আহমদ গিয়াস:
সারাদেশের দৃষ্টি এখন কক্সবাজারের রামুর দিকে। গত ২৯ সেপ্টেম্বর রাতে রামুর বৌদ্ধ বসতি ও বিহারে হামলার পর হঠাৎ করে দেশের অপেক্ষাকৃত অবহেলিত এই জনপথটির উপর দৃষ্টি নিবন্ধিত হয় সবার। ভিআইপি, ভিভিআইপিদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠে রামু ধ্বংসযজ্ঞ এলাকা। আসতে থাকেন দেশী-বিদেশী সংস্থার লোকজন। ধারাবাহিকতায় আজ আসছেন সরকারের প্রধানমন্ত্রীও। রামুকে কেন্দ্র করে রাজনীতির মাঠও গরম হয়ে ওঠে।
রামুর ইতিহাস কয়েক হাজার বছরের প্রাচীন। এখানে রয়েছে ঐতিহাসিক স্থাপনাও। কক্সবাজারের গোড়াপত্তন হওয়ার আগে এক সময় এই অঞ্চলের প্রশাসনিক কেন্দ্রবিন্দুও ছিল রামু। কিন্তু প্রায় ২শ বছর আগে বৃটিশ আমলে রামু থেকে প্রশাসনিক কার্যালয় সরিয়ে নেওয়া হয়। কক্সবাজার হয়ে ওঠে প্রশাসনিক নতুন কেন্দ্রবিন্দু। পিছিয়ে পড়তে থাকে রামু। কক্সবাজার জেলার ৮ উপজেলার মধ্যে বর্তমানে ৪ উপজেলা সদর উন্নীত হয়েছে পৌরসভায়। কিন্তু রামু উপজেলা সদর এখনও ইউনিয়ন। নাগরিক সুবিধা বঞ্চিত এখানকার মানুষ। রামুর অধিকাংশ রাস্তা এখনও কাঁচা পাকা। সড়কের অবস্থা বেহাল। এসব রাস্তার উপর দিয়ে গাড়ী চলাচল দূরে থাক, হেঁটে চলাও কষ্টকর। বিশেষ করে রামু সদরের কেন্দ্রবিন্দু চৌমুহনী বৌদ্ধপল্লী সংলগ্ন যে প্রধান সড়কটি চলে গেছে, তা এখনও ইটবিছানো। এই সড়কের উপর দিয়েই এখন চলছে ভিআইপিদের গাড়ী। অথচ এই সড়কে যান চলাচলতো বটেই, হাটতে গেলেও প্রায়শ হোঁচট খেতে হয়। তাই এলাকাবাসী সড়কটির নাম দিয়েছে ‘ভাইব্রেশন রোড’। কিন্তু ২৯ সেপ্টেম্বরের ঘটনার পর বদলে যাচ্ছে রামু। স্বাধীনতার পর যত মন্ত্রী এখানে আসেননি, গত এক সপ্তাহে এসেছেন তার চেয়ে ঢের বেশি। কাল সোমবার আসছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আর প্রধানমন্ত্রীর এই আগমনকে উপলক্ষ করেই বদলে ফেলা হচ্ছে রামুকে। ইটবিছানো সড়ক দ্রুত সংস্কার করে ফেলা হচ্ছে। বৌদ্ধ পল্লী সংলগ্ন সড়কেও লাগছে উন্নয়নের ছোঁয়া। এতে খুব খুশি স্থানীয়রা। তারা আক্ষেপ করে বলছেন, প্রধানমন্ত্রী যদি আরো আগেই আসতেন!
Leave a Reply