ফরিদুল মোস্তফা খান, কক্সবাজার থেকে : বাংলাদেশি পাসপোর্টে রোহিঙ্গা জঙ্গিরা এখন বিদেশে পাড়ি দিতে মরিয়া। কক্সবাজারে জঙ্গিদের ধরপাকড় দেখে পাসপোর্ট অফিসে ধরনা দিচ্ছে অনেকে। দালালচক্রের মাধ্যমে মোটা অংকের টাকা দিয়ে রোহিঙ্গা জঙ্গিরা ছদ্মবেশে বাংলাদেশের ভুয়া ঠিকানায় পাসপোর্ট বানিয়ে বিদেশে পাড়ি দেওয়ার পাঁয়তারা চালাচ্ছে বলে জানা গেছে। এ সুযোগে জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে দালালচক্র প্রতিদিন ভিড় করছে জেলা প্রশাসনের কার্যালয়ের আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে।
কক্সবাজারের সীমান্ত উপজেলা টেকনাফ-উখিয়াসহ বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে ৪ লাখ রোহিঙ্গা। তাবে সরকারি হিসাব মতে, কুতুপালং ও নয়াপাড়া শরণার্থী শিবিরে রয়েছে ২৪ হাজার রোহিঙ্গা। দিন দিন কক্সবাজারের বিভিন্ন এলাকায় রোহিঙ্গাদের অনুপ্রবেশ বৃদ্ধি পেলেও তাদের বিরুদ্ধে তেমন কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। শরণার্থীদের মতে, তারা এ দেশে আসছে নাসাকা বাহিনীর অত্যাচারে। তবে প্রশাসন বলছে অন্য কথা। স্থানীয়দের ও প্রশাসনের মতে, নিজেদের ভাগ্য উন্নয়নের জন্য এরা এদেশে পালিয়ে আসছে। কক্সবাজার জেলায় কিছুদিন আগে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে পুলিশের সাঁড়াশি অভিযান চললেও পরবর্তী সময় তা বন্ধ থাকায় রোহিঙ্গারা ফের পুরোদমে মাঠে নেমেছে।
অভিযোগ রয়েছে, রোহিঙ্গাদের আটক করেও বিপাকে পড়তে হয় পুলিশকে। অনেক সময় পুলিশ রোহিঙ্গাদের আটক করলে তাদের ছাড়িয়ে নিতে রাজনৈতিক নেতা থেকে শুরু করে অনেক সমাজপতি থানায় তদবির নিয়ে ভিড় জমায়। জানা গেছে, পর্যটন শহর কক্সবাজারসহ জেলাবাসীর বিষফোঁড়া হয়ে উঠেছে মিয়ানমার নাগরিক রোহিঙ্গারা। মিয়ানমার থেকে অবৈধ পথে কক্সবাজার জেলায় প্রবেশ করে একের পর এক দখল করে নিচ্ছে জেলার শ্রমবাজার ও সংঘটিত করে চলছে নানা অপরাধ কর্মকাণ্ড। চরম মাসুল গুণতে হচ্ছে স্থানীয় নাগরিকদের।
শুধু তাই নয়, ওইসব রোহিঙ্গা একশ্রেণীর দালালচক্রের মাধ্যমে কৌশলে বাংলাদেশি পাসপোর্ট ব্যবহার করে অবৈধভাবে পাড়ি জমাচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে। যেখানে গিয়ে নানা ধরনের অপরাধকর্ম করার মাধ্যমে গা ঢাকা দেয়, সে পাপের ভাগিদার হতে হয় বাংলাদেশিদের, প্রতিনিয়ত ক্ষুণœ হচ্ছে দেশের মান। তেমনি বাংলাদেশি পাসপোর্টে প্রায় লক্ষাধিক রোহিঙ্গা বর্তমানে বাস করছে সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে। এদিকে কয়েকদিন আগে ঢাকা থেকে বাংলাদেশি পাসপোর্টসহ আটক করা হয় বহু রোহিঙ্গাকে।
খুবই দুঃখজনক হলেও সত্য যে,রোহিঙ্গারা এদেশীয় দালালদের মাধ্যমে প্রশাষনকে ম্যানেজ করে দ্বিগুন মূল্যে পাসপোর্ট বানিয়ে বিদেশে পাড়ি জমাচ্ছেন শুধুমাত্র বার্মা সরকারের জুলুম-নির্যাতন থেকে রেহায় পাওয়ার আশায়।বিশেষ করে সাউদি আরব ও মালয়েশিয়া সরকার মজলুম রোহিঙ্গাদের চলাফেরার জন্যে বিশেষ কার্ড প্রদান করে থাকেন,যা হাজার হাজার বাংলাদেশীরা ও সংগ্রহ করে থাকেন।আমার বিশ্বাস,রোহিঙ্গারা(নাম মাত্র কয়েক জন বাদে)বিদেশে পৌঁছার পরে আর বাংলাদেশী পাসপোর্ট ব্যবহার করার প্রয়োজন মনে করেন না।সুতরাং,ঢালাও ভাবে রোহিঙ্গাদের প্রতি অভিযোগ এনে এদেশীয় দালালচক্রের অপরাধ ঢাকা দেওয়ার অপচেষ্টা না করে প্রকৃত অপরাধীদের চিহ্নিত করে গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী করছি।