কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জয়নুল বারী সীমান্তে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশে ইন্ধন না দেয়ার জন্য ৭ টি এনজিও প্রতিনিধিদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি গতকাল মঙ্গলবার সকালে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে এই ৭ টি এনজিও প্রতিনিধিদের সাথে এক মতবিনিময় সভায় এ আহ্বান জানান। জেলা প্রশাসক এ প্রসঙ্গে বলেন, রোহিঙ্গাদের প্রতি আমাদের সহানুভুতির কোন কমতি নেই। আমরা তাদের অনুপ্রবেশকালে ঠেকিয়ে দিচ্ছি বটে কিন্তু তাদের প্রতি অত্যন্ত ভাল আচরণ দিচ্ছি। এমনকি একজন ক্ষুধার্থ রোহিঙ্গাকে পেট পুরে খাবারও দিচ্ছি। তিনি এনজিও এমএসএফ এবং এসিএফ এর আবেদন বিবেচনা পূর্বক অনুমোদন দেয়ারও আশ্বাস প্রদান করেন।কক্সবাজারের সীমান্তবর্তী এলাকায় কর্মরত এ ৭টি এনজিও হচ্ছে যথাক্রমে মুসলিম এইড, এমএসএফ (হল্যান্ড), এ.সি.এফ, সেভ দ্য চিলড্রেন, ভি.ই.আর.সি, টি.এ.আই ও আর.আই.বি। জেলা প্রশাসক বলেন, আমাদের নিকট এ রকমও খবর রয়েছে যে-এনজিওগুলো নানাভাবে নাফ নদীর ওপারের আরাকান থেকে রোহিঙ্গাদের অনুপ্রবেশে ইন্ধন দিয়ে যাচ্ছে। তিনি এ প্রসঙ্গে বলেন, বিদেশী নাগরিক এবং বিদেশী যে কোন সংস্থা বা সংগটনকে দেশের প্রচলিত আইন মেনে নিতে হয়। দুনিয়ার দেশে দেশে এ নিয়মই চালু রয়েছে। আর তেমনি আমাদের দেশে যে সব বিদেশী নাগরিক এবং বিদেশী এনজিও রয়েছে তাদের বেলায়ও প্রযোজ্য এ আইন। তবে মতবিনিময় সভায় উপস্থিত এনজিও প্রতিনিধিরা রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশে ইন্ধন দেয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
এ প্রসঙ্গে তিনি সীমান্তে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের চেষ্টার কথা তুলে ধরে রোহিঙ্গা ইস্যুতে বর্তমান সরকারের অবস্থান ব্যাখ্যা করে বলেন, সরকার কিছুতেই আর একজন রোহিঙ্গাকেও এদেশের ভূখন্ডে স্থান দিবে না। আর একারনেই আপনারা যারা এনজিও নিয়ে কাজ করছেন তাদের প্রত্যেককেই সরকারের নীতিমালার আলোকেই কাজ করতে বাধ্য বলে তিনি স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেন-অন্যথায় দায়িত্ব নিজেকেই বহন করতে হবে।
মতবিনিময় সভায় পুলিশ সুপার সেলিম মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর বলেন, সীমান্তে উস্কানি মূলক কোন কাজ করা এমনিতেই জঘন্য অপরাধ আর এমন উদ্ভুত পরিস্থিতিতে যদি কেউ এমনটা করতে চান তাহলে কিন্তু আইন নিজের গতিতেই চলবে। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা) খন্দকার জহিরুল ইসলাম এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
সরকারী কয়েকটি বিভাগের সাথে সমন্বয় সভা
গতকাল বিকালে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে সরকারি কয়েকটি অফিসের কর্মকর্তাদের নিয়ে এক সমন্বয় সভা অনুষ্টিত হয়েছে। এ সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জয়নুল বারী। সভায় রোহিঙ্গা শরনার্থী প্রত্যাবাসন কমিশনার অফিস, বিজিবি, কোষ্টগার্ড, পুলিশ ও সীমান্তবর্তী উখিয়া এবং টেকনাফের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদ্বয় উপস্থিত ছিলেন। সভায় রোহিঙ্গা ইস্যুতে সরকারের অবস্থান এবং রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ ঠেকানোর নীতিগত সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
আইন মেনে চলা,আইনের প্রতি শ্রদ্দ্বা প্রদর্শন করা প্রতিটা দেশি বিদেশী নাগরিকের একান্ত কর্তব্য।