আমান উল্লাহ আমান, টেকনাফ/
নয়াপাড়া ও মোছনীপাড়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পে রোহিঙ্গা দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা বিভিন্ন এনজিওতে কর্মরত বাজেটের অজুহাত তুলে চাকুরী থেকে বিনা দোষে চাকুরীচ্যুত করার প্রতিবাদে মাছনী ও নয়াপাড়াবাসী তাদের ন্যায্য দাবী আদায়ের লক্ষে আন্দোলন শুরু করেছে। ৭ জানুয়ারী সকাল থেকে তাদের আন্দোলন শুরু হয়। রোহিঙ্গা ক্যাম্পে কর্মরত এনজিও গুলো থেকে স্থানীয় বাসিন্দাদের চাকরীচ্যুত করা এবং তদস্থলে রোহিঙ্গাদেরকে চাকুরীতে নিয়োগের প্রতিবাদে এই আন্দোলনের ঘোষনা দেয়া হয়েছে। গ্রামবাসীর পক্ষে স্থানীয় গ্রাম সর্দার জকির আহমদ আন্দোলনের প্রতিনিধিত্ব করছেন। আন্দোলনের প্রথম দিনে এনজিও সংস্থা এসিএফ কর্মকর্তা কর্মচারীদেরকে রোহিঙ্গা শরনার্থী ক্যাম্পে (কর্মস্থলে) ঢুকতে দেয়া হচ্ছেনা। প্রতিবাদকারীরা ১৯৯২ সনের নয়াপাড়া রোহিঙ্গা ক্যাম্প প্রতিষ্ঠার পর থেকে এ পর্যন্ত রোহিঙ্গাদের দ্বারা পারিবারিক, সামাজিক, রাজনৈতিক, চাকুরী, আইন শৃংখলাসহ সর্ব ক্ষেত্রে বহুমূখী ক্ষতির বিভিন্ন দিক বিস্তারিত ও জোরালো ভাবে তাদের বক্তব্যে তুলে ধরেছেন। এদিকে ক্যাম্প ইনচার্জ ড. কামরুজ্জামান গ্রামবাসীর আন্দোলন বন্ধে বৈঠকের আহবান জানিয়েছেন। কিন্তু আন্দোলনকারী স্থানীয় এমপি আলহাজ্ব আবদুর রহমান বদির উপস্থিতিতে বৈঠকের কথা বলেন। ঘটনাস্থলে টেকনাফ মডেল থানার পুলিশ উপস্থিত রয়েছে এবং গ্রামবাসীর আন্দোলন এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত অব্যাহত আছে। প্রসংগত, রাহিঙ্গা দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা হিসাবে স্থানীয় কিছু বাসিন্দা নিম্ম বেতনভূক্ত কর্মচারী পদে নিযুক্ত ছিল। কিন্তু নানা অজুহাতে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকারস্থানীয় বেকার যুবক বাসিন্দাদেরকেই চাকুরীচ্যুত করে আসছে। অত্যন্ত দুঃখজনক বিষয় হচ্ছে স্থানীয়দের চাকরীচ্যুত করে তদস্থলে রোহিঙ্গা নিয়োগ করা হচ্ছে। যা সম্পূর্ণ বেআইনী এবং অমানবিক। ক্যাম্পের সরকারী দপ্তরসহ এনজিওগুলোতে এভাবে স্থানীয় বাসিন্দাদের অব্যাহত চাকুরীচ্যুতির কারনে বর্তমানে স্থানীয়দের কর্মরতদের সংখ্যা অতি নগন্য। উপরন্তু আবারও কিছু স্থানীয় বাসিন্দা কর্মচারীদের কয়েকটি এনজিও বাজেটের অজুহাত তুলে চাকুরীচ্যুত করার উদ্যোগ নিয়েছে। এ নিয়ে পুরোগ্রাম জুড়ে গ্রামবাসীদের মধ্যে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে। পরিস্থিতি অবনতির আশংকায় স্থানীয় ইউপি মেম্বার মোঃ আলী প্রশাসনের সাথে আলোচনায় বসার উদ্যোগ নেন। সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমোদন সাপেক্ষে ৩০ ডিসেম্বর নয়াপাড়া রোহিঙ্গা শরনার্থী শিবিরের ১ নং অংশে ক্যাম্প ইনচার্জের কার্যালয়ে এ যৌথ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছিল। স্থানীয় গ্রামবাসী, জনপ্রতিনিধি, ক্যাম্প ইনচার্জ ড. কামরুজ্জামান এবং ক্যাম্পে কর্মরত সরকারী ও এনজিও সংস্থার প্রতিনিধি অংশ গ্রহন করেন। যৌথ বৈঠকে ক্যাম্প ইনচার্জ ড. কামরুজ্জামান গ্রামবাসীদের দুঃখের কথা ও দাবী সমূহ মনোযোগ এবং গুরুত্বসহকারে শুনেন। বিষয়টি লিখিত ভাবে যথাযথ উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট দ্রুত পৌঁছে দিবেন বলে আশ্বস্ত করেছিলেন। স্থানীয় মেম্বার মোঃ আলী, গ্রাম সর্দার জকির আহমদ ও গ্রামবাসীরা জানান আমাদের পিঠ দেয়ালে ঠেকিয়ে গিয়েছে। আন্দোলন ছাড়া আমাদের কোন উপায় নেই