হুমায়ুন রশিদ …টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপ গবাদি পশুর করিডোরে রাজস্ব আদায়ে ধস নেমেছে। সদ্যসমাপ্ত ২০১১-১২ অর্থবছরে ৫৩ লাখ ৭৭ হাজার ২ শত টাকার রাজস্ব আদায় হয়েছে। যা বিগত ২০১০-১১ অর্থ বছরের চেয়ে ১ কোটি ১২ লাখ ৯৫ হাজার ৮ শত টাকা রাজস্ব কম । ওইসময় ১ কোটি ৬৬ লাখ ৭৩ হাজার টাকার রাজস্ব আদায় হয়েছিল। মায়ানমারে টাকার মান বৃদ্ধি, ইয়াবা ট্যাবলেটের আদান-প্রদান, সামপ্রদায়িক দাঙ্গাসহ নানা কারণে গবাদি পশু আমদানিতে ধস নামে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। এ ছাড়া অনেকে আমদানিকৃত গবাদিপশু করিডোরে রোদ বৃষ্টিতে খোলা আকাশের নিচে রাখা, স্থায়ী বা অস্থায়ী শেডের ব্যবস্থা না করা ও স্থায়ী কোন অবকাঠামো নির্মাণ না করাকে দায়ী করছেন এ অবস্থার জন্যে। তবে সরকার এ খাত থেকে প্রতিবছর কোটি টাকার রাজস্ব আদায় করলেও স্থায়ী অবকাঠামো গড়ে তুলতে পারেনি এখনো। এতে করিডোরে গবাদি পশু আসা কমে যাওয়ায় সংশ্লিষ্ট মহলকে ভাবিয়ে তুলেছে।
শুল্ক বিভাগ সূত্রে জানায়, ২০১১-১২ অর্থবছরে অস্থায়ী ক্যাডল করিডোরে মায়ানমার থেকে ৮ হাজার ৬১৫ টি গরু, ১ হাজার ৬২৯টি মহিষ ও ১ হাজার ২৮৩ টি ছাগল আমদানি করে ৫৩ লাখ ৭৭ হাজার ২ শত টাকার রাজস্ব আদায় করে। বিগত ২০১০-১১ অর্থ বছরে ২৬ হাজার ৫০০ গরু, ৬ হাজার ৩০ মহিষ ও ২ হাজার ৯টি ছাগল আমদানি করে ১ কোটি ৬৬ লাখ ৭৩ হাজার টাকার রাজস্ব আদায় হয়। টেকনাফ সীমান্ত দিয়ে মায়ানমার থেকে চোরাই পথে গবাদি পশু আসা রোধে সরকার ২০০৩ সালের ২৫ মে সাবরাং শাহপরীর দ্বীপ এলাকায় ক্যাডল করিডোর চালু করে। এ করিডোরে আমদানিকৃত প্রতি গরু-মহিষ ৫০০ ও ছাগল ২০০ টাকা হারে সরকারকে রাজস্ব প্রদান করা হয়। এ করিডোর থেকে এ পর্যন্ত প্রায় ১১ কোটি টাকার মত রাজস্ব আদায় হয়েছে। সরকার কোটি কোটি টাকার রাজস্ব আদায় করলেও করিডোরটি এখনো পর্যাপ্ত অবকাঠামো ও সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত। করিডোরটি অবকাঠামোসহ স্থায়ী ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। করিডোর ব্যবসায়ী মো. কাসেম জানান, মায়ানমারে টাকার মান বৃদ্ধির ফলে গবাদি পশু দ্বিগুণ মূল্যে কিনতে হচ্ছে ফলে এখন তা পোষানো যাচ্ছে না। সে কারণে পশু আমদানি কমে গেছে। তাছাড়া বর্ষায় সাগর উত্তাল থাকায় এমনিতে করিডোরে গবাদি পশু আমদানি কমে যায়। ঝুঁকি নিয়ে গবাদি পশু আনা হলেও অবকাঠামোর অভাবে রাখার ব্যবস্থা নেই। এ কষ্ট দেখে অনেকেই পশু আমদানি বন্ধ রাখে। তিনি করিডোরের সমস্যাদি চিহ্নিত করে সংশ্লিষ্টদের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান। টেকনাফ কাস্টম সুপার কাজী আবুল হোসাইন জানান, মায়ানমারে টাকার মান বৃদ্ধি হওয়ায় গবাদি পশু আমদানি কম হয়েছে। গবাদি পশু আমদানি বাড়াতে ব্যবসায়ীদের আহবান জানান তিনি।
Leave a Reply