জোয়ারে ভাসছেন কক্সবাজারের ৩টি উপজেলার ৮০ গ্রামের মানুষ। জোয়ারের সঙ্গে প্লাবিত হচ্ছে চিংড়ি ঘের, কৃষি জমি, ঘর-বাড়ি। আর ভাটায় পানি কমলেও র্দুভোগের শেষ নেই এ ৮০ গ্রামের ২ লক্ষাধিক মানুষের। ২০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ বিধ্বস্ত হওয়ায় এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।প্রাপ্ত তথ্য মতে, কক্সবাজার টেকনাফ উপজেলার ২৫টি, মহেশখালী উপজেলার ৩৫টি এবং কুতুবদিয়া উপজেলার ২০ গ্রামের মানুষ জোয়ারের পানিতে ভেসে জীবন-যাপন করছেন। সরেজমিনে দেখা যায় মহেশখালী উপজেলার উপকূলবর্তী ধলঘাটা ইউনিয়নের ৩৫টি গ্রামের মানুষের র্দুভোগের চিত্র। সকাল ১০টায় জোয়ারের পানি বেড়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে গ্রামগুলোতে পানি প্রবেশ করতে শুরু করে। মাত্র এক ঘণ্টার পর পুরো ৩৫টি গ্রাম পানিবন্দি হয়ে উঠে। ধলঘাটা ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আহসান উল্লাহ বাচ্চু বাংলানিউজকে জানান, মাত্র ৪ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ভেঙে এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। এরমধ্যে সরইতলী এলাকার ২ কিলোমিটার, ভারত ঘোনায় ২ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ভেঙে গেছে। আর ওই ভাঙা অংশ দিয়ে পূর্ণিমার জোয়ারের পানি প্রবেশ করছে ব্যাপকভাবে। এতে ৩৫টি গ্রামে চলছে জোয়ার-ভাটা।
চেয়ারম্যান আহসান উল্লাহ বাচ্চু জানান, জরুরি ভিত্তিতে টেকসই বাঁধ দেওয়ার দাবি জানালেও পানি উন্নয়ন বোর্ড না জানার ভান করে রয়েছে।
মাত্র ৬ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ভেঙে টেকনাফ উপজেলার ২৫ গ্রামের ৫০ হাজার মানুষ জোয়ারের পানিতে ভাসছে বলে জানিয়েছেন টেকনাফ উপজেলার চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শফিক মিয়া।
তিনি বাংলানিউজকে বলেন, “সাবরাং ইউনিয়নের শাহপরীরদ্বীপ এলাকায় ৩ কিলোমিটার, টেকনাফ পৌরসভার জালিয়াপাড়া এলাকায় ১ কিলোমিটার, হোয়াইক্যং ইউনিয়নে ২ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ভেঙে জোয়ারের পানি প্রবেশ করছে।”
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, জোয়ারের পানিতে কুতুবদিয়া উপজেলার ২০টি গ্রাম প্লাবিত হচ্ছে। তবলরচর, আমজাখালী, আজমকলনী, মলমচর, পিয়ারকাটা এলাকায় ১০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ভেঙে এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। বড়ঘোপ ইউনিয়নের ৩টি, উত্তর ধুরুং ইউনিয়নের ১৭টি গ্রামের ৫০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। বর্তমানে এসব এলাকার পাঁচ হাজার মানুষ গৃহহারা হয়ে আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছেন।
কুতুবদিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা বখতিয়ার আলম বাংলানিউজকে জানান, প্লাবিত এলাকায় পানিবাহিত রোগ ডায়েরিয়া দেখা দিচ্ছে। কয়েক সপ্তাহ ধরে প্রত্যেক গ্রামে মেডিক্যাল দল কাজ করে যাচ্ছে।
কুতুবদিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফিরোজ আহমেদ বাংলানিউজকে জানান, প্লাবিত এলাকার ঘরবাড়ির লোকজনদের নিরাপদ স্থানে রাখার জন্য স্থানীয় চেয়ারম্যানদের নিদের্শ দেওয়া হয়েছে।
Leave a Reply