পাকিস্তান এবং বাংলাদেশ তাদের ইন্টারনেট ব্যবস্থা থেকে ভিডিও শেয়ারিং সাইট ইউটিউব বন্ধ করে দিয়েছে।মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে তৈরি একটি অপেশাদার চলচ্চিত্রে ইসলাম ধর্মের নবী মোহাম্মদকে অবমাননা করা হয়েছে এমন অভিযোগ এনে পাকিস্তানের পক্ষ থেকে ওই ভিডিও চিত্র সরিয়ে ফেলার অনুরোধ জানানো হয় ইউটিউব কর্তৃপক্ষের কাছে।
youtubeবাংলাদেশে সোমবার রাত ১০টার পর থেকে ইউটিউব বন্ধ রাখা হয়।
সর্বশেষ জানা যাচ্ছে, সেটি প্রত্যাখ্যান করায় পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী রাজা পারভেজ আশরাফ ইউটিউব ওয়েবসাইট বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছেন।
এর আগে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেও গুগলকে ওই ভিডিও সরিয়ে ফেলার অনুরোধ জানায়, গুগল সেটিও প্রত্যাখ্যান করে।
এখন পর্যন্ত গুগল কর্তৃপক্ষ ইন্দোনেশিয়া, ভারত, মিশর ও লিবিয়ায় ঐ ভিডিও-চিত্রটির প্রচার বন্ধ রেখেছে।
তারা জানিয়েছে, ওই সব দেশের স্থানীয় আইন অনুযায়ী এ ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
বাংলাদেশেও বন্ধ ইউটিউব:
বাংলাদেশের টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ বা বিটিআরসি সোমবার রাত সাড়ে দশটার দিকে বাংলাদেশে ইউটিউবের ওয়েবসাইট বন্ধ করে দেয় বলে সংস্থাটির কর্মকর্তারা বিবিসিকে নিশ্চিত করেছেন।
তবে এ বিষয়ে বাংলাদেশ সরকার কিংবা বিটিআরসির তরফ থেকে কোন বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়নি।
বিটিআরসির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ইউটিউব এর ওয়েবসাইট বন্ধ করতে সরকারের নির্দেশ আসার পর পরই তারা ইউটিউবের ওয়েবসাইট বন্ধের ব্যবস্থা নিয়েছেন।
এর আগে গত ১৬ ই সেপ্টেম্বর বাংলাদেশের টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন ইসলাম ধর্মের নবী মোহাম্মদকে অবমাননা করে তৈরি করা চলচ্চিত্রের অংশবিশেষ, যেটি ইউটিউব ওয়েবসাইটে ছিল, তা সরিয়ে ফেলার জন্য ওয়েবসাইটটির মালিক পক্ষ গুগলকে ইমেইল, ফ্যাক্স সহ বিভিন্নভাবে অনুরোধ জানিয়ে চিঠি দেয়।
বিটিআরসির কর্মকর্তারা জানান , ১৭ই সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তারা গুগল কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে ওই চিঠির কোন জবাব পাননি।
নবী মুহাম্মদকে অবমাননা করে তৈরি যে ভিডিও ইন্টারনেটে প্রকাশ করা হয়েছে, বাংলাদেশ সরকার গত ১৪ তারিখেই তার তীব্র নিন্দা জানায়।
এ বিষয়ে সরকারের পররাষ্ট্র দপ্তরের দেয়া বিবৃতিতে বলা হয় মত প্রকাশের স্বাধীনতার নামে এমন ঘৃণা ছড়ানো কোনভাবেই মেনে নেয়া যায় না।
তাছাড়া গত রোববার বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ইউটিউবে বিতর্কিত ওই চলচ্চিত্র প্রদর্শনের বিষয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন।
প্রতিবাদ অব্যাহত বিশ্বের বিভিন্ন দেশে
ওই ব্যাঙ্গ চলচ্চিত্রের বিরুদ্ধে হাজার হাজার মানুষের এক প্রতিবাদ সমাবেশে লেবাননে হিজবুল্লা প্রধান হাসান নসরুল্লাহ চলচ্চিত্রের বিষয়টি নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে সতর্ক করে দেন। মি. নসরুল্লাহ তার ভাষণে বিতর্কিত ওই চলচ্চিত্রটি প্রচার বন্ধ করার আহ্বান জানান মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি।
তিনি বলেন, ‘মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে বুঝতে হবে, ওই চলচ্চিত্রটি সম্পূর্ণ প্রচার করা হলে বিশ্বের জন্য সেটি ভয়ঙ্কর খারাপ একটি পরিণতি ডেকে আনবে। প্রতিটি দেশের সরকারের উচিত ওই চলচ্চিত্র আছে এমন যে কোন ওয়েবসাইট বন্ধ করে দেয়া।’
এছাড়া ফিলিপিন্স, ইয়েমেন, পশ্চিম তীর, ইত্যাদি বিভিন্ন জায়গায় মানুষ ওই চলচ্চিত্রের প্রতিবাদ জানিয়েছে।
সব মিলিয়ে বিষয়টি নিয়ে গত মঙ্গলবার থেকে বিভিন্ন সহিংসতায় একডজনের বেশি মানুষ নিহত হয়েছে।
এদিকে ইউটিউবের পক্ষ থেকে বিবিসিকে জানানো হয়েছে, তাদের নীতিমালা ভঙ্গ না করায়, তারা ভিডিওটি সরিয়ে দেয়ার পক্ষপাতী নয়।
তবে এধরনের ভিডিও যেসব দেশে অবৈধ শুধুমাত্র সেসব দেশেই তারা এর প্রচার বন্ধ রেখেছেন।
এছাড়া ভারত, ইন্দোনেশিয়া লিবিয়া ইত্যাদি দেশে ওই নির্দিষ্ট ভিডিওটির প্রচার ইউটিউব নিজেরাই বন্ধ রেখেছে।
Leave a Reply