শত্রুবিমান ও জাহাজবিধ্বংসী কামানসংবলিত যুদ্ধজাহাজ তৈরি হয়েছে খুলনার শিপইয়ার্ডে। খুলনা শিপইয়ার্ড লিমিটেডের সঙ্গে পাঁচটি যুদ্ধজাহাজ (কোস্টাল টহল জাহাজ) নির্মাণের চুক্তি করে বাংলাদেশ নৌবাহিনী। এরই অংশ হিসেবে একটি জাহাজের নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে। অন্যগুলোর নির্মাণকাজ চলছে। এটি আনুষ্ঠানিকভাবে ৮ অক্টোবর নৌবাহিনীর কাছে হস্তান্তর করা হবে। হস্তান্তর অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী দীপু মনি।
শিপইয়ার্ড লিমিটেডের উপমহাব্যবস্থাপক (অর্থ) ক্যাপ্টেন মতিউর রহমান প্রথম আলো ডটকমকে বলেন, ২৮৮ কোটি টাকায় পাঁচটি কোস্টাল টহল জাহাজ নির্মাণ করছে খুলনা শিপইয়ার্ড। দেশের ইতিহাসে এটি প্রথম। প্রতিটি জাহাজ নির্মাণে ব্যয় হবে প্রায় ৫৮ কোটি টাকা। চীন ও বাংলাদেশ নৌবাহিনীর বিশেষজ্ঞদের সহযোগিতায় দেশে এই প্রথম নির্মিত হচ্ছে যুদ্ধজাহাজ। এই মানের একটি জাহাজ বিদেশ থেকে আমদানি করতে ১০০ কোটি টাকার মতো ব্যয় হতো। নির্মিত জাহাজটি ৫০ দশমিক ৪ মিটার দীর্ঘ, ৭ দশমিক ৫ মিটার চওড়া এবং ৪ দশমিক ১ মিটার গভীরতাবিশিষ্ট। ওজন ২৫৫ টন। ঘণ্টায় এর গতিবেগ ২৩ নটিকেল মাইল।
ক্যাপ্টেন মতিউর রহমান আরও জানান, এই জাহাজে ৩৭ মিলিমিটারের দুটি কামান ও ২৫ মিলিমিটারের দুটি বিমানবিধ্বংসী কামান (অ্যান্টি-এয়ারক্রাফট গান) রয়েছে। ৮ অক্টোবর আনুষ্ঠানিকভাবে জাহাজটি হস্তান্তর করা হবে নৌবাহিনীর কাছে। এ অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী দীপু মনি।
খুলনা শিপইয়ার্ড লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কমোডর আর ইউ আহম্মেদ প্রথম আলো ডটকমকে জানান, খুলনা শিপইয়ার্ড দেশে প্রথম যুদ্ধজাহাজ নির্মাণ করে গৌরব অর্জন করতে পেরেছে। এ কাজে সহযোগিতা করেছে চায়না শিপ বিল্ডিং অ্যান্ড অফসোর কোম্পানি। যুদ্ধজাহাজ নির্মাণের মধ্য দিয়ে বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় হয়েছে বলে তিনি জানান। গত ৫৫ বছরে বিভিন্ন শ্রেণীর জাহাজ নির্মাণের মধ্য দিয়ে খুলনা শিপইয়ার্ডে দক্ষ জনবল গড়ে উঠেছে। গত ১৩ বছরে নৌবাহিনীর তত্ত্বাবধানে খুলনা শিপইয়ার্ড লিমিটেড একটি লাভজন প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে।
আর ইউ আহম্মেদ জানান, বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করে খুলনা শিপইয়ার্ড এগিয়ে চলেছে। খুলনা শিপইয়ার্ড প্রতিষ্ঠান হিসেবে এ বছর খুলনায় সর্বোচ্চ করদাতা হওয়ার গৌরব অর্জন করেছে। ভবিষ্যতে যুদ্ধজাহাজসহ আরও বড় বড় জাহাজ নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে এই শিপইয়ার্ডের। এ জন্য যে দক্ষ জনবল দরকার, তা শিপইয়ার্ডের রয়েছে।
খুলনা শিপইয়ার্ড লিমিটেড সূত্র জানায়, ২০১১ সালে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর সঙ্গে পাঁচটি যুদ্ধজাহাজ (পেট্রোল ক্র্যাফট) নির্মাণের চুক্তি হয় খুলনা শিপইয়ার্ড লিমিটেডের। চুক্তির পর ২০১১ সালের ৫ মার্চ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা খুলনা শিপইয়ার্ডে যুদ্ধজাহাজ নির্মাণকাজের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। চুক্তি অনুযায়ী, আড়াই বছরের মধ্যে পাঁচটি যুদ্ধজাহাজ নির্মাণ করে নৌবাহিনীর কাছে হস্তান্তরের কথা রয়েছে। শিপইয়ার্ড কর্তৃপক্ষ চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে একটি, ২০১৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে একটি ও ডিসেম্বরে মধ্যে বাকি দুটি জাহাজ হস্তান্তর করবে। দেশে এ ধরনের যুদ্ধজাহাজ নির্মাণের ফলে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রার সাশ্রয় হবে।
Asole bangalira saile onek kisoi abiskar korte pare…past a onek kisoi korese but sotik babei kaje lagate pare na..