নিজস্ব প্রতিবেদক:::উখিয়া ও টেকনাফ সীমান্ত দিয়ে মিয়ানমারে পাচার হচ্ছে ভোজ্যতেল। আর তেল বিক্রির টাকায় মিয়ানমার থেকে আনা হচ্ছে নিষিদ্ধ ইয়াবা বড়ি।
পুলিশ, বিজিবি ও র্যাবের হাতে প্রায় প্রতিদিন ইয়াবাসহ পাচারকারী ধরা পড়লেও চোরাচালান বন্ধ হচ্ছে না। অনুসন্ধানে জানা গেছে, রমজান মাস সামনে রেখে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের অন্তত ৫০ জন চোরাচালানি উখিয়া উপজেলার বালুখালী, ঘুমধুম, তুমব্রু, রহমতের বিল, আঞ্জুমানপাড়া, আমতলী, ফালংখালী এবং টেকনাফ উপজেলার কাঞ্চরপাড়া, নয়াপাড়া, চৌধুরীপাড়া, উনচিপ্রাং, হোয়াইক্যং, নিলা, জাদীমুরা, দমদমিয়া, কেরনতলী, জালিয়াপাড়া, শাহপরীর দ্বীপ সীমান্ত দিয়ে মিয়ানমারে বিপুল পরিমাণ ভোজ্যতেল পাচার করছে। বাংলাদেশের ৮৫ টাকার প্রতি কেজি পাম তেল মিয়ানমারে বিক্রি হচ্ছে ১৩০ টাকায়।
অন্যদিকে মিয়ানমার থেকে প্রতিটি ইয়াবা বড়ি ৮০-৯০ টাকায় কিনে বাংলাদেশে বিক্রি করছে ৩৮০ থেকে ৫০০ টাকায়।
টেকনাফের বড়বাজারের খুচরা তেল ব্যবসায়ী আবুল হোসেন বলেন, তিনি দৈনিক এক ব্যারেল ভোজ্যতেল খুচরা বিক্রি করেন। এর মধ্যে এক নম্বর সয়াবিন তেল প্রতি কেজি ১৪৫, দুই নম্বর সয়াবিন (সিটি সুপার) ১২০ এবং তিন নম্বর সয়াবিন (পাম তেল) ৮৫ টাকায় বিক্রি করছেন। মিয়ানমারে বেশি পাচার হচ্ছে পাম তেল। ৮৫ টাকার পাম তেল সেখানে বিক্রি হচ্ছে ১৩০ টাকায়।
উখিয়া সদরের ভোজ্যতেল ব্যবসায়ী সিরাজুল ইসলাম সওদাগর বলেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অনুমতিপত্র নিয়ে তিনি প্রতি সপ্তাহে চট্টগ্রাম থেকে ৪০ ড্রাম ভোজ্যতেল উখিয়ায় বাজারজাত করছেন। একইভাবে উপজেলার আরও ১১ ব্যবসায়ী সপ্তাহে আরও ৪৮০ ব্যারেল ভোজ্যতেল উখিয়ায় আনছেন। কিন্তু এই ভোজ্যতেল কারা মিয়ানমারে পাচার করছেন তা তাঁর জানা নেই। কক্সবাজার-টেকনাফ সড়কে মরিচ্যা বিজিবি চেকপোস্টের সুবেদার নুরুল ইসলাম বলেন, কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম থেকে ট্রাকে বোঝাই করে ভোজ্যতেল সড়কপথে উখিয়া ও টেকনাফে নিয়ে যাওয়ার সময় এই চেকপোস্টে জব্দ করা হয়। কিন্তু ইউএনওর অনুমতিপত্র দেখিয়ে ওই তেল নিয়ে যায়। একেকজন ব্যবসায়ী প্রতি মাসে ৮০-৯০ ব্যারেল ভোজ্যতেলসহ হাজার হাজার প্যাকেটজাত ভোজ্যতেল নিয়ে যাচ্ছেন। বালুখালী বিওপির বিজিবির সুবেদার মোজাম্মেল হক বলেন, কড়াকড়ির মধ্যেও কতিপয় চোরাচালানি রাতের বেলায় নাফ নদী অতিক্রম করে মিয়ানমারে ভোজ্যতেল পাচার করছে। বিপরীতে বাংলাদেশে নিয়ে আসছে নিষিদ্ধ ইয়াবা।
উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, ভোজ্যতেল পাচারে কারা জড়িত, তার অনুসন্ধান চলছে।