রমজান উদ্দিন পটল…টেকনাফের হোয়াইক্যং হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ীর দারোগার কক্ষে ইয়াবা তল্লাশীর নামে পর্যটক ও মাদ্রাসা শিক্ষক,ব্যবসায়ী ও সাধারন লোকজনকে ব্যাপক মারধর, ঔষুধ খাইয়ে পায়খানা করানো,মলদ্বারে বেত ঢুকিয়ে তল্লাশী,মোটাংকের বিনিময়ে ছেড়ে দেওয়াসহ নানা অভিযোগে উক্ত ফাঁড়িটি যেন বিশ্বের আলোচিত ,নিন্দিত আবুগারীব কারাগারে পরিণত হতে চলছে। দায়িত্বরত এ এস আই বাশার এসব অভিযোগ অস্বীকার করলেও ভূক্তভোগীরা এসব বাঁচার জন্য মিথ্যাচার বলে জানান।
একাধিক সুত্র অভিযোগ করে জানায়- গত ২সেপ্টেম্বর দুপুরে টেকনাফের শাহপরীরদ্বীপ এলাকার বাসিন্দা মাওলানা হাফেজ মকবুল আহমদ (৩৫) ও তাঁর ছাত্র মো: রশিদুল্লাহ (১৮) একটি মাইক্রো বাসে করে মাদ্রাসায় যাওয়ার পথে হ্নীলা মৌলভী বাজার এলাকায় গাড়ি থামিয়ে তাদের আটক করে ফাঁড়িতে নিয়ে গিয়ে আটকে রেখে নির্যাতন চালায়। ৩সেপ্টেম্বর বিকাল ৩টারদিকে তাদের ছেড়ে দেওয়ার পর হোয়াইক্যং বাজারে গিয়ে নির্যাতিতরা প্রকাশ্যে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি,রাজনৈতিক ব্যক্তিদেরকে শত শত লোকের সামনে অভিযোগ করে বলেন-পুলিশ তাদেরকে আটকের পর বেদম মারধর করে ইয়াবা ট্যাবলেট বের করে দিতে বলে। তারা ইয়াবা কি জানে না বলে জানালে উত্তেজিত হয়ে তাদেরকে টেনে-হিছঁড়ে মাটিতে শুইয়ে মুখে গরম পানি ঢালে । এরপর ইয়াবা না পেয়ে মলদ্বারে লুকিয়ে রেখেছে সন্দেহে নানা জাতের সেবন করায়। এতেই আটক লোকজনের পায়খানা হতে থাকে। ১০/১৫মিনিট পর পর পায়খানা হতে থাকায় তারা ক্রমশ দূর্বল হয়ে পড়ে। এ অবস্থায় তাদের পিঠে কনুই ও পেঠে বার বার নির্মম লাথি মেরে পায়খানা করাতে বাধ্য করে। রাতভর তাদেরকে উলঙ্গ রেখে হাতেও লাঠি দিয়ে নানাভাবে নির্যাতন চালায়। এতে তারা অসুস্থ হয়ে পড়ে । তাদের এ করুণ দৃশ্য দেখে ফাঁড়ির অপরাপর দায়িত্বরত পুলিশ তাদেরকে ছেড়ে দিতে অনুরোধ করলে অবশেষে বিকাল ৩টায় ছেড়ে দেয়। মুক্তির পর তারা স্থানীয় ডাক্তারের কাছে চিকিৎসা করে নিজেদের প্রতিষ্ঠানে চলে যায়। এ ছাড়া গত ৩১ আগষ্ট কক্সবাজারের ঘোনার পাড়া এলাকার ছৈয়দ করিমের পুত্র মো: সেলিম (৩০) টেকনাফে বেড়াতে এসে ফেরার পথে বিকাল ৪টায় মিনিবাস থেকে নামিয়ে হাইওয়ে ফাঁড়ির ইনর্চাজ নিজ কক্ষে আটকে রাখে নির্যাতন চালায়। পরের দিন মোটাংকের বিনিময়ে ছেড়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে । সে সংবাদকর্মীদের কাছে বর্ণনা দিয়ে বলেন- রাতভর তাকে উলঙ্গ রেখে লাঠি দিয়ে পিঠায় এবং জোর পূর্বক পায়খানা করাতে বাধ্য করে। বন্দি থাকা কক্ষে একটি বালটিতে ১০/১২বার পায়খানা করায়। এরপরও তার কাছে কোন ইয়াবা ট্যাবলেট না পেয়ে তাকে ইয়াবা ট্যাবলেট দিয়ে জেলে পাঠানোর হুমকি ও ভয়ভীতি দেখিয়ে মোটাংকের অর্থ দাবী করে। উক্ত যুবক নিরুপায় হয়ে মুঠোফোনে কথা বলে তার আতœীয় স্বজন দিয়ে অর্থ যোগাড় করে হ্নীলার বিশ্বস্থ এক জায়গাতে জমা দিয়ে ছাড়া পায়। এভাবে পর্যটক , শিক্ষক,ব্যবসায়ী ও সাধারন লোকজনকে প্রতিনিয়ত আটক করে ব্যাপক নির্যাতন ও হয়রানি করে আসছে বলে গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। এতে সাধারন জনতার কাছে পুলিশের ভাবমূর্তি চরমভাবে ক্ষুন্ন হচেছ । এ ব্যাপারে একদল সংবাদকর্মী অভিযুক্ত এ এস আই বাশারের কাছে জানতে চাইলে তিনি এ অভিযোগ অস্বীকার করেন।
Leave a Reply