রাজধানীর দোকানপাট ও কাঁচা বাজারগুলোতে সরকার নির্ধারিত মূল্য তালিকা টানানো থাকলেও তা মানছেন না ব্যবসায়ীরা। এ বিষয়ে বাজার কমিটিরও নেই কোনো মাথা ব্যথা। ফলে বিপাকে পড়ছেন সাধারণ ক্রেতা।
সোমবার রাজধানীর মোহম্মদপুর টাউন হল বাজারে সরেজমিনে দেখা যায়, রতন নামে এক সবজি বিক্রেতা কাঁচা মরিচ বিক্রি করছেন ৮০ থেকে ১০০ টাকা কেজি দরে। অথচ তার দোকানে টানানো সরকারি মূল্য তালিকায় কাঁচা মরিচের খুচরা মূল্য নির্ধারিত রয়েছে ৪৫ টাকা। শুধু কাঁচা মরিচই নয়- অন্যান্য সবজিরও মূল্য একই অবস্থা। বাড়তি দাম নেওয়ার বিষয়ে রতন বলেন, ‘তালিকা-ফালিকা বুঝি না। এই দাম হইলে বেচুম, নয়তো না।’
মূল্য তালিকার বাইরে এ দাম নেওয়ার বিষয়ে ক্রেতারা দায়ী করেন বাজার কমিটিকে। রায়হান চৌধুরী নামে এক ক্রেতা বলেন, বাজার কমিটি লোক দেখানোর জন্য এই মূল্য তালিকা ঝুলিয়েছে। এর না আছে কোনো মনিটরিং ব্যবস্থা, না আছে কোনো শৃঙ্খলা।
মোহাম্মদপুর টাউন হল বাজার ও মহাখালী কাঁচা বাজারে গিয়ে দেখা যায়, সরকারি খুচরা মূল্য তালিকায় মিনিকেট চাল প্রতিকেজি ৪২ টাকা লেখা থাকলেও ৪৬ টাকা থেকে ৪৮ টাকা আদায় করা হচ্ছে ক্রেতাদের কাছ থেকে।
অন্যদিকে পেঁয়াজ ও রসুনের খুচরা মূল্য প্রতি কেজি যথাক্রমে ৪২ টাকা ও ৭০ টাকা রাখার কথা থাকলে বিক্রেতারা তা বিক্রি করছেন ৫০ টাকা ও ৮০ টাকা দরে।
পাশাপাশি সয়াবিনের দাম নির্ধারিত তালিকা থেকে বাড়তি রাখা হচ্ছে ২০ থেকে ৩০ টাকা পর্যন্ত। নির্ধারিত মূল্যতালিকা অনুযায়ী সয়াবিন তেল ১২০ টাকা লিটার হওয়ার কথা থাকলেও তা বিক্রি হচ্ছে ১৩০ টাকা থেকে ১৪০ টাকা দরে। নিত্য প্রয়োজনীয় সব জিনিসের ক্ষেত্রেই সরকার নির্ধারিত মূল্য তালিকার চেয়ে বাড়তি দাম রাখছেন ব্যবসায়ীরা। যথাযথ মনিটরিং না থাকায় ব্যবসায়ীদের এ ধরনের ঔদ্ধত্য বাড়ছে বলে ক্রেতাদের যে অভিযোগ সে সম্পর্কে বাজার কমিটির সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে সোমবার দুপুর ১২টায়ও কমিটির রুমে তালা ঝুলতে দেখা যায়।
এ বিষয়ে ক্রেতা সাবেরা আহমেদ বলেন, কর্তৃপক্ষ বরাবরই বলেন যে অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কিন্তু বাজার কমিটির অফিসই যদি বন্ধ থাকে তাহলে ক্রেতারা অভিযোগ করবেন কোথায়। আর সমস্যা সমাধানই বা হবে কী করে। মোহাম্মদপুর টাউন হল বাজারের সভাপতি লুৎফর রহমান বাবুলের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তা সম্ভব হয়নি। পরে কথা হয় বাজার কমিটির সদস্য মোহাম্মদ বাবুলের সঙ্গে।
বাড়তি দামের বিষয়ে ক্রেতাদের অভিযোগের কথা জানালে তিনি বাংলানিউজকে বলেন, আমরা ক্রেতাদের যতোই সেবা দেই না কেন তারা বারবারই বলবেন, দাম বেশি রাখা হচ্ছে।
আমাদের মনিটরিংয়ে যিনি নিয়োজিত আছেন তিনি বর্তমানে ছুটিতে থাকায় কেউ কেউ বেশি দাম আদায় করতে পারে। বিষয়টি আমরা দেখব। আর সব জিনিসের দাম যদি বাড়ে তাহলে তো আমাদের কিছু করার থাকে না।
সোমবার দুপুর ১২টায় বাজার কমিটির অফিস বন্ধ থাকার বিষয়ে তিনি বলেন, ঈদের ছুটিতে অনেকেই গ্রামের বাড়ি গিয়েছেন। তাই হয়তো বন্ধ আছে।