টেকনাফ নিউজ ডেস্ক ঃঃঃ আজ জাতীয় বিমা দিবস। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান একসময় ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিতে চাকরি করতেন। তার সম্মানে আজ ১ মার্চ জাতীয় বিমা দিবস উদ্যাপন করা হচ্ছে।
জাতীয় বিমা দিবস উপলক্ষ্যে বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের নিজস্ব অর্থায়নে চালু হচ্ছে ‘বঙ্গবন্ধু শিক্ষা বিমা’। এর বাইরে আরও বিভিন্ন কর্মসূচি ও পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
এর মধ্যে রয়েছে ‘বঙ্গবন্ধু কর্নার’ স্থাপন। একশরও কম টাকা দিয়ে এক বছরের জন্য দুই লাখ টাকার চিকিৎসা সুবিধাসহ চালু করা হয়েছে ‘বঙ্গবন্ধু সুরক্ষা বিমা’। বিমা দিবস উপলক্ষ্যে ১৬ লাখ প্রতিবন্ধীর জন্য ‘স্বাস্থ্য বিমা’ করার পরিকল্পনাও চূড়ান্ত হয়েছে। চালু করা হয়েছে ‘বঙ্গবন্ধু স্পোর্টসম্যান ইন্স্যুরেন্স’।
দেশের অর্থনীতিতে বিমা খাতের অবদান মাত্র দশমিক ৫৬ শতাংশ। উন্নত বিশ্বে এ হার ১৮ থেকে ২০ শতাংশ। বিমা খাতের উন্নয়নে এবং এ খাতে শৃঙ্খলা ফেরাতে কাজ করে যাচ্ছে বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ)। বাস্তবায়ন হচ্ছে ব্যাপক সংস্কার কর্মসূচি। ডেনসিটি বাড়াতে পারলে বিমার মাধ্যমে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি আরও গতিশীল হবে।
পাশাপাশি সুনিশ্চিত হবে মানুষের জীবনের নিরাপত্তা। বিপদের সময় বিমাশিল্প জীবন ও সম্পদের ক্ষেত্রে পাশে দাঁড়ায়। সার্বিক দিক বিবেচনা করে প্রথম নন-লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিতে হাত দেওয়া হয়। কারণ, নন-লাইফ ইন্স্যুরেন্সে ৬৫ থেকে ৭০ শতাংশই কমিশনের ক্ষেত্রে ব্যয় হয়। কিন্তু যখন দাবি পরিশোধের কথা আসে, তখনই দেখা দেয় সমস্যা।
কারণ, গ্রাহক তো আগেই ৬৫ থেকে ৭০ শতাংশ কমিশন বাবদ নিয়ে গেছে। কিন্তু গ্রাহক শতভাগ দাবি করতে পারেন। এ দাবি যখন বিমা কোম্পানিতে তারা তুলতে যান, তখন সমস্যা তৈরি হয়। তাই এক্ষেত্রে ব্যাপক সংস্কার করা হচ্ছে। আশা করা যায়, নন-লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিগুলোয় শৃঙ্খলা ফিরবে।
পাশাপাশি দেশের অর্থনীতিতে তারা ব্যাপক ভূমিকা রাখবে। লাইফ ইন্স্যুরেন্স খাতে তামাদি পলিসি একটি বড় সমস্যা। পলিসি যখন তামাদি হয়, তখন গ্রাহক যথাযথ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হলে তার মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। তিনি তখন আশপাশের মানুষের কাছে নেতিবাচক ধারণা ছড়ান। এতে মানুষের মধ্যেও বিমা নিয়ে নেতিবাচক ধারণা তৈরি হয়।
এ পরিপ্রেক্ষিতে তামাদি পলিসিতে কমিশনে আমূল পরিবর্তন আনা হয়েছে। প্রথম বর্ষে যে কমিশন হয়, তা দ্বিতীয় বর্ষের প্রিমিয়াম না এলে পুরো কমিশন মিলবে না। দ্বিতীয় বর্ষে পুরো প্রিমিয়াম আসার পরই কেবল তা পাওয়া যাবে। এতে পলিসিগুলো তামাদি হওয়া থেকেও রক্ষা পাবে। অপরদিকে এজেন্টদের কমিশন কোম্পানিতে থাকায় অন্য কোম্পানিতে তার চলে যাওয়ার প্রবণতাও নিয়ন্ত্রিত হবে।
অনেক সময় দেখা যায়, এক কোম্পানির পলিসি অন্য কোম্পানি নিয়ে যায়। এতে পলিসিহোল্ডার বঞ্চিত হন। এ পরিস্থিতি আর থাকবে না। লাইফ ও নন-লাইফ দু-ক্ষেত্রেই একই সাংগঠনিক রূপ তৈরি করা হয়েছে, যা বিমা অ্যাসোসিয়েশনগুলো দেখছে। তাদের মতামতের পর সেই নীতিমালা চূড়ান্ত করা হবে। ব্যাংকস অ্যাসুরেন্স চালুর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
করপোরেট এজেন্ট রেগুলেশন তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগে পাঠানো হয়েছে। সেখান থেকে নির্দেশনা আসার পর তা চূড়ান্ত করা হবে। এজেন্টদের সার্বিক কার্যক্রম আইডিআরএ থেকে মনিটর করা হবে। আরও বেশকিছু নতুন নতুন প্রডাক্ট আনার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।
ড. এম মোশাররফ হোসেন : চেয়ারম্যান, বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ
Leave a Reply