আতিকুর রহমান মানিক চলতি পূর্ণিমাতিথির প্রবল সামুদ্রিক জোয়ারে উপকূলীয় বেড়ীবাঁধ বিধস্ত হয়ে কক্সবাজার জেলা ব্যাপী শতাধিক চিংড়ি ঘের প্লাবিত হয়েছে। বুধ ও বৃহস্পতিবার জোয়ারের সময় সমুদ্র উপকূলীয় বেড়ীবাঁধ উপচে ও বিধস্ত হয়ে সামুদ্রিক জোয়ারের পানি ঘেরে ঢুকে কোটি কোটি টাকার আহরণ যোগ্য চিংড়ি ও অন্যান্য মাছ সাগরে ভেসে যাওয়ায় চরম ক্ষতির মুখে পড়েছেন চিংড়ি চাষী, ঘের মালিক ও উদ্যোক্তারা। দ্বীপ উপজেলা মহেশখালী ও কুতুবদিয়াসহ উপকূলীয় পেকুয়া, চকরিয়া, উখিয়া, টেকনাফ এবং সদর উপজেলার সমুদ্রতীরবর্তী চিংড়ি ঘের সমূহ আগে থেকেই প্লাবনঝুঁকিতে ছিল। ৫/৬ দিন আগে পূর্ণিমার জো আরম্ভ হলে প্রতিদিন ক্রমশ বাড়তে থাকে জোয়ারের পানি। প্লাবন আতংকে তখন থেকে উপকূলীয় ঘের মালিকরা বাড়তি জনবল নিয়োগ করে বেড়িবাঁধের দূর্বল ও ঝুঁকিপূর্ণ অংশ মেরামতে আত্মনিয়োগ করেন। কিন্তু প্রাণান্তকর প্রচেষ্টা ও রাতদিন বেড়ীবাঁধ পাহারা দেয়ার পরও শেষ রক্ষা হয়নি। ২৫ জুলাই বৃহস্পতিবার দুপুরে উচ্চমাত্রার সামুদ্রিক জোয়ারের প্রথম ধাক্কাতেই বাঁধ বিধস্ত হয়ে জেলাব্যাপী অপেক্ষাকৃত নি¤œাঞ্চলের অন্তত শতাধিক চিংড়ে ঘেরে ঢুকে পড়ে সাগরের পানি ও বিপুল পরিমাণ আহরণযোগ্য চিংড়ি এবং অন্যান্য মাছ সাগরে ভেসে যায়। এতে মাথায় হাত দেয়ার উপক্রম হয়েছে ঘের মালিকদের। জোয়ার নেমে যাওয়ার পরে তড়িঘড়ি করে কিছু ঘেরের ভাঙ্গণঅংশ মেরামত করা হলেও অধিকাংশ ঘেরে এখনও চলছে জোয়ার ভাটা। স্বাধীনতার আগে নির্মিত উপকূলীয় পোল্ডারের বেড়ীবাঁধ ও স্লুইচগেইট অকেজো হয়ে যাওয়ায় এখন বেশী মাত্রার জোয়ারের চাপ সহ্য করতে পারছে না। ফলে সাগরে সাভাবিকের চেয়ে একটু বেশী জোয়ার হলেই প্লাবিত হচ্ছে চিংড়ি ঘের ও লোকালয়। বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের আওতাধীন কক্সবাজার পানি ব্যবস্থাপনা উন্নয়ণ প্রকল্প (ওয়ামিপ)’র সভাপতি হান্নান মিয়া বলেন, উপকূলে টেকসই বেড়ীবাঁধ নির্মিত না হওয়ায় হুমকির মুখে রয়েছে চিংড়ি চাষে বিনিয়োগ করা শতশত কোটি টাকা। কক্সবাজার মৎস্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, কক্সবাজার জেলায় ৪৩৯৮টি বাগদা চিংড়ি খামার রয়েছে, যার মোট আয়তন ৬২৯০৭ হেক্টর।