বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম…চট্টগ্রাম: হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশকে জঙ্গিবাদী রাষ্ট্র হিসেবে পরিচিত করতে চায় বলে অভিযোগ করেছে আহলে সুন্নাত ওয়াল জমা’আত নেতারা। সংগঠনটির ব্যাপারে সরকারকে কঠিন সিদ্ধান্ত নেয়ারও দাবি জানান তারা।
শুক্রবার বাদ জুমা হেফাজতে ইসলামের সমাবেশ থেকে চট্টগ্রাম জমিয়াতুল ফালাহ জাতীয় মসজিদের খতিব ও জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া আলীয়া মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আল্লামা জালালুদ্দিন আলকাদেরীর উপর হামলা ও অবরুদ্ধ করে রাখার প্রতিবাদে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তারা।
শুক্রবার বিকেল সাড়ে পাঁচটায় চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন আহলে সুন্নাত ওয়াল জমা’আর এর সদস্য সচিব এডভোকেট মোছাহেব উদ্দিন বখতিয়ার।
উল্লেখ্য, শুক্রবার জুমার নামাজ শেষে মসজিদ থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময় সমাবেশে আসা হেফাজতের কর্মী-সমর্থকরা আল্লামা জালালুদ্দিন আল কাদেরীকে লাঞ্চিত করে। এসময় তাকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল ছুড়ে। প্রায় ৫ঘন্টা অবরুদ্ধ থাকার পর তাকে নিরাপদ স্থানে নিয়ে যায় পুলিশ।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে মোছাহেব উদ্দিন বখতিয়ার বলেন,‘ওয়াহাবী-মওদুদীরা এর আগেও বারবার জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে হামলা করেছে। এসব করে পার পেয়ে যাওয়াতে এরা বারবার দেশের মসজিদের সম্মানিত খতিবদেরকে মসজিদে হামলা করে জঙ্গীবাদী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।‘
তাদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা না করলে দেশ জঙ্গিবাদীদের দখলে চলে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন,‘যেখানে আল্লার ঘর মসজিদেই আলেমদের নিরাপত্তা নেই সেখানে অন্যত্র নিরাপত্তা কতটুকু।’
মোছাহেব উদ্দিন বখতিয়ার বলেন,‘জাতি আবারো দেখলো হেফাজতীদের এজিদী আচরণ। ৬১ হিজরিতে এজিদ বাহিনী ইমাম হোসাইনকে শহীদ করে ক্ষান্ত হয়নি। তারা মক্কার হেরম, মসজিদে নববী শরীফে হামলা, রক্তপাত ও জুলুমের রাজত্ব কায়েম করেছিল। আবারো সেই পুরনো চেহারায় ধরা পড়েছে নব্য এজিদি হেফাজতী-ওহাবীরা। ‘
তিনি অভিযোগ করেন,‘আল্লাম জালালুদ্দিনকে মেরে ফেলার উদ্দ্যেশ্যে সশস্ত্র আক্রমণ ও অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে। আমরা এর প্রতিবাদ জানানো ভাষা পাচ্ছি না।’
তিনি বলেন,‘এরা এতই জঘন্য হতে পারে যে জনগণ ধারণাও করতে পারে না। এদের মুখে শেখ ফরিদ কিন্তু বগলে ইট। তাই সবাইকে এদের বর্জনের সিদ্ধান্ত নিতে হবে।’
‘এরা জঙ্গী, এদের কওমি মাদ্রাসাগুলো জঙ্গী প্রজনন কেন্দ্র। এদের জঙ্গী প্রশিক্ষণ রয়েছে। সুতরাং এরা যে কোন সময়ে দেশে বড় ধরণের সংঘাতের জন্ম দিতে পারে।’
তাই সময় থাকতেই তাদের বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত নেয়ার জন্য সরকারের প্রতি দাবি জানান তিনি।
হেফাজত নেতাদের আদেশেই জমিয়াতুল ফালাহ মসজিদের খতিবের উপর হামলা হয়েছে অভিযোগ করে বখতিয়ার বলেন,‘ জঙ্গী সংগঠনের নেতাদের উসকানিতেই জালালুদ্দিনের উপর দ্বিতীয় বারের মতো হামলা করা হয়েছে।’
নির্দেশদাতাদের গ্রেফতারের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন,‘এবারো পার পেয়ে গেলে তাদের সাহস আরো বেড়ে যাবে।‘
এদিকে জমিয়াতুল ফালাহ জাতীয় মসজিদের খতিবের উপর হামলার প্রতিবাদে নগরীর জামালখানে বিক্ষোভ মিছিল করেছে আহলে সুন্নাত ওয়াল জমা’আত। এছাড়া বিভিন্ন জেলা উপজেলায়ও বিক্ষোভ মিছিল হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে জামেয়া আহমদিয়া সন্নিয়া আলীয়া মাদ্রাসা মুফতি অছিয়র রহমান, আব্দুল ওয়াজেদ, মাওলানা আব্দুল মান্নান, মাওলানা এমএ মতিন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়:১৯৩০ঘন্টা, এপ্রিল ২৬ ২০১৩