ফরিদুল মোস্তফা খান, কক্সবাজার থেকে : প্রবল বর্ষায় উত্তাল সমুদ্র পাড়ি দিয়ে ট্রলার যোগে অবৈধ পথে স্বপ্নের মালয়েশিয়া যাত্রাকালে সাগরে দুর্ঘটনায় সলিল সমাধির আশঙ্কা করেছে ওই হতভাগা পরিবারের সদস্যরা। কক্সবাজারের টেকনাফ উখিয়াসহ বিভিন্ন এলাকার শতাধিক লোক ৮ জানুয়ারী সাগরপথে যাত্রা করে। গত ২০ দিন ধরে নিখোঁজ ১২০ জন যাত্রীর কোনো হদিস না পাওয়ায় এলাকায় স্বজনদের মধ্যে দেখা দিয়েছে শোকের মাতম। কান্নার রোল বইছে হতভাগ্যদের ঘরে ঘরে।জানা যায়, বর্ষায় প্রতিকূল অবস্থাতেও টেকনাফে আদম পাচারকারী চক্র সমুদ্র পথে বিভিন্ন দরিদ্র লোকজনকে মালয়েশিয়া নিয়ে যাওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে অর্থ আদায় করছে। বাণিজ্য জাহাজে করে নিরাপদে মালয়েশিয়া পৌঁছানোর কথা বলে প্রায় দেড় শতাধিক লোকজনের কাছ থেকে জনপ্রতি ৭০/৮০ হাজার টাকা করে আদায় করে গত ৮ জুন টেকনাফের সাবরাং উপকুলীয় এলাকা দিয়ে একটি ট্রলারে করে ১২০ জন যাত্রী ভর্তি করে। ওই দিনই উত্তাল সাগর পথে মালয়েশিয়ার উদ্দেশে রওনা দেয় তারা। ট্রলারটি থাইল্যান্ড উপকূলীয় সমুদ্র এলাকায় দুর্ঘটনার কবলে পড়ে মালয়েশিয়াগামী যাত্রীদের সলিল সমাধি হয়েছে এমন আশঙ্কা করছেন স্বজনদের অনেকে। ওই ট্রলারে টেকনাফ হোয়াইক্যংয়ের কুতুবদিয়া পাড়া এলাকার বাসিন্দা আব্দুর রহিমের পুত্র আবছার, ধলা মিয়ার পুত্র সরওয়ার, আব্দু শুক্কুরের পুত্র হারুন, সফু মিয়ার পুত্র আজিজুল হক, আবু তালেকের পুত্র মোঃ রফিক, কবির আহমদের পুত্র আনিসুর রহমান, নুরুল আলমের পুত্র সোনা মিয়া, নুর আহমদের পুত্র জসিম, উনচি প্রাং এলাকার অমির হামজার পুত্র আব্দু করিম, আব্দুর রহমানের পুত্র শাহ আলম, রইক্ষং এলাকার কালু মিয়ার পুত্র আবু ছিদ্দিক, উখিয়ার পালংখালী এলাকার মোহাম্মদের পুত্র নুরুল কবির, লেদা রোহিঙ্গা বস্তি এলাকার রহমত উলাহ, নজির আহমদসহ বিভিন্ন স্থানীয় লোকজন রয়েছে। সরেজমিনে গিয়ে এসব লোকজনের অভিভাবকদের সাথে আলাপকালে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন অনেকে। এসব লোকজনের হদিস না থাকায় হতভাগ্যদের বাড়ীতে মা-বাবা, ভাই-বোনসহ স্বজনদের মধ্যে দেখা দিয়েছে কান্নার বিলাপ। উল্লেখ্য শাহপরীর দ্বীপ সাবরাং এলাকায় দালাল চক্র নানান প্রলোভন দেখিয়ে হাতিয়ে নিচ্ছে দরিদ্র লোকজনের লাখ লাখ টাকা। সাগড়ে ঝড়ো হাওয়া, উত্তাল ঢেউয়ে প্রতিকুল পরিবেশ হওয়া সত্ত্বেও দালাল চক্র প্রতারণা করে অর্থ আদায় করে এসব লোকজনদের ঠেলে দেয় মৃত্যুর মুখে।
Leave a Reply