মুহাম্মদ আবু বকর ছিদ্দিক রামু…কক্সবাজারের রাম্ ুউপজেলার বৌদ্ধ বিহার ও বসতবাড়িতে হামলা ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনার পর বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। ক্ষতিগ্রস্থ এলাকায় সেনা বাহিনী, র্যাব, বিজিবি ও অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। এছাড়া রামুতে ১৪৪ ধারা প্রত্যাহার করা হলেও এই ঘটনায় এপর্যন্ত ৬টি মামলা হয়েছে। জানায়ায়, এসব মামলায় অন্তত ২৫০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। ইতোমধ্যে ঘটনার সাথে জড়িত সন্দেহে ৬০ জনকে আটক করে জেলা কারাগারে পাঠিয়ে দিয়েছে রামু থানার পুলিশ।
এদিকে ঘটনার সুষ্ঠ তদন্ত দাবী করে রামু সীমা বৌদ্ধ বিহারের আবাসিক ভান্তে প্রজ্ঞানন্দ ভিক্ষু বলেন, ঘটনাটি শুধুমাত্র ধর্মীয় অনুভুতি থেকে হয়েছে। নিশ্চিত করে বলা যাবেনা যে, কোন দলের কারা বিশেষভাবে জড়িত রয়েছে। যদি এটিকে রাজনীতিতে নিয়ে যাওয়া হয়-তাহলে তদন্ত বাধাগ্রস্থ হতে পারে।
বৌদ্ধ সম্প্রদায়রা জানান আমরা হিন্দু, মুসলিম ও অন্যান্য সম্প্রদায় একসঙ্গে বাস করতে চায়। আমরা এটা নিয়ে কোন রাজনীতি চাইনা। ঘটনার সাথে যারাই জড়িত থাকুক তাদের আইনের আওতায় এনে যথাযথ শাস্তির ব্যবস্থা করা হোক।
রামু বুড্ডিশ ফেডারেশন সভাপতি কিশোর বড়–য়া বলেন, ধর্মীয় উন্মাদনা সৃষ্টি করে দেশকে অস্থিতিশীল করার জন্য এঘটনাটি ঘটানো হয়েছে। আমরা এ ব্যাপারে কোন মামলা করিনি। তবে জেলা প্রশাসক বরাবরে স্মারকলিপি প্রদান করেছি। সেখানে আমরা রাজনৈতিকভাবে কাউকে জড়িত করিনি।
তিনি আরো বলেন, আমরা দেখেছি বাংলাদেশ স্বাধীনের পর থেকে যত বড়ই ঘটনা ঘটেছে। সবকিছুতেই রাজনীতি জড়িয়ে একদল আরেক দলকে দোষী করে প্রকৃত ঘটনাই আড়াল করে ফেলা হয়েছে। যার কোন সুরাহা এখনো হয়নি। তাই নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত দোষীদের কঠোর শাস্তি দেয়া হোক।
এদিকে রামু থানার ওসি একে নজিবুল ইসলামকে দায়িত্বে অবহেলা ও গাফেলতির দায়ে মঙ্গলবার সকালে প্রত্যাহার করে নেয়া হয়েছে। এর আগের দিন সোমবার বিকেলে সীমা বৌদ্ধ বিহার এলাকায় গেলে ওসিকে ধাওয়া করে স্থানীয়রা।
দুপুরে রামুর ঘটনাস্থল পরিদর্শনে আসেন বান্দরবানস্থ “দি ওয়ার্ল্ড বৌদ্ধ সাসানা সেভাকা সংঘ”র প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান ভিক্ষু ভান্ত পান্নাইজোতা থেরো, বিকেল ৩টার দিকে আসেন বান্দরবান জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কেশৈলা। এর আগে দুপুরে বাংলাদেশ বৌদ্ধ সমিতির চেয়ারম্যান অজিত রঞ্জন বড়–য়া, মহাসচিব লায়ন আদর্শ কুমার বড়–য়া, বৌদ্ধ নেতা এডভোকেট জয়শান্ত বড়–য়া, প্রফেসর বিকিরণ প্রসাদ বড়–য়া ও চেতনা মানবিক উন্নয়ন সংস্থার জয়সেন বড়–য়াসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
এদিকে ক্ষতিগ্রস্থ ১৮ পরিবারের মাঝে সরকারীভাবে অর্ধটন করে চাল বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়া এর আগে আরো ২৫ পরিবারের মাঝে কক্সবাজার জেলা পরিষদের পক্ষ থেকে ২ হাজার করে নগদ টাকা প্রদান করা হয়। এছাড়া যারা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন তাদেরকে ‘তাবু’ সরবরাহ করা হয়েছে। বিতরণ করা হয়েছে শুকনো খাবারও।
অপরদিকে টেকনাফে দায়ের করা মামলায় জেলা জামায়াত নেতা ও স্থানীয় হোয়াইক্যং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নূর আহমদ আনোয়ারীকে প্রধান আসামী করা হয়েছে।
উখিয়া থানায় দায়ের করা মামলায় উপজেলা বিএনপির সেক্রেটারী সরওয়ার জাহান চৌধুরীকে প্রধান আসামী করে বিএনপির স্থানীয় নেতাকর্মীদের আসামী করা হয়েছে।
রামু থানায় দায়ের করা মামলাতেও স্থানীয় বিএনপি ও জামায়াতের নেতাকর্মীদের আসামী করা হয়েছে। তবে সবগুলো মামলার বিষয়ে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে সাংবাদিক মহলে নানা প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে। এব্যাপারে জেলা পুলিশ সুপার সেলিম মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর জানান, পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। প্রশাসন কঠোর নিরাপত্তা বলয় জোরদার করেছে।
এদিকে অভিযোগ উঠেছে, অপ্রীতিকর ওই ঘটনাটি কেন্দ্র নিরীহ মানুষকে হয়রানি করা হচ্ছে। বিভিন্ন স্থানে বিরোধীদলের কর্মী ও সাধারণ লোক আটক করা হয়েছে। রামু উপজেলার সহকারী ভূমি কমিশনার নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট মো: আবুল কালাম জনান, ১৪৪ ধারা জারি তুলে নেওয়া হয়েছে। রামুথানার ভারপ্রাপ্ত ওসি মফিজ উদ্দিন জানান, রামু থানার অভিজানে ৬০ আসামি আটক করে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে। মামলা হয়েছে ৬টি ১টি হয়েছে পবিত্র কোরআন শরিফ অবমানার যে ছবি রামুর উত্তম কুমার বড়–য়া ট্যাগ করেছে তার বিরুদ্ধে ১টি মামলা অপর মামলা হয়েছে ৫টি মামলা নং- ১,৩৯,৪০,৪১,৪২ ও ৪৩।
প্রেরক,
তারিখ-২/১০/১২ইং
মুহাম্মদ আবু বকর ছিদ্দিক রামু,(কক্সবাজার) প্রতিনিধি
মোবাইল- ০১৮১৭৭৫৭০৭৯
Leave a Reply