ্ছে নিরাপরাধ নেতা-কর্মীদের।”
তিনি বলেন, “শুধু বিএনপি নয়, ১৮ দলের নেতাদের বাড়ি ,অফিস ও আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতেও সংস্থার লোকেরা তল্লাশী চালাচ্ছে।”
পুলিশের কড়া নজরদারির অভিযোগ করেছেন মহানগর জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারী ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদও।
বাংলানিউজকে তিনি বলেন, “১৮ দলীয় জোটের নেতাদের অনেকেই এখনও শান্তিতে নিজের বাড়িতে ঘুমাতে পারেন না। পুলিশ নেতাদের বাড়ির সামনে সবসময়ই ঘুর ঘুর করছে।”
সামনে সরকার বিরোধী আন্দোলন ঠেকাতেই এমন কড়া নজরদারির ব্যবস্থা বলে মনে করছেন এ জামায়াত নেতা।
লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডা: মোস্তাফিজুর রহমান ইরান পুলিশি নজরদারির অভিযোগ তুলে বাংলানিউজকে বলেন, “পুলিশ আগের চেয়ে এখন অনেক তৎপর। বাসাবাড়ির সামনে সব সময়ই সাদা পোষাকের পুলিশের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়।”
বিরোধী দলের নেতাদের বাড়ির সামনে পুলিশি তৎপরতা বৃদ্ধির কথা বলেছেন বাংলাদেশ ন্যাপের মহাসচিব গোলাম মোস্তফা ভুইয়াও।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পুলিশের এক কর্মকর্তা বাংলানিজকে বলেন, “সরকারের অনেক দায়িত্ব পালন করতে হয়। এটা রুটিন ওর্য়াক।”
তিনি জানান, শুধু আওয়ামী লীগ সরকারের সময় নয়, সব সরকারের সময়ই তাদের এ ধরনের ডিউটি থাকে। এটা এখন নিয়মিত রুটিন ওয়ার্কে পরিণত হয়েছে।
Leave a Reply