মাওলানা মুহাম্মদ আলমগীর = শ্রমিক-কারা ধনী-গরিব,শিক্ষিত-মুর্খ,নারী পুরুষ নিবির্শেষে সকলকেই কাজ করতে হয়। আর যে কোন কাজ করাতে গেলেই শ্রমের দরকার হয়। এ হিসাবে সব মানুষকেই শ্রমিক বলা যায়। সাধারনত ঐ সব মানুষকে শ্রমিক বলা হয়,যারা পন্য বা অর্থের বিনিময় শ্রম বিক্রি করে। সরকারী ও বেসরকারী প্রতিষ্টানের কর্মকতাগন ও বেতনের বিনিময় কাজ করেন। তাদেরকে তো শ্রমিক হিসাবে গন্য করা হয়না তাহলে শ্রমিকের সঠিক সংজ্ঞা কি ? অর্থনীতির পরিভাষায় তাদেরকেই শ্রমিক বলা হয়। যারা সরকারী ও বেসরকারী প্রতিষ্টান ও শিল্প কারখানায় কর্মকর্তাদের অধীনে শ্রমিক কর্মচারী হিসাবে কাজ করে। এ জাতীয় শ্রমিক কর্মচারীদেরকেই ট্রেড ইউনিয়নের অধিকার দেওয়া হয়। তাই বলা যায় যাদের ট্রেড ইউনিয়ন করার অধিকার সরকারী ভাবে স্বীকৃতি তারাই শ্রমিক। শ্রমিকদের নিয়োগের সময় মালিক বা কতৃপক্ষ যে দায়িত্ব বা কাজ করার জন্য নিয়োগ দিবে সেই কাজ যথা নিয়োগ সম্পাদন করাই শ্রমিকের দায়িত্ব। একজন আদর্শবান শ্রমিকের কিছু গুনাবলী উল্লেখ করছি। ১। চুক্তি মত কাজ আদায় করা কেননা আল্লাহ পাক রাব্বুল আল আমিন কিয়ামতের ময়দানে ওয়াদা সর্ম্পকে প্রশ্ন করবেন। তোমরা প্রতিশ্র“তি রক্ষা কর কারন ওয়াদা চুক্তি সর্ম্পকে অবশ্যই জবাব দীহি করতে হবে। (সুরা ইসরা) ২। আমানত দারীতা একজন শ্রমিক মালিকের দেওয়া কাজ শ্রমিকের নিকট আমানত। শ্রমিক সকল শক্তি দ্বারা মালিকের আমানত রক্ষা করবে। আল্লাহর রাসুল বলেন সর্বোত্তম শ্রমিক হচ্ছে সেই ব্যক্তি যে শক্তিশালী আমানত দার। আল্লাহর নবী আরো বলেন যার নিকট আমানত দারী নাই তার ইমান নাই, আর যে ওয়াদা পালন করেনা তার দ্বীন নেই। ৩। অপির্ত দায়িত্ব পালন করা: আল্লাহর নবী বলেন তোমরা প্রত্যেকেই দায়িত্বশীল আর তোমাদের দায়িত্বের ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করা হবে। কাজে কোন রকম ধোকাবাজ বা ফাকি প্রতারনা করা যাবে না। কারন শ্রমিক শ্রম দিচ্ছে হালাল উপার্জনের জন্য ধোকা,প্রতারনা বা ফাকি করলে উর্পাজন হালাল হবে না। ৪। একজন শ্রমিক তার যোগ্যতা সর্ম্পকে মালিককে বলতে হবে। ৫। কাজের সময় সর্ম্পুন হক আদায় করে কাজ করতে হবে। ৬। অধিক উৎপাদনের জন্য সর্বান্তক চেষ্টা করতে হবে। ৭। সুষ্ট ও সুন্দর ভাবে প্রতিটি কাজ সম্পন্ন করা। ৮। তার দায়িত্ব পালনকে আমানত ও ইবাদত হিসাবে গ্রহন করা। ৯। নিয়ম শৃংখলা বিরোধী কাজ না করা। ১০। মালিকের কল্যান কামনা করে প্রতিটি কাজ আন্জাম দেওয়া। ১১। অলসতা,গাফলতি,কাজে ফাকি ও অনুপস্থিত এড়িয়ে চলা। ১২। মালিকের নিদের্শের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করা। ১৩। ছুটির সময় ছুটি ভোগ করা। ১৪। কোম্পানীর দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে নিজের স্বার্থ,মালিকের স্বার্থ,দেশের স্বার্থ ও পরকালের মুক্তির আশা পোষন করা। ১৫। নির্ধারিত ইবাদত তথা নামাজ ও রোজার সময় ব্যতীত মালিকের কাজের সময় কোন অজু হাত না দেখানো। ১৬। আল্লাহর নৈকট্য অর্জনের আশায় কাজ করা যেহতু শ্রম দিয়ে হালাল উর্পাজন করা বড় মাপের ইবাদত সওয়াবের কাজ। ১৭। হোটেল-রেস্তোরাঁ শ্রমিকরা মানবতার সেবা ও হালাল রোজী উর্পাজনের জন্য সওয়াব পাবেন তাই তাদেরকে ইবাদত,সেবা ও হালাল রোজী অর্জন করার মানষিকতার সহ পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন থাকার স্ববান্তক চেষ্টা করতে হবে। ১৮। ভাল আচরনের অধিকারী হতে হবে। আল্লাহ বলছেন তোমরা মানুষের সাথে ভাল ব্যবহার কর। আল্লাহর নবী বলেছেন যে ব্যক্তি মানুষের সাথে হেসে মিষ্টি ভাষায় কথা বলেন এটি তার জন্য একটি সদকাহ। এজন্য প্রত্যেকের উচিত তার ঘরে,অফিসে,সমাজে ও বন্দু মহলে সকলের সাথে ভাল আচরন করবে। সকল শ্রমিকদের উচিত উপরোক্ত গুনাবলী অর্জন করে আদর্শ শ্রমিক হিসাবে সমাজে ভুমিকা রাখা।
লেখক:-
মসজিদের খতিব,সংগঠক ও সভাপতি : বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যান ফেড়ারেশণ,কক্সবাজার জেলা।
Leave a Reply