আনোয়ার হোছাইন, (ঈদগাঁও) – কক্সবাজার সদরের ঈদগাঁও ইউনিয়নের মাইজ পাড়া গ্রাম থেকে ২৬ মে সকাল ৬টা দিকে লোকজনের সহায়তায় পুলিশ চিত্রা প্রজাতির একটি বন্য হরিণ উদ্ধার করে পরে ডুলহাজারা বঙ্গবন্ধু সাফারী পার্ক কর্তৃপক্ষের নিকট হস্তান্তর করেছে। উদ্ধার হওয়া হরিণটি দেখতে সকাল থেকে শত শত উৎসুক জনতাকে উদ্ধারস্থল ও তদন্ত কেন্দ্র এলাকায় ভীড় করতে দেখা যায়। পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী বর্ণিত এলাকার মৃত এজাহার মিয়ার পুত্র নূর মোহাম্মদ জানান, ভারী বৃষ্টিপাতে বাড়ীর পার্শ্ববর্তী জমিনে জমে থাকা পানিতে সকালে মাছ ধরার ফাঁদ বসায় নূর মোহাম্মদ। সকালের দিকে হঠাৎ পূর্বদিক থেকে একটি হরিণ দৌড়ে আসতে দেখে সে তাকে ধাওয়া করে ঝাপটে ধরে। কিন্তু হরিণটি এক লাপে তাকে ছিটকে ফেলে দিয়ে পালাতে শুরু করলে তার চিৎকারে আরো দু’জন একযোগে হরিণটিকে ধাওয়া করলে এক পর্যায়ে একটি কুকুর হরিণটিকে আক্রমণ করে বসে। এতে সে সহ অন্যরা হরিণটি ধরতে সক্ষম হয়। মানুষের চেঁচামিচিতে ঘটনাটি চারদিকে ছড়িয়ে পড়লে অনেক লোক জড়ো হয় এবং অনেকে তা জবাই করে মাংস ভক্ষনের জন্যও বলে। কিন্তু স্থানীয় কিছু সচেতন ব্যক্তি বিষয়টি পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ এসআই মনজুর কাদের ভ্ূঁইয়াকে জানালে তার নির্দেশে পুলিশের একটি দল সকাল ৭টার দিকে হরিণটিকে উদ্ধার করে তদন্ত কেন্দ্রে নিয়ে যায়। এ সময় হরিণের শরীরে একাধিক আঘাতের চিহ্ন থাকাতে পুলিশ প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়। পরে দেশের সর্ববৃহৎ বন্য প্রাণী প্রজনন কেন্দ্র ডুলাহাজারা বঙ্গবন্ধু সাফারী পার্ক কর্তৃপক্ষকে পুলিশ বিষয়টি অবগত করলে পার্কের দায়িত্বে নিয়োজিত বিট কর্মকর্তা মাজাহারুল ইসলাম চৌধুরী ও ইলিকক্ট্রেশিয়ান মোঃ খুরশেদ আলী খোকনের নেতৃত্বে একটি দল তদন্ত কেন্দ্রে পৌঁছলে প্রশাসনিক প্রক্রিয়া শেষে তদন্ত কেন্দ্র ইনচার্জ পার্ক কর্তৃপক্ষের নিকট হরিণটি হস্তান্তর করে। এ বিষয়ে ইনচার্জ এসআই মনজুর কাদের ভূঁইয়ার সাথে যোগাযোগ করা জানান বিলুপ্তির পথে থাকা এ বন্য সম্পদ রক্ষা সকল নাগরিকের দায়িত্ব। সরকারী দায়িত্বশীল হিসেবে তিনি উক্ত হরিণটি উদ্ধারপূর্বক সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট হস্তান্তর করতে পেরে স্বস্থিবোধ করছেন। পার্ক কর্তৃপক্ষের বিট কর্মকর্তা মাজাহারুল ইসলাম চৌধুরীর সাথে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, ধারণা করা হচ্ছে গভীর জঙ্গলে শিকারীদের ধাওয়া খেয়ে প্রাণে রক্ষা পেতে প্রায় ৩০ কেজি ওজনের এ হরিণটি লোকালয়ে পালিয়ে আসার সময় একাধিক বার হামলার শিকার হওয়াতে তার শরীরে একাধিক ক্ষত চিহ্ন দেখা গেছে। তার পেটের একটি স্থানে সেলাই করা হয়েছে এবং বর্তমানে পার্ক পশু হাসপাতালে নিবীড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। তবে এখনো পুরোপুরি শংকাম্ক্তু নয়।