এম. কফিল উদ্দিন, পেকুয়া: পেকুয়ায় বনের গাছ কেটে অবৈধ বোট তৈরীর হিড়িক পড়েছে। বন উজাড় হলেও বন বিভাগ নির্বিকার। পেকুয়া উপজেলার রাজাখালী, মগনামা, উজানটিয়া ইউনিয়নে সামাজিক বন, রিজার্ভ বন উজাড় করে নির্ধিদ্বায় বোট তৈরী করে যাচ্ছে। একদিকে বন উজাড় হচ্ছে , অন্যদিকে পরিবেশের ভারসাম্য হারিয়ে যাচ্ছে।
অভিযোগ রয়েছে, এসব তৈরীকৃত বোট মালিকদের কাছ থেকে বন বিভাগ ও থানা প্রশাসন মোটা অংকের মাসোহারা নেয়। যার পরিপ্রেক্ষিতে প্রভাবশালী বোট মালিকরা সরকারী নিয়ম নীতি তোয়াক্কা না করে বনের গাছ দিয়ে তারা বোট তৈরী করে যাচ্ছে।
প্রাপ্ত তথ্যে জানা গেছে, উপজেলার বিভিন্ন এলাকার চিহ্নিত কিছু গাছ চোর সিন্ডিকেট রাতে আধারে বনের গাছ কেটে পেকুয়াসহ বিভিন্ন এলাকায় পাচার করে। পাচারকৃত ওইসব গাছগুলো দিয়ে বোটসহ বিভিন্ন ব্যবহারকৃত সরঞ্জামাদি তৈরী করছে।
স্থানীয় প্রভাবশালী নেতা ও সংশি¬ষ্ট কর্তৃপক্ষের যোগসাজসে বন থেকে এসব গাছ কেটে গাছ চোর সিন্ডিকেটরা যে যার ইচ্ছেমত ব্যবহার করছে। সরজমিনে পরিদর্শনকালে দেখা যায়, রাজাখালী ইউনিয়নের গোদার পাড়া এলাকায় স্থানীয় মৃত: উকিল আহাম্মদের পুত্র আবদুল হক বনের গাছ দিয়ে দেদারছে বোট তৈরী করে যাচ্ছে । বনের গাছ দিয়ে বোট তৈরী বৈধ কিনা আবদুল হকের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বন কর্মকর্তা ও থানা পুলিশকে ম্যানেজ করে এসব বোট বানাচ্ছি। টাকা দিলে অবৈধ এখন বৈধ হয়ে যায়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেশ কয়েকজন এলাকাবাসী জানায়, ওই আবদুল হক নিজের জন্য বোট তৈরী করে। পাশাপাশি অন্যান্যদের জন্য বনের গাছ দিয়ে বোট তৈরীর অর্ডার নেয়। তাদের কাছ থেকে সে মোটা অংকের টাকা নিয়ে এসব বোট তৈরী করছে। এছাড়া উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে দেখা গেছে, কর্তৃপক্ষকে ম্যানেজ করে অনেকেই দেদারছে বোট তৈরী করে যাচ্ছে।
এলাকাবাসীর অভিযোগে জানা যায়, বনবিভাগের কর্মকর্তা কর্মচারীদের সাথে গোপন আঁতাত করে স্থানীয় কিছু গাছ পাচারকারী চক্র বনাঞ্চল সাবাড় করে এসব বোট ও বিভিন্ন দ্রব্যাদি তৈরী করছে। এতে পরিবেশ মারাত্মক হুমকির মুখে পড়েছে। রক্ষা পাচ্ছেনা জীব বৈচিত্র্যও। বোট তৈরীসহ বিভিন্ন্ দ্রব্যাদি তৈরীর সময় মাসোহারা নেয় সংশি¬ষ্ট কর্তৃপক্ষ। তাই কর্তৃপক্ষ তা দেখে না দেখার ভান করে আছে। কর্তৃপক্ষের এমন ভূমিকার প্রেক্ষিতে কাঠ চোরেরা বেপরোয়া হয়ে ধ্বংস করছে বনাঞ্চল।
এ ব্যাপারে জানতে মগনামা বন বিট কর্মকর্তা মুজিব খানের কাছে মোবাইলে কল করলে তিনি কল রিসিভ না করায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
পরিবেশবাদীদের ভাষ্য মতে, পাহাড়ের গাছ নিধন করে সরঞ্জামাদি তৈরীর ফলে পরিবেশ মারাত্মক হুমকির সম্মুখীন হচ্ছে। এতে দেশে প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের আশংকা বেড়ে যাচ্ছে। পরিবেশবাদীরা অতিস্বত্তর দেশের ভারসাম্য রক্ষার্তে এসব গাছ চোর সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে এবং বনের গাছ দিয়ে অবৈধভাবে বোটসহ বিভিন্ন দৈনন্দিন ব্যবহারকৃত সরাঞ্জামাদি তৈরী বন্ধ করার জন্য সংশি¬ষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে জোর আবেদন জানিয়েছেন।
Leave a Reply