হাফেজ মুহাম্মদ কাশেম,টেকনাফ….বাংলা বর্ষের চৈত্রের শেষ মুহূর্তে পয়লা বৈশাখ উপলক্ষ্যে টেকনাফে জমজমাট বিকিকিনি চলছে। ১৪ এপ্রিল রোববার পহেলা বৈশাখ বরণ করা হবে বাংলা নববর্ষ-১৪২০কে। এ উপলক্ষ্যে নতুন পোশাক আর সাজ-সামগ্রী কিনতে টেকনাফ বার্মিজ মাকের্ট ও নিউ মাকের্টে ক্রেতার ঢল নেমেছে। বিক্রেতারাও চরম ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন বিকিকিনিতে। শুক্রবার ও শনিবার ছুটির দিনে বার্মিজ মাকের্ট ঘুরে দেখা গেছে- ক্রেতাদের উপচেপড়া ভিড়ে জমজমাট হয়ে উঠেছে । এবারে পহেলা বৈশাখ উপলক্ষ্যে ছেলেদের পছন্দের শীর্ষে রয়েছে, সাদা, লাল, মেরুন ও অফ হোয়াইট রঙের পাঞ্জাবি ও ফতুয়া। বৈশাখী আল্পনায় আঁকা টি-শার্টও রয়েছে ছেলেদের পছন্দের তালিকায়। বাজার ভেদে ছেলেরা প্রতিটা পাঞ্জাবি এক হাজার টাকা থেকে শুরু করে ২২০০ টাকায় কিনতে পারছেন। পয়লা বৈশাখে খাটি বাঙালির সাজে সাজতে সঙ্গে ৬০ টাকা থেকে ৭০ টাকায় একটি গামছাও কিনছেন তারা। এদিকে এজাহার মিয়া সুপার মার্কেটে ৪৫০ টাকা থেকে ৫৮০ টাকায় ছেলেদের পছন্দের ফতুয়া পাওয়া যাচ্ছে বৈশাখ উপলক্ষ্যে। মেয়েরাও এবার লাল ও সাদা রং বেশি পছন্দ করছেন। মেয়েদের পছন্দের পোশাকের তালিকায় রয়েছে হাফ সিল্ক ও সুতির লাল, সাদা, লাল কালো ও লাল সবুজের শাড়ি, টপ্স ও লেডিস পাঞ্জাবি। বাজার ভেদে মেয়ের প্রতিটি হাফ সিল্কের শাড়ি ২০০০ টাকা থেকে ২২০০ টাকা ও সুতি শাড়ি কিনতে পারছেন ১১০০ টাকা থেকে ১২০০ টাকায়। এছাড়া টপ্স বিক্রি হচ্ছে ৬৫০ টাকা থেকে শুরু করে ১৫০০ টাকা পর্যন্ত। ছোট বাচ্চাদের পছন্দের পাঞ্জাবি-পায়জামা বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ টাকা থেকে ১২০০ টাকায়। মেয়ে শিশুদের পছন্দের তালিকায় রয়েছে সালোয়ার, ওড়না ও কামিজ যা ১০০০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। তারা লাল সাদা রঙের সঙ্গে মাছ, পাখা, পেচা ও কুলাসহ নানা ধরনের আল্পনা আঁকা পোশাকই বেশি পছন্দ করছে।পয়লা বৈশাখের কেনাকাটা করতে অনেকেই পরিবার-পরিজনকে সঙ্গে করে নিয়ে এসেছেন বিপনী বিতানগুলোতে। মা, বাবা, সন্তান সন্ততি ও তরুণ-তরুণীরা একই রঙের বা একই ধরনের পোশাক ম্যাচিং করে পছন্দ করছেন। মাসুদ কবির ও আনিকা মাসুদ দম্পতি বৈশাখের কেনাকাটা করতে এসেছেন ৬ বছরের কন্যা শিশু উর্মিলা মাসুদকে নিয়ে। সবাই ম্যাচিং করে পোশাক কিনেছেন। মাসুদ কবির জানান, “পয়লা বৈশাখ বাঙালি জাতির একটি আনন্দ-উৎসবের দিন। তাই এ দিনটিকে উৎসবের সঙ্গে উদযাপন করার জন্য পরিবারের সবাই ম্যাচিং করে পোশাক কিনলাম।” শুক্রবার ও শনিবারের জমজমাট বেচাকেনা করতে পেরে বিপনি বিতানের বিভিন্ন দোকান মালিকেরাও মহাখুশি। টেকনাফ উপরের বাজারের জসীম ক্লথ স্টোরের স্বত্ত্বাধিকারী জসীম বলেন, “ বৈশাখ উপলক্ষ্যে ভালো বেচাকেনা হচ্ছে। অন্যদিন যেখানে ৩০ হাজার টাকার বেচাকেনা করতে হিমশিম খেতে হয়, সেখানে আজ প্রায় এক লাখ টাকার ওপরে বেচাকেনা করেছি। তবে বেচাকেনার লক্ষ্যমাত্রা ছিল দেড় লাখ টাকার। দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা খারাপ হওয়ার কারণে বেচাকেনায় একটু ভাটা পড়েছে।” নতুন পোশাকের পাশাপাশি নববর্ষ পালনে মৃৎশিল্পীদের মাটির তৈরি নানা ধরনের শৈল্পিক পণ্যও বেশ বিক্রি হচ্ছে। মাটির মাছ, নানা ধরনের পাখি, মাটির হাঁড়ি-পাতিল ৫০ টাকা থেকে দেড়শ’ টাকায় কিনতে পারছেন ক্রেতারা। মেয়েরা নানা ধরনের মোটা চুড়ি, কাঁচের চুড়ি, রেশমি চুড়ি ও জরি লাগানো চুড়ি এবং হরেক রকমের মালা কিনছেন। প্রতি ডজন কাঁচ কাটা চুড়ি ৫০ টাকা, রেশমি চুড়ি ৪০ টাকা ও জরি লাগানো চুড়ি বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ২০০ টাকা দরে। প্রতি জোড়া মোটা চুড়ি ৩০ টাকা থেকে ৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। কাঠের মালা ১৫০ টাকা ও পাথরের মালা ২০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। ছোট বড় একতারা ১০০ টাকা থেকে ২০০ টাকা, বাঁশি ৩০ টাকা থেকে ৩০০ টাকা, ঢোল ১৫০ টাকা থেকে ৩০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।###########