আহমদ গিয়াস:…মিয়ানমার কারাগারে দীর্ঘদিন ধরে বন্দী রয়েছেন ২৪১ জন বাংলাদেশী। এরমধ্যে টেকনাফের ২৫ জন জেলেকে ফেরত চেয়ে নাসাকার মাধ্যমে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের কাছে চিঠি লিখেছে বিজিবি। তবে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ কেবল ২৫ জনকে ফেরত দিতে রাজি হয়নি। তারা বলেছে, ফেরত নিলে সবাইকে নিতে হবে।
বিজিবি ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বাংলাদেশ-মিয়ানমারের মধ্যে শতাধিক কিলোমিটার জলসীমা রয়েছে। মাঝেমধ্যে ঝড়ের কবলে পড়ে এক দেশের জেলে অন্যদেশে চলে যায়। কিন্তু প্রাকৃতিক দূর্যোগে পড়ে ভিন্ন দেশে আশ্রয় নিতে বাধ্য হওয়া জেলেদের কারাগারে না পাঠিয়ে পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে নিজ নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হয়। এবিষয়ে বিজিবি ও নাসাকার মধ্যে বিভিন্ন সময়ে অনুষ্ঠিত উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে সিদ্ধান্তও হয়েছে। এরই আলোকে সীমান্তে ধরা পড়া প্রতিবেশী দেশের নাগরিকদের নিজদেশে ফেরত পাঠানো হয়। কিন্তু নাগরিকত্বের ব্যাপারে নিশ্চিত না হওয়ায় মিয়ানমার কারাগারে বন্দী ২৪১ জন বাংলাদেশীকে অতিসত্তর ফেরত আনা যাচ্ছে না।
এ ব্যাপারে টেকনাফস্থ ৪২ ব্যাটালিয়ান অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্ণেল জাহিদ হাসান, সম্প্রতি ঝড়ের কবলে পড়ে টেকনাফের ২৫ জেলে মিয়ানমার উপকুলে চলে গেলে নাসাকা তাদের আটক করে। পরে বিজিবির পক্ষ থেকে চিঠি লিখে এসব জেলেকে ফেরত দেওয়ার অনুরোধ জানানো হয়। কিন্তু মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ জানায়, শুধু ২৫ জন নয়, মিয়ানমার কারাগারে বর্তমানে বন্দী রয়েছে ২৪১ জন বাংলাদেশী। আর ফেরত নিলে সবাইকে নিতে হবে। শুধু ২৫ জনকে ফেরত দেওয়া হবে না।
তিনি জানান, বিজিবির কাছে ২৪১ জনের একটি তালিকাও দিয়েছে নাসাকা। নাগরিকত্ব যাচাইয়ের জন্য ওই তালিকা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের যাচাই-বাছাইয়ের পর মিয়ানমারে বন্দী বাংলাদেশীদের ফেরত চাওয়া হবে।
টেকনাফ পৌরসভার চৌধুরীপাড়া এলাকার ধলাবানু জানান, গত ২৭ আগস্ট সকালে তার ছেলে আবদুল্লাহ (২৫)সহ আরো ৩ জন জেলে নৌকা নিয়ে নাফনদীতে মাছ ধরতে যায়। এসময় বাংলাদেশের জলসীমা থেকে তাদের আটক করে নিয়ে যায় নাসাকা সদস্যরা।
তবে টেকনাফ বিজিবির অধিনায়ক অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, নাসাকা কাউকে বাংলাদেশের জলসীমা থেকে ধরে নিয়ে যায় না। সীমান্তে বিজিবির চেয়ে নাসাকার প্রহরাও অনেক শিথীল।
মিয়ানমার কারাগারে বন্দী জেলেদের আত্মীয়স্বজনেরা জানান, তারা প্রতিবেশী দেশে বন্দী আত্মীয়স্বজনদের নিয়ে উদ্বিগ্ন। বন্দীদের মধ্যে অনেকেই রয়েছেন, যারা পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। ফলে এসব পরিবারে চলছে অভাব-অনটন।
বিজিবি সূত্র ধারণা করছে, মিয়ানমার কারাগারে বন্দী ২৪১ জন বাংলাদেশীর মধ্যে অধিকাংশই সাগরপথে মালয়শিয়া পাড়ি দিতে গিয়ে ঝড়ের কবলে পড়ে মিয়ানমার ভূ-খন্ডে চলে যায় এবং নাসাকার হাতে ধরা পড়ে।
Leave a Reply