রিয়াল মাদ্রিদ ২ : বার্সেলোনা ১
শুধু প্রথম জয়ই নয় নিজেদের মাঠে বার্সেলোনাকে ২-১ গোলে হারিয়ে মৌসুমের প্রথম শিরোপাটি ঘরে তুললো রিয়াল মাদ্রিদ। এ জয়ের মধ্য দিয়ে এল ক্ল্যাসিকোয় বার্সেলোনার বিরুদ্ধে ৮৮-৮৭ ব্যবধানে এগিয়ে গেল রিয়াল মাদ্রিদ।
বার্নাব্যুতে বুধবার রাতে দুই চির প্রতিদ্বন্দ্বীর এই ফিরতি ‘এল ক্ল্যাসিকোয়’ জয়ের সুবাদে নবমবারের মতো স্প্যানিশ সুপার কাপ জিতল লা লিগার বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা। কোচ হোসে মরিনহোর অধীনে এটি তাদের তৃতীয় শিরোপা। গঞ্জালো হিগুয়েন ও ক্রিস্টিয়ানো রোনাল্ডো গোল দুটি করলে দুই লেগ মিলিয়ে উভয় দলের ব্যবধান দাঁড়ায় ৪-৪। কিন্তু বিপক্ষের মাঠে বেশি গোলের হিসেবে তিন বছর পর সুপার কাপের শিরোপা তুলে নেয় মাদ্রিদের দলটি। ২০০৮ সালের পর এই প্রথম চির প্রতিদ্বন্দ্বীদের নিজের মাঠে হারাতে পারল রিয়াল।
এদিনের সবক’টি গোলই আসে প্রথমার্ধে। আবার এই অর্ধের ২৮ মিনিটে পর থেকে বার্সাকে দশজন নিয়ে খেলতে হয়। জয় না পেলেও লিওনেল মেসির ফ্রিকিক থেকে বাঁকানো শটে মাদ্রিদের জালে বল জড়ানো ছিল তাক লাগানো। রোনাল্ডো এ নিয়ে টানা পাঁচটি ক্ল্যাসিকোতেই গোল করলেন।
মেসি অবশ্য তার চাইতে এল ক্ল্যাসিকোয় গোলের হিসেবে অনেক এগিয়ে। তার গোল ১৫টি। রিয়ালের রাউল গনজালেসেরও আছে সমসংখ্যক গোল। আর এক্ষেত্রে এখনো শীর্ষে আছেন রিয়ালের কিংবদন্তি আর্জেন্টাইন স্ট্রাইকার ডি স্টেফানো।
রিয়াল মাদ্রিদের জন্য এবার মৌসুমের শুরুটা কোনভাবেই ভালো যাচ্ছিল না। লা লিগায় দুই ম্যাচ খেলে ভ্যালেন্সিয়ার সাথে ড্রয়ে বাধ্য হওয়ার পর হেরে যায় গেটাফের কাছে। সুপার কোপার প্রথম লেগে ন্যু ক্যাম্পে স্বাগতিক বার্সার কাছে ৩-২ গোলে হারতে হয়েছিল। সব মিলিয়ে রিয়াল মাদ্রিদের জন্য এটি ছিল নিজেদের খুঁজে পাওয়ার পালা। তাছাড়া বিপক্ষ কোচ ভিলানোভা টিটোকে একটা জবাব দেয়ার ব্যাপারও ছিল মরিনহোর। শেষ পর্যন্ত নিজেদের সেরাটাই দেখালো মরিনহোর শিষ্যরা।
বার্সেলোনার মাঠে আগের খেলাটিতে মেসিরা বিপুল বিক্রম দেখালেও এ রাতের চিত্র ছিল ভিন্ন। ন্যু ক্যাম্পে বার্সা প্রহরীর ভুলে মরিনহোর দল গুরুত্বপূর্ণ দ্বিতীয় গোলটি করে আগেই সুবিধাজনক অবস্থা তৈরি করে রেখেছিল। এরপর বার্নাব্যুতে ১৯ মিনিটের মধ্যেই দুই গোল করে এগিয়ে যায় রোনাল্ডো বাহিনী। আড্রিয়ানোর লাল কার্ড পাওয়া অতিথিদের আরো বিপদে ফেলে দেয়। রোনাল্ডোকে মারাত্মক ফাউলের কারণে মাঠছাড়া হতে হয় ব্রাজিলীয় ডিফেন্ডারটিকে। এরপরও মেসি বিরতির বাঁশির আগ মুহূর্তে ফ্রি কিক থেকে গোল করে লড়াইয়ের আভাস দিয়েছিলেন। কিন্তু স্বাগতিকরা তা হতে দেয়নি।
আর্জেন্টাইন হিগুয়েন ১১ মিনিটেই দলকে এগিয়ে দেন। খেলার শুরুতেই একবার হিগুয়াইনকে ঠেকিয়ে রাখলেও দ্বিতীয় দফায় আর পেরে উঠেননি বার্সা গোলরক্ষক ভিক্টর ভালদেজ। আট মিনিট পর বার্সা ডিফেন্ডার জেরার্ড পিকের মাথার উপর দিয়ে বল পাঠিয়ে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন পর্তুগিজ তারকা রোনাল্ডো। দ্বিতীয়ার্ধে প্রাধান্য বিস্তারী খেলায় আরো সুযোগ পেলেও মাদ্রিদ ব্যবধান বাড়াতে পারেনি। স্যামি খেদিরা বার্সা প্রহরীকে একা পেয়েও সহজ সুযোগ হাতছাড়া করেন। আর ৭৯ মিনিটে হিগুয়াইনকে হতাশ করেন স্বদেশী ম্যাসেরানো।
বার্সেলোনা বিরতির পর সুযোগ পেয়েছিল সমতা ফেরানোর। কিন্তু ৫৯ মিনিটে হ্যাভিয়ার ম্যাসেরানোর বাড়ানো বল আয়ত্তে নিয়ে পেড্রো চেষ্টা চালালেও ইকার ক্যাসিয়াসকে ফাঁকি দিতে পারেননি। মার্টিন মুনটোয়া এবং মেসির দুটি সুযোগও বিফলে যায় এই অর্ধে।
ব্যবধান বাড়ানোর অন্তত দুটি সহজ সুযোগ পেলেও সেগুলো কাজে লাগাতে ব্যর্থ হয়েছে নয় বারের চ্যাম্পিয়ন দলটি।
এই খেলার মধ্য দিয়ে মাদ্রিদ তাদের ক্রোয়েশীয় লুকা মডরিচকে এবং বার্সেলোনা ক্যামেরুনের অ্যালেক্স সংকে অভিষেক করায়। উভয়েই মাঠে নামেন দ্বিতীয়ার্ধের খেলায়।
Leave a Reply