মিয়ানমারের জাতিগত দাঙ্গা-হাঙ্গামা সম্পর্কে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, ‘আমাদের দেশে রোহিঙ্গাদের নিয়ে যে বিভিন্ন সমস্যায় পড়তে হয়েছে, সে সমস্যা যেন আর না হয় সেদিকে নজর রাখা হবে।’সোমবার সকালে চাঁদপুর সার্কিট হাউসে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।মন্ত্রী বলেন, বর্তমানে সেখানকার পরিস্থিতি শান্ত হয়ে এসেছে। মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ সেখানে শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখার স্বার্থে আমরা আশা করি, নাগরিকদের জানমালের নিরাপত্তার স্বার্থে ব্যবস্থা নেবেন মিয়ানমার সরকার। তাদের যে মূল সমস্যা আছে তা খুঁজে বের করে সমাধান করবেন।
তিনি আরো বলেন, আমাদের প্রত্যাশা মিয়ানমারের কোনো জনগোষ্ঠীর মধ্যেও যাতে সমস্যা না হয়। সবাই যাতে অধিকার ও সম্মান নিয়ে বাঁচতে পারেন।
মিয়ানমারের আরাকান রাজ্যে নতুন করে শুরু হওয়া জাতিগত দাঙ্গার সূত্র ধরে কক্সবাজারের টেকনাফ ও উখিয়ার সীমান্ত এলাকায় বিজিবির টহল জোরদার করা হয়েছে। বিশেষত টেকনাফের নাফ নদী থেকে সেন্টমার্টিন সমুদ্র উপকূল পর্যন্ত বিজিবির পাশাপাশি কোস্টগার্ডের নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।
মিয়ানমারে জাতিগত সহিংসতার কারণে আরাকানের রোহিঙ্গারা যাতে সীমান্ত দিয়ে অনুপ্রবেশ করতে না পারে সেজন্য বিজিবি এবং কোস্টগার্ডকে সতর্ক অবস্থানে রাখা হয়েছে।
গত সপ্তাহের রোববার থেকে আরাকানের চকপো, পাত্তরখিল্যা, ম্রো, মিনবাউসহ কয়েক টাউনশিপে নতুন করে জাতিগত দাঙ্গা শুরু হয়। এ সময় রোহিঙ্গাদের শত শত বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ হামলা ও লুটপাট করা হয়। এসব হামলায় বাস্তুচ্যুত হয়ে শত শত রোহিঙ্গা ছোট বড় ইঞ্জিন নৌকা করে বাংলাদেশের দিকে পালিয়ে আসার চেষ্টা করে।
এসব রোহিঙ্গারা যাতে বাংলাদেশে প্রবেশ করতে না পারে সেজন্য কক্সবাজারের জেলা প্রশাসন, পুলিশ-বিজিবি এবং কোস্টগার্ড সীমান্ত এলাকায় সর্বোচ্চ নজরদারির ব্যবস্থা করেছে।
বিজিবি টেকনাফের ৪২ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল জাহিদ হাসান রোববার সকালে টেকনাফের নাফনদীর শাহপরীর দ্বীপ পয়েন্ট থেকে সেন্টমার্টিন উপকূল পর্যন্ত নিজেই বিজিবির টহল পরিচালনা করেন।
সন্ধ্যায় তিনি জানান, সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত নাফনদীল মোহনা থেকে সেন্টমার্টিন পর্যন্ত রোহিঙ্গাদের নিয়ে কোনো নৌযানকে সাগরে ভাসমান অবস্থায় দেখা যায়নি।
তিনি আরো জানান, সাগরপথে কোনোভাবেই যাতে রোহিঙ্গারা অনুপ্রবেশ করতে না পারে সে ব্যাপারে সর্বোচ্চ সতর্কতায় রয়েছে বিজিবি এবং কোস্টগার্ড। এ ব্যাপারে টেকনাফে বিজিবির জনবলও বাড়ানো হয়েছে।
অপরদিকে উখিয়ার বালুখালী, ঘুমধুম এবং নাইক্ষ্যংছড়ির তমব্রু সীমান্ত দিয়ে গতকাল ১০ জন এবং আজ সন্ধ্যা পর্যন্ত ২০ জন রোহিঙ্গাকে অনুপ্রবেশকালে আটক করে মিয়ানমারে ফেরত পাঠিয়েছে বিজিবি।
কক্সবাজারের বিজিবি ১৭ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল খালেকুজ্জামান জানান, অনুপ্রবেশের এ চেষ্টাটি স্বাভাবিক ঘটনা। আরাকানে নতুন করে সহিংসতার পর উখিয়া এবং নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্ত এলাকা শান্ত থাকলেও বিজিবির টহলদলকে জোরদার রাখা হয়েছে।
Leave a Reply