ফরিদুল মোস্তফা খান : বৌদ্ধ জনপদে হামলার সরকারি তদন্তে জড়িত হিসাবে শনাক্ত ও প্রধানমন্ত্রীসহ বিভিন্ন মহলের পক্ষ থেকে আলোচিত করে তোলা কক্সবাজারের বিএনপি দলীয় এমপি লুৎফুর রহমান কাজল আছেন রামুর বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের হৃদয়ের মনিকোটায়। ঘটনার পর থেকে তিনি দফায় দফায় ক্ষতিগ্রস্থ বৌদ্ধ পল্লী সরেজমিন পরিদর্শন করেছেন। প্রতিপক্ষ রাজনৈতিক দলের হুমকি ধমকিতে একদিনও আত্মগোপনে না থেকে তিনি সেখানকার ভুক্তভোগী বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের সুখ-দুঃখের খবর নিয়েছেন বরাবরের মতই। আন্তরিক সহমর্মিতা প্রকাশ করে অনেকের মাঝে বিলিয়ে দিয়েছেন ব্যক্তিগত তহবিলের লাখ লাখ টাকার অনুদান। আবার বাড়ি-ঘরহীন অনেককেই দিয়েছেন আশ্রয়। অন্ন-বস্ত্র, চিকিৎসাসহ মৌলিক অগণিত সহযোগিতা দিয়ে তিনি করেছেন বৌদ্ধদের অভিভাবকত্ব।
ঘটনার দীর্ঘদিন পর গতকাল ক্ষতিগ্রস্থ রামু উপজেলার বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের বিভিন্ন লোকজনের সাথে আলাপে জানা গেছে উল্লেখিত তথ্য।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সহিংসতার একটি অনাকাঙ্খিত ঘটনায় এমপি কাজল জড়িত আছে বলে যারাই অপপ্রচার করছে, তাদের কারণেই পুরো বিচার ব্যবস্থা এখন প্রশ্নবিদ্ধ। কারণ সেদিন রাতের তান্ডব লীলা থামাতে স্থানীয় ইউএনও’র অনুরোধে তিনি আপ্রাণ চেষ্টা করেছিলেন পরিস্থিতি ঠেকাতে। কিন্তু ধর্মান্ধ জনতার বাঁধভাঙ্গা স্রোতে ঘটে যাওয়া দূর্ঘটনায় তার বিরুদ্ধে অপপ্রচার এখন শুধু রাজনৈতিক বিরোধীতা বলে মনে করেছেন ক্ষতিগ্রস্থ বৌদ্ধ নেতারা। এজন্য বৌদ্ধ নেতারা পুরো ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্তও দাবি করে বলেছেন, এমপি কাজল যে দল করুক না কেন, তিনি আমাদের এমপি। প্রান্তিক রাজনৈতিক বাস্তব অভিজ্ঞতায় তিল তিল করে এমপি হওয়া এই ব্যক্তির সাথে রয়েছে ধর্ম, বর্ণ, নির্বিশেষে সকলের হৃদ্যতা। একজন রাজনৈতিক নেতা হিসেবে তিনি আমাদের অনেকভাবে সাহায্য সহযোগিতা করেছেন অতীতে। তাই বিগত নির্বাচনে রামু বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের অনেকেই তাকে মূল্যবান রায় প্রদান করেছেন। এই অবস্থায় সেরকম একজন ব্যক্তি কোন অবস্থায় আমাদের ক্ষতি করতে পারেন না। তিনি উস্কানি দেননি, বরং ঘটনা নিয়ন্ত্রণে আন্তরিক ছিলেন।
কাজেই এই ঘটনায় তার বিরুদ্ধে মামলা কিংবা কোন প্রকার হয়রানি করাটাই হবে চরম অবিচার।
এদিকে বৌদ্ধ তান্ডবে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ইন্ধন দেয়ার তথ্য সরকার গঠিত তদন্ত কমিটির রিপোর্টে উঠে আসায় এমপি কাজলের বিরুদ্ধে মামলা দেয়ার নির্দেশনা আসছে বলে গুঞ্জন উঠেছে এলাকায়। মামলা হলেই ¯পীকারের অনুমতি নিয়ে তাঁকে যেকোন সময় গ্রেফতার করা হতে পারে বলেও শোনা যাচ্ছে। ফলে গতকাল মুঠোফোনে এ প্রতিবেদক তার সাথে যোগাযোগ করলে তিনি সরকারের এরকম ভীতিতে তটস্থ নন বলে দাবি করে বলেন, আমি কোন অপরাধ করিনি। অতএব, মামলা হোক আর যাই হোক অন্তত পালিয়ে যাবনা। অতীতের মত ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিতে থাকব।
এমপি কাজল আরো বলেন, আমি ব্যক্তিগত তহবিল থেকে সেদিনও ক্ষতিগ্রস্থ বৌদ্ধদের ১ লাখ টাকার অনুদান দিয়েছি। এলাকার সংসদ সদস্য হিসাবে চেষ্টা করছি তাদের জন্য দেয়া সরকারের সহযোগিতাগুলো যথাযথভাবে পৌঁছে দিতে। শুধু তাই নয়, এমপি কাজল রামু উপজেলার জোয়ারিয়ানালায় নির্মিতব্য বৌদ্ধদের প্যাগোডা নির্মাণে ব্যক্তিগত তহবিল থেকে নগদ ৩ লাখ টাকা সহযোগিতা করেছেন বলেও জানান।
Leave a Reply