রোহিঙ্গা আগমন ঠেকাতে দেশের মিয়ানমার সীমান্তবর্তী এলাকাগুলোতে কোস্টগার্ডের সংখ্যা বাড়ানো হচ্ছে। কোন মতেই তাদের এদেশে আশ্রয় দেয়ার চিন্তাভাবনা নেই। সরকারের উচ্চ পর্যায় সূত্রে জানা গেছে, দেশের তিন জেলা প্রশাসক (ডিসি) কোস্টগার্ড বাড়ানোর দাবি করেছেন। এর ভিত্তিতে সহসাই কোস্টগার্ড বাড়ানো হচ্ছে। ওদিকে গতকাল সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে বিমান চলাচল চুক্তি স্বাক্ষরের প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়েছে। চুক্তি অনুযায়ী দুই দেশের মধ্যে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স লিমিটেড, ইউনাইটেড এয়ারলাইন্সের বিমানগুলো এবং মিয়ানমার এয়ারওয়েজ, এয়ার বাগান কোম্পানি লিমিটেডের বিমানগুলো চলাচল করবে। খাদ্য ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক জানিয়েছেন, প্রতিবেশীদের সামপ্রদায়িক দাঙ্গার দিকে সরকার তীক্ষ্ণ নজর রাখছে। রোহিঙ্গাদের বিষয়টি মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে দেখা হচ্ছে। তাদের বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে নেয়া হচ্ছে। তিনি জানান, এখনও কক্সবাজারের ২৫ হাজার রোহিঙ্গা শরণার্থী বসবাস করছে। তাদের বিষয়টি এখনও অমীমাংসিত রয়ে গেছে। এক হিসেবে দেখা গেছে, দেশের কক্সবাজার এলাকায় তিন থেকে চার লাখ রোহিঙ্গা বসবাস করছে। তারা ওই স্থানে বিয়ে-শাদি করে নানা সামাজিক অস্থিরতা সৃষ্টি করে চলেছে। খাদ্যমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ একটি গরিব দেশ। এদেশের সবচেয়ে বড় সমস্যা ভূমি ও জনসংখ্যা। স্বল্প আয় হলেও এদেশ অনেক জনবহুল। এর আগে এদেশে আগমন করা রোহিঙ্গাদের প্রতি সব সময় আমরা সদয় আচরণ করেছি। তাদের প্রতি কোন ধরনের অন্যায় আচরণ বা হয়রানি করা হয়নি। তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থা শরণার্থী নেয়ার বিষয়ে চিঠি দিয়ে যাচ্ছে। এছাড়া, যারা বসবাস করছেন তাদের রেজিস্টার্ড করার জন্যও ওই সব সংস্থা চাপ দিচ্ছে। আমরা মনে করি শরণার্থীদের রেজিস্টার্ড করা হলে তারা কোন দিনই বাংলাদেশ থেকে যাবে না। এমনিতেই রোহিঙ্গারা বাংলাদেশী পাসপোর্ট ব্যবহার করে সৌদি আরব, মালয়েশিয়াসহ বিভিন্ন দেশে গিয়ে অপ্রীতিকর ঘটনার জন্ম দিচ্ছে। আরও শরণার্থী জায়গা দিয়ে সঙ্কট বাড়বে, বৈ কমবে না। খাদ্যমন্ত্রী বলেন, কেউ কেউ বলেন স্বাধীনতা যুদ্ধের সময়ও আমরা শরণার্থী ছিলাম। আসলে মিয়ানমারের রোহিঙ্গাদের শরণার্থী হওয়া এবং বাংলাদেশের নাগরিকদের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় শরণার্থী হওয়া কোন ক্রমেই এক নয়। তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক সংস্থার উচিত হবে মিয়ানমার সরকারকে চাপ দেয়া যাতে তারা আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি করার জন্য পদক্ষেপ নেয়। রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আশ্রয় দেয়া সম্পর্কে বিরোধী দলের দাবি প্রসঙ্গে খাদ্যমন্ত্রী বলেন, জাতীয় স্বার্থকে জলাঞ্জলি দিয়ে কাউকে খুশি করার জন্য বিরোধী দলের কথা বলার কোন মানে হয় না। কিছু কিছু রাজনীতিবিদও হয়তো তাদের জন্য কাজ করছে। আমি তাদের দেশপ্রেম নিয়ে প্রশ্ন তুলছি।
Leave a Reply