২৪ঘন্টা সেবায় দিনে পান রাতে মাদক পতিতা হাট
জাবেদ আবেদীন শাহীন
২৪ঘন্টায় মানব সেবার নাম করে শহরে গুরুত্বপূর্ণ বেশ কয়েকটি জায়গায় পানের দোকানের অন্তরালে চলছে বিভিন্ন ধরনের মাদক বিক্রি। সেই সাথে চলে জুয়া ও পতিতাদের সেবাদানের আসর। শহরের চিহিৃত চোর, ছিনতাইকারীরা অপরাধ করে এসব জায়গায় নিরাপদে ফিরে এসে নির্ভয়ে আশ্রয় নেয় বলে । এসব পানের দোকানগুলো আইন শৃঙ্খলার তোয়াক্ক না করে সার্বক্ষণ খোলা রাখার ফলে শিকার হচ্ছে বেশ কিছু নিরহ জনগণ ও পর্যটক। অভিযোগ রয়েছে, শহরের আইন শৃঙ্খলার দায়িত্বে থাকা পুলিশের টিএসআই নিয়মিত বখরার সুবিধা নিয়ে এসব পানের দোকান গুলোকে খোলা রাখার সম্মতি দিয়েছে। সচেতন মহল জানান, পুলিশ প্রশাসন শহরের শান্তি শৃঙ্খলা রক্ষার্থে যেখানে সার্বক্ষণ তৎপর, সেখানে এসব পানের দোকানগুলো মাদক বিক্রির বিশেষ সুবিধার জন্য রাত বার টার পর খোলা রাখা কোন যুক্তি নেই। এ ব্যাপারে পুলিশের উর্ধবতন কতৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন । সেই সাথে শহরে বিভিন্ন স্থানে দিবারাত্রি সেবার নামধারী পানের দোকানগুলোতে অভিযান চালিয়ে বন্ধ করে দেওয়া হোক।
কালু নামে এক মাদকসেবী জানান, আমাদের জন্য দিনের শহরের চাইতে রাতের শহরটা বেশী নিরাপদ । সত্য কথা বলতে কি রাতে কোন অপরিচিত লোক এই পানের দোকানে জিনিস কিনতে আসলে সময় সুযোগ নিয়ে তার পিছু নিই, এক পর্যায়ে অস্ত্রেও ভয় দেখিয়ে টাকা পয়সা হাতিয়ে দিই। পরে লালদিঘীর পাড়স্থ পানের দোকান ও আশপাশেরে থেকে মাদক কিনে রাতের আসরে বসে যায়। টহল পুলিশ দেখলেও আমাদের কিছুই করে না।
পতিতা লাভলী জানান, এসব পানের দোকানে দালালদের তৎপরতা বেশী। এই দোকানগুলোই আমাদের ঠিকানা। তবে এখানে মাসক সেবীদের খপ্পরে পড়ে খদ্দেরসহ অনেক লোক প্রতিদিনই সর্বস্ব হারাচ্ছে। মাঝে মধ্যে সন্ত্রাসীদেরও উৎপাত চলে। হলিডে মোড় থেকে বাজারঘাটা পর্যন্ত তিন স্পটে চলে মাদক বিক্রির হাট। টাকা দিলে সব মাদক সহজেই মিলে যায়। প্রতিদিনই পুলিশের লোক এসব জায়গা থেকে টাকা নিয়ে যায়। রাতে টহল পুলিশ এসব চিত্র দেখতে অভ্যস্ত। বিভিন্ন ব্যক্তির চাদাঁবাজির কারণে আমাদের ব্যবসা মন্দা চলছে।
জানা যায়, শহরের প্রধান সড়কে এক শ্রেনীর পানের দোকানদার নির্দিষ্ট ব্যবসার অন্তরালে নির্ভয়ে মাদক ব্যবসা চালাচ্ছে। চব্বিশ ঘন্টা খোলা রেখে বিভিন্ন ধরনের সেবা দিচ্ছে। বিশেষ করে সন্ধ্যার পর থেকে এসব পানের দোকানের অন্তরালে চলে মাদক ,জুয়া, আসরসহ পতিতাদের হাট। শহরের হলিডে মোড়, ঝাউতলা হোটেলের সামনে, লালদিঘীর মোড়, আল মুবিন হোটেলের লাগোয়া, বাজারঘাটায় পানের দোকান গুলোতে চলছে মাদক কেনাবেচা স্পট। রাত বাড়ার সাথেই সাথেই ছিটকা চ্রো, ছিনতাইকারী, দেহপসারীনিদের দালাল, টাউটদের আনাগোনা বাড়তে থাকে। ইতি পূর্বে শহরের আইন শৃঙ্খলার রক্ষার্থে রাত বারটার পর সব ধরনের দোকানপাঠ বন্ধ থাকতো। অথচ বর্তমানে শহরে অনেক নিয়মই অনিয়ম হয়ে গেছে। রাতের শহরের দায়িত্বে থাকা পুলিশের টিএসআইয়ের চোখের সামনে দিব্যি ব্যবসা করছে । অনেক পথচারী জানান, টিএসআইকে গোলদিঘিপাড়, রাখাইনপাড়া,ও জমজম মার্কেটে নিজের সুবিধার জন্য ঘোরাফিরা বেশী করে। এদিকে প্রায় সময় ঝাউতলা বোডিংয়ের সামনে পানের দোকানে জুয়ার আসর চলে বলে অভিযোগ রয়েছে। গত এক সপ্তাহে শহরের প্রধান সড়কে বেশ কযেকজন পর্যটক ছিনতাইকারীদের হাতে হামলার শিকার হয়েছে। পাশাপাশি শহরের বিভিন্ন এলাকায় অপরাধের কাজ শেষ করে নিরাপদ হিসাবে বির্তকিত এসব পানের দোকানে এসে জড়ো হয়ে থাকে। পরে সুযোগ বুঝে চলে যায় নিজেদের এলাকায়। লালদিঘী পাড় এলাকায় গত বুধবার রাত দশটায় গ্রাম থকে আসা আজাদ নামে এক যুবকের কাছ থেকে আসল সোনার চেইন নাম দিয়ে প্রতারনা করে দুই হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। এসব প্রতারক চক্র সব সময় পানের দোকানেই আড্ডা দিতে দেখা যায়।
ব্যবসায়ী মোসলেম জানান , রাতে পান বিক্রির নাম দিয়ে যে মাদক ব্যবসা চলছে তা বন্ধ হওয়া প্রয়োজন। এক্ষেত্রে পুলিশকেই ভূমিকা রাখতে হবে। তা ছাড়া যান মালেরও নিরাপক্তা রয়েছে।চিহিৃত এসব পানের দোকানগুলো বন্ধ করে দিলে অপরাধের সংখ্যাও কমে যাবে।
Leave a Reply