আনোয়ার হোছাইন, ঈদগাঁও (কক্সবাজার) প্রতিনিধি………..গত কাল ১২ মার্চ ছিল দেশ ব্যাপী অনুর্ধ ৫ বছরের নিচের শিশুদের ভিটামিন এ ক্যাপসুল ও কৃমি নাশক ঔষধ খাওয়ানোর পূর্ব নির্ধারিত দিন। কর্মসূচী দেশের স্ব-স্ব এলাকায় দায়িত্বপ্রাপ্তরা যথাসময়ে শুরু করে। কিন্তু দুপুর না গড়াতেই গুজব ছড়িয়ে পড়ে ক্যাপসুল খেয়ে শিশুরা অসুস্থ হয়ে পড়ছে। মুহুর্তেই তা চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। আবার অনেকে বিভিন্ন জায়গায় মৃত্যু হয়েছে বলেও জানিয়েছে। এ সংবাদে ৭ ইউনিয়নের সমন্বয়ে বৃহত্তর ঈদগাঁওর হাজার হাজার শিশুর অভিভাবকরা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ে। বিকাল বেলা হওয়ায় অধিকাংশ পরিবারের পুরুষ অভিভাবরা প্রয়োজনীয় কাজে বাজার বা ঘরের বাইরে অবস্থান করাতে আতংকগ্রস্থ মা’দের শিশু নিয়ে এলাকার চিকিৎসকদের নিকট সরনাপন্ন হতে দেখা যায়। সরেজমিনে ঈদগাঁও বাজারের বিভিন্ন ফার্মেসী, চিকিৎসক চেম্বার, হাসপাতাল ও ক্লিনিক গুলোতে শিশুদের নিয়ে হাজারো মা’কে সারিবদ্ধ হয়ে আতংকগ্রস্থ অবস্থায় ভিড় করতে দেখা যায়। ঐ সময় ইসলামাবাদ হাজী পাড়ার জাবের নামের এক ব্যাক্তির সাথে কথা হলে জানায়, তার ৬ বছরের শিশুকন্যা নাঈমা ক্যাপসুল খেয়ে আকস্মিক অসুস্থ হয়ে ৮-১০ বার বমি করে। পরে ঈদগাঁও উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রের মেডিকেল অফিসার ডাঃ আব্দুর রহিম আমানীর শরনাপন্ন হলে তিনি প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেন এবং বর্তমানে তার তত্বাবধানে রয়েছে। এ ছাড়া অভিভাবক জানান ক্যাপসুল খাওয়ার কিছুক্ষন পর থেকে কারো গায়ে জ্বর, কারো পায়খানা কিংবা কোন শিশুকে কাপুনি পেয়ে বসে। এ রুপ অনেক শিশুর অভিভাবক এ প্রতিবেদককে একই অভিমত ব্যক্ত করেন। তবে অধিকাংশকে সুস্থ শিশু নিয়ে চিকিৎসকের নিকট ছুটতে দেখা যায়। এ ছাড়া মোবাইল ফোনে বিভিন্ন এলাকা থেকে লোকজনে সংবাদ কর্মীদের নিকট এ বিষয়ে জানতে চায়। এক কথায় ঈদগাঁও বাজারের অধিকাংশ চিকিৎসক বিকাল থেকে আতংকগ্রস্থ অভিভাবকদের অনুরোধে শিশুদের চিকিৎসা দিতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। এব্যাপারে এক চিকিৎসকের সাথে যোগাযোগ করা হলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, খাওয়ানো ক্যাপসুলের গুণগত মান নিয়ে ইতিপূর্বে বিশ্ব স্বাস্থ্যসংস্থা আপত্তি জানাতে ্একাধিক বার বাংলাদেশ সরকার উক্ত ক্যাপসুল খাওয়ানোর দিনক্ষণ ধার্য করলেও পরে বাতিল করে দেয়। কিন্তু সেই একই ক্যাপসুল একটি দেশ থেকে আমদানী করে গতকাল তা খাওয়ানোর পর এ গুজব ছড়িয়ে পড়ে। তাদের চেম্বারে শুধু এ জাতীয় শিশু নিয়ে অভিভাবকদের ভিড় থাকলেও এখনো বড় ধরনের কোন সমস্যা ধরা পড়েনি। এ ব্যাপারে কক্সবাজার সিভিল সার্জন কাজল কান্তি বড়–য়ার সাথে যোগাযোগ করা হলে জানান, তারাও এ জাতিয় সংবাদ পেয়েছেন তবে এখনো পর্যন্ত সুনির্দিষ্ট কোন শিশু রোগী তারা পাননি। তবে আকর্ষিক দূর্ঘটনা এড়াতে শিশু বিশেষজ্ঞদের একটি টিম নিয়ে তিনি সদর হাসপাতালে অবস্থান করছেন জানিয়ে ফোনটি শিশু বিশেষজ্ঞ ডাক্তার অরূপ দত্ত বাপ্পিকে দিলে তিনি বিষয়টি গুজব বলে জানান। তবে তারা এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় জরুরী সেবা দিতে প্রস্তুত রয়েছেন। এদিকে বিষয়টি গুজব না বাস্তব তা রিপোর্ট লিখা পর্যন্ত নির্ভরযোগ্য সূত্রে নিশ্চিত হওয়া যায় নি।