নুর হাকিম আনোয়ার : জেঁকে বসা শীতের মত ঠান্ডার তীব্রতা এখনও শুরু হয়নি। তবে আছে হেমন্তের ভোরে ঠান্ডা হাওয়া আর মিষ্টি কুয়াশা। আর এর সাথে মিষ্টি রোদের মাখামাখি। প্রাকৃতিক সহজ সমীকরণের সৃষ্টি এ মিষ্টি ভোরকে সঙ্গী করে শনিবার থেকে সোমবার পর্যন্ত ঈদ আনন্দে মেতেছে টেকনাফবাসী। ব্যাপক আনন্দ, উচ্ছ্বাস আর ত্যাগের মহিমায় ও যথাযোগ্য ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য্যরে মধ্য দিয়েই শেষ হয়েছে পবিত্র ঈদুল আযহা। যথারীতি নামাজ আদায়ের মধ্য দিয়েই সকালে শুরু হয় ঈদুল আযহার আনুষ্ঠানিকতা। নামাজ আদায় শেষে বিবদমান বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা সুন্দর বাংলাদেশ গড়তে ত্যাগের মহিমায় রাজনীতিকদের আত্মশুদ্ধি এবং ঐক্যবদ্ধ থাকার অঙ্গীকারের কথা বলেছেন। টেকনাফ উপজেলায় উপজেলা প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে আবদুর রহমান বদি এমপি বলেন ‘আমরা যারা রাজনীতি করি তাদের ত্যাগের মহিমায় সুন্দর বাংলাদেশ,সুখী,সমৃদ্ধ জাতি গঠনের জন্য ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। তাহলে জাতি ঐক্যবদ্ধ হবে। বাংলাদেশ একদিন বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে।’এদিকে নামাজ আদায়ের পরপরই সকাল সাড়ে আটটা থেকে টেকনাফের বিভিন্ন অলিগলি, রাস্তায় মাঠে, বাসাবাড়ির সামনে পশু কোরবানী শুরু হয়েছে। আর কোরবানির বর্জ্য অপসারণে সকাল থেকে দেখা গেছে পৌরসভার সেবক ও গাড়ি। ঈদ উপলে বিভিন্ন সরকারী-বেসরকারী ভবনে আলোকসজ্জা করা হয়েছে। হালকা হালকা শীতে সে আমেজ। বঙ্গোপসাগর ঘেরা উপকূলীয় এলাকার পাদদেশে অবস্থিত তাই পৌর শহরের তুলনায় গ্রামে একটু বেশি শীত অনুভূত হচ্ছে। দ্রুত পাল্টে যাচ্ছে এ এলাকার আবহাওয়া। এখানে এখন দিনে গরমও রাতে শীত। সঙ্গে কুয়াশাও পড়ছে। মাঝেমধ্যে কুয়াশায় পুরো এলাকা ছেয়ে যাচ্ছে। সবুজ ঘাস ও গাছের পাতায় জমছে শিশিরের কণা। প্রকৃতিতে এখন হেমন্তকাল। গাছে গাছে ফুটছে শিউলি, বকুলসহ নানা ফুল। মাঠে মাঠে বেড়ে উঠছে সবুজ ধান। বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে যেন সবুজ রং ঢেলে দিয়েছে প্রকৃতি। বইছে হিমেল হাওয়া। সপ্তাহ খানেক ধরে আবহাওয়ার এ পরিবর্তন দেখছে এলাকার মানুষ। সারা দিন কড়া রোদ থাকলেও সন্ধ্যার পর শান্ত হয়ে আসছে প্রকৃতি। রাতে বইছে ঠান্ডা হাওয়া। রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে গরম কমে যাচ্ছে। শেষ রাতে শীত অনুভূত হচ্ছে। টেকনাফ আবহাওয়া অফিসের সূত্রে জানা যায়, গত কয়েকদিন ধরে দিনে ৩৩ দশমিক ৬ এবং রাতে ২০ দশমিক ৮ ডিগ্রী সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে।
টেকনাফ এলাকার অলিগলিতে বজ্যের স্তুপ এখনও জমে আছে
পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে টেকনাফে ১০ হাজারের বেশি পশু জবাই করা হয়েছে। জবাইকৃত পশুর বর্জ্য-রক্ত পৌর শহরের অলিগলি ছাপিয়ে মূল সড়কগুলোতেও পড়ে রয়েছে। পরিচ্ছন্নতার দায়িত্বে থাকা টেকনাফ পৌরসভার কার্যক্রম তেমনভাবে চোখে পড়ছে না কোথাও। ব্যক্তি উদ্যোগে কিছুটা পরিষ্কারের কাজ করছেন স্থানীয়রা। সোমবারে টেকনাফ বিভিন্ন স্থানে ঘুরে এ চিত্র দেখা গেছে। টেকনাফ বাস টামিনাল,জালিয়া পাড়া, কুলাল পাড়া, ইসলামাবাদ এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, রাস্তার যত্রতত্র জবাইকৃত পশুর রক্ত-বর্জ্য পড়ে রয়েছে। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, এগুলো তাড়াতাড়ি পরিষ্কার করা না হলে দুর্গন্ধ ও দূষণ ছড়াতে শুরু করবে, যা টেকনাফবাসীকে ভোগান্তিতে ফেলবে। এদিকে বাজার পাড়া এলাকায় ঘুরেও একই দৃশ্য চোখে পড়েছে।
Leave a Reply