লোকমান বিন ইউসুপ,চিটাগাং আলহামদুলিল্লাহ ! আমাদের অনেক ইসলামী দল ও ইসলামী রাজনৈতিক দল রয়েছে। এই দলগুলো না থাকলে আমাকে প্রথমে লিখতে হত ইসলামী রাজনৈতিক দলের রুপরেখা । ইসলামিক রাজনৈতিক দল কেন প্রয়োজন? এই টাইপের লেখা। আমাদের প্রবীন ইসলামী আন্দোলনকারীরা ইসলামী রাজনৈতিক দলকে আজকের এই পযার্য়ে এনেছেন বিধায় আমাদের মত তরুন বিপ্লবীরা “ইসলামী রাজনৈতিক দলের অভ্যন্তরীন বিচার ব্যবস্থা ” নিয়ে লিখতে বসতে পেরেছি। আমাদের প্রবীনদের আমরা শ্রদ্ধা না করে পারি না এই জন্য যে ইসলামী রাজনৈতিক সিস্টেমকে এই পর্যায়ে এনে আমাদেরকে জিম্মাদারী দিয়েছেন্।
ইসলামী রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত ইসলামী চিন্তাবিদদের আমি কয়েকটি কারনে পরিপূর্ন মনে করি না। কেননাঃ
১. সংগঠনের নিম্ন থেকে আমীর পর্যন্ত সবাই ব্যস্ত। ব্যস্ত মানুষের চিন্তা অনেক সময়ই পুরোপুরি পারফেক্ট হয়না।
২. সামনে অনেক জনশক্তি থাকায় আত্বতুষ্টিতে ভোগা।
৩. সাইয়েদ আবুল আলা মওদুদী রঃ এর চিন্তা ধারায় পাগল হওয়া অর্থাৎ র্দশনের দর্শনীয় পাগল হওয়া।
৪. ফরজ ইবাদাতের বেলায় সচেতন হলেও ইসলামের মানবিকতাবোধ এর ব্যাপারে অনেকেই উদাসীন।
৫. একজন কর্মীর সঠিক বিচার না পাওয়াকে গুরুত্বপূর্ন মনে না করা। অথচ মজলুমের কান্না আরশ পর্যন্ত পৌছায়।
৬. শিক্ষা শিবির শিক্ষা বৈঠকের (টিএস ,টিসির ) মেহমানরা টেনিং এর আওতায় না থাকা।
৭. ড্রব্যাকগুলো (খারাপ উপসর্গ )নিয়ে সিরিয়াসলি গবেষনার কোন উদ্যেগ কোন সময়েই না নেয়া।
৮. নেতৃত্বের ডমিনেন্ট ফিগাররা পরামর্শের গুরুত্ব কোন সময়েই না দেয়া। পরামর্শকে কর্মীদের কম বুঝার কারন মনে করা।
৯. ব্যতিক্রম চিন্তা করলেই ডিশিসন মেকারদের রোষানলের শিকার হওয়া । ঠিটকারী ও সম্মানহানী অনন্য উচ্চতায় পৌছা। ষড়যন্ত্র ,বিরোধী এজেন্ট জাতীয় শব্দ ব্যবহার করা।
১০. তৈরীকৃত কর্মীদের উপর কোন সার্ভে না থাকা। মানসিকভাবে একটিভ কাজে নিস্ক্রিয়দের পাত্তা না দেয়া।
১১. নিজেদেরকে অধিক পারফেক্ট মনে করা।
এভাবে আরও অনেক কথায় লেখা যাবে।
কিন্তু উনারা কি কখনো ভেবেছেন যে সংগঠনের সংবিধান তাদেরকে একপ্রকার সেইভ এক্সিট দিয়েছে। এটা একজন নেতার জন্য খুবই ভয়ংকর। নেতা থাকবে রুলসের কঠিন নিয়মে বন্দী। কিন্তু আজ কর্মীরা রুলসের নিয়মে বন্দী নেতারা মুক্ত। ১৯৪১ সালের পর নেতার সাথে কর্মীর মতবিরোধের পর কর্মীরা জয়ী হয়েছে এমন উদাহরন কম। প্রতিবছর নির্বাচন করার দায়িত্ব ও সদস্যপদ ঘাটতি বা বাতিল করার দায়িত্ব যদি নেতার কাছে থাকে তবে একজন কর্মী শরীয়া সম্মত ভাবে নেতার সাথে বিরোধে জড়িয়ে পড়লে বিচার পাওয়ার সম্ভাবনা অত্যন্ত ক্ষীন হয়ে যায় ।
একজন সাধারন কর্মীর বিচার বঞ্চিত হয়ে ছটপট করে ইসলামী রাজনৈতিক নেতাদের বদদোয়া দেয়াটা খুবই ভয়ংকর। এটা খুবই সত্য যে প্রচলিত রাজনৈতিক নেতাদের তুলনায় চরিত্রের দিক দিয়ে ইসলামী রাজনৈতিক নেতারা অনেক ভাল। কিন্তু একজন কর্মীর যৌক্তিক বিচার প্রার্থনা কোনভাবেই উপেক্ষা করা যায় না।
নেতৃত্ব কর্তৃক অপরাধের ধরন:
১.ইসলামী রাজনৈতিক দলের একজন নেতা কর্মীর সাথে ফৌজদারী অপরাধ করা।
২. মতবিরোধের কারনে পদবঞ্চিত করা।
৩. মতবিরোধের কারনে সাসপেন্ড করা।
৪. দলের অভ্যন্তরে অসম্মানজনক পরিবেশ তৈরী করতে পারা। যেমন মানের অবনমন।
৫. টিকসের মাধ্যমে যোগ্যকে বঞ্চিত করে পদদখল করা ।
৬. আপনি একজন চলে গেলে সংগঠনের কি আসে যায় বলে ইসলামী আন্দোলন করতে নিরুৎসাহিত করা।
৭. প্রোগ্রাম থেকে ছুটি না দিয়ে গুরুত্বপূর্ন কাজের ক্ষতি করা।
৮. কারো বিরুদ্ধে কর্মী অভিযোগ করার পর বিচার না করে পাত্তা না দেয়া।
৯. সংগঠন বড় হয়ে গেছে বলে অনেক গুরুত্বপূর্ন অপরাধ এড়িয়ে যাওয়া।
১০.কর্মীদের আন্দোলনকে ষড়যন্ত্র তত্ত্বে ফেলে মুলবিষয়কে আড়ালে ফেলা কখনো মনের অজান্তে।
১১. খারাপ নেতৃত্বে বিপক্ষে কর্মীদের চাওয়া পাওয়াকে “সংগঠনের ক্ষতি বলে চিহ্নিত করা।” । অথচ খারাপ নেতৃত্ব রাখাটাই সংগঠনের মূল ক্ষতি।
১২. উদ্ভাবিত কোন সমস্যাকে দায়সাড়া গোছের ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করা।
আমাদের কর্মীরা আমাদের আমানত । তাই কর্মী, সংগঠন ও নেতাদের বাচাতে ইসলামী রাজনৈতিক দলের অভ্যন্তরীন বিচার ব্যবস্থার কাঠামো শক্তিশালী করা প্রয়োজন যদি আপনি একগুয়েমীর পরিচয়ে দিয়ে না বলেন যে উই আর পারফেক্ট। …
Leave a Reply