কক্সবাজারের কুতুপালং ও নয়াপাড়া রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্পে একাধিক ডাকাত গ্রুপ সক্রিয় হয়ে উঠায় সাধারণ শরণার্থীদের মাঝে চরম আতংক বিরাজ করছে। দুর্ধর্ষ ডাকাতেরা রাতের আঁধারে ক্যাম্পের বাইরে অবস্থান নিয়ে সড়ক ডাকাতিসহ বিভিন্ন বাসাবাড়িতে ডাকাতি করে আসছে। ফলে আইন শৃংখলা বাহিনীসহ সংশ্লিষ্টরা এদের উৎপাত সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে। এতে জেলাব্যাপী আইন শৃংখলার অবনতি ঘটছে। সমপ্রতি উখিয়া উপজেলার দুর্গম উপকূলীয় এলাকা চেপটখালী ঢালায় পুলিশের অস্ত্র ছিনতাইয়ের পর কিছু ডাকাত গ্রেপ্তার হলেও চিহ্নিত অন্যান্য ডাকাতেরা আত্নগোপনে রয়েছে । স্থানীয়রা জানায়, পুলিশের নির্ঘুম অভিযানে মোস্ট ওয়ান্টেড লিস্টে থাকা চার ডাকাত পুলিশের জালে আটকা পড়লেও অবশিষ্ট চিহ্নিত ডাকাতদের অপতৎপরতা বন্ধ হয় নি। তাই কক্সবাজারে দু’টি রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ডাকাত আতংকে রয়েছে সাধারণ শরণার্থীরও । পুলিশের মতে কক্সবাজারের দু’রোহিঙ্গা ক্যাম্পের সক্রিয় ডাকাতদের চিহ্নিত করে গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। এসব উগ্র রোহিঙ্গা ডাকাতকে আইনের আওতায় আনতে না পারলে উৎপাত বৃদ্ধি পাবে। কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ডাকাত আবু তাহের প্রকাশ আবু তৈয়ব, আবুল শামা, হাবিব উল্লাহ, ছৈয়দ হোসেন, পুলিশের হাতে আটক ইদ্রিসসহ আরো শতাধিক উগ্র রোহিঙ্গা সশস্ত্র ডাকাত গ্রুপে কাজ করছে বলে ক্যাম্প প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে। সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র মতে, রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্পের যে সব মহিলারা ক্যাম্প ব্যবস্থাপনা কমিটির সাথে জড়িত তারাই এসব অপরাধে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। কারণ তারা উপজেলার বিভিন্ন স্থানে রাতের আঁধারে রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্প থেকে বের হয়ে নির্বিঘ্নে ডাকাতিসহ অন্যান্য অপরাধ সংঘটিত করে নিরাপদে ফিরে যায় ক্যাম্পে। রোহিঙ্গাদের এ ধরনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে নিরীহ গ্রামবাসী অনেক সময় পুলিশি হয়রানির শিকার হয়। স্থানীয় সাবেক ইউপি মেম্বার বখতিয়ার আহমদ জানান, রোহিঙ্গাদের প্রতিরোধের বিষয়ে একাধিক প্রতিবাদ সভা ও মানববন্ধন করা হয়। কিন্তু রোহিঙ্গাদের অবাধ বিচরণ বন্ধ হয়নি। তার পরও আমরা এসব ডাকাতদের কিংবা উগ্র রোহিঙ্গা গোষ্ঠীকে দমনের চেষ্টায় গ্রামবাসীদের সাথে থেকে সর্বক্ষণ পাহারা দিচ্ছি। কুতুপালং পুলিশ ক্যাম্পের আইসি মো. শাহজাহান জানান, রোহিঙ্গাদের তুলনায় পুলিশের সংখ্যা নগণ্য। এই স্বল্পসংখ্যক পুলিশ দিয়ে এত বিপুলসংখ্যক রোহিঙ্গাদের সামাল দেওয়া কঠিন ব্যাপার। তারপরও সাধ্যমত এসব অপরাধীদের দমনে পুলিশের প্রশংসনীয় ভূমিকা রয়েছে। কুতুপালং ক্যাম্প ইনচার্জ জালাল উদ্দিন জানান, কুতুপালং ক্যাম্পে অপরাধী রোহিঙ্গাদের চিহ্নিত করার প্রক্রিয়া ইতোপূর্বে শুরু করা হয়েছে। শীঘ্রই এসব অপরাধীদের আইনের আওতায় আনা হবে। নয়াপাড়া ক্যাম্প ইনচাজ কামরুজ্জামান জানান, ইতিমধ্যে কয়েকজন ডাকাতকে আটক করা হয়েছে। উদ্ধার করা হয়েছে অস্ত্রও ।
Leave a Reply