শফিউল ইসলাম আজাদ,উখিয়া………..উখিয়া উপজেলার পার্শ্ববর্তী ঘুমধুম ইউনিয়নের সদ্য সমাপ্ত ঘুমধুম উচ্চ বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির নির্বাচনে পরাজিত হয়ে ঝাল-মেটাতে ও ক্ষোভের বহিঃ প্রকাশ ঘটাতে জনৈক এক ব্যক্তি স্কুল নিয়ে ষড়যন্ত্রে মেঁতে উঠেছে। সম্প্রতি নানা মিথ্যা অভিযোগ তুলে বিদ্যালয়ের দীর্ঘদিনের সুনাম ভাবমুর্তি ক্ষুন্ন করার অপপ্রয়াস চালিয়ে আসছে। এতে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, অভিভাবক, সচেতন মহল ও ঘুমধুম বাসীর মধ্যে চাপা উত্তেজনা এবং ক্ষোভ বিরাজ করতে দেখা গেছে। সরজমিনে সংশ্লিষ্ঠ সূত্রে জানা গেছে, গত ১১ জুন ঘুমধুম উচ্চ বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির নির্বাচন সম্পন্ন হয়। নির্বাচনে স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তি জনৈক একেএম জাহাঙ্গীর আজিজের মাতা নুর জাহান বেগম চাচা আলহাজ্ব মোঃ তাহের অভিভাবক সদস্য পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে। এতে মোঃ তাহের ৮ জন প্রতিদ্বন্দ্বির মধ্যে ৭ম অবস্থানে যায়। তিনি সহ নুর জাহান বেগমের শোচনীয় পরাজয় হয়। এই পরাজয়ের গ্লানি সইতে না পেরে গাত্রদাহ হয়ে উঠে এবং বিদ্যালয় নিয়ে গভীর ষড়যন্ত্রে মেতে উঠে। এর অংশ হিসেবে অতি সম্প্রতি বিদ্যালয়ে কুতুপালং শরণার্থী ক্যাম্পের রোহিঙ্গা শিশুদের উৎকোচের বিনিময়ে ম্যানেজ হয়ে ভর্তি করানো হয়েছে বলে এবং স্কুল পরিচালনা কমিটির সভাপতি আলহাজ্ব জাহেদ আলম চৌধুরী ও প্রধান শিক্ষক খাইরুল বশরের বিরুদ্ধে বিভিন্ন মিথ্যা অভিযোগ এনে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সহ সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগ দেন।
পরিচালনা কমিটির সভাপতি আলহাজ্ব জাহেদ আলম চৌধুরী জানান, উক্ত মিথ্যা অভিযোগটি গত ২৪ জুন বান্দরবানের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক তদন্তে আসলে কাগজ পত্র যাচাই করলে উক্ত অভিযোগটি মিথ্যা ও ভিত্তিহীন প্রমানিত হয়েছে। উল্লেখ্য ওই অভিযোগকারী বিগত ২০১০ সালের ভূয়াঁ অভিভাবক সেজে প্রতিদ্বন্দ্বি না থাকায় কমিটির সদস্যের অর্ন্তভুক্ত হয়। বিষয়টি জানা জানি হলে এ বারের নির্বাচনের পূর্বে ভোটার তালিকা হতে বাদ পড়ে।
পরিচালনা কমিটির নব-নির্বাচিত সদস্য ডাঃ মোহাম্মদ শাহ জাহান ও আব্দুস শুক্কুর জানান, যে ছাত্রদের নিয়ে রোহিঙ্গা দাবী করে অভিযোগ করে তারা অত্র ইউনিয়নের স্থায়ী বাসিন্দা। তাদের নামে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে জন্ম নিবন্ধন সনদ দেয়। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পিএসসি পরীক্ষার পাসের সনদ পত্র নিয়ে ষষ্ঠ শ্রেণীতে ভর্তি করা হয়। এছাড়া বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে নির্বাচন না করে গোপনে সদস্য নির্বাচিত করার প্রস্তাব দেয়। এ সম্মতি না দিয়ে প্রধান শিক্ষক গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় পরিচালনা কমিটির নির্বাচন সম্পন্ন করে। ফলে তার বিরুদ্ধে আক্রোশ বশতঃ ক্ষিপ্ত হয়ে এসব অপকর্ম শুরু করেছে। যার প্রমান গত ২৬জুন স্থানীয় সংবাদকর্মীদের দিয়ে কক্সবাজারের বিভিন্ন পত্রিকায় উখিয়ার উপজেলার বর্ষিয়ান রাজনীতিবিদ জালাল আহমদ চৌধুরী, ইউনিয়ন পরিষদের জন্ম সনদ দিতে সুপারিশ করেছেন মর্মে একটি তথ্য প্রকাশ করা হয়। যাহা সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং বানোয়াট, জালাল আহাম্মদ চৌধুরী জানান, আমি ধুমঘুম উচ্চ বিদ্যালয়ের যে সমস্ত ছাত্র/ছাত্রীদের জন্ম সদন দেওয়ার ব্যাপারে রিপোর্ট পেশ করা হয়েছে, তাহা শুধুমাত্র আমার প্রতি একটি আক্রোশ ছাড়া কিছুই নয়। শুধুমাত্র আমি নয়, জেলা মৎস্যজীবি দলের সাধারণ সম্পাদক এম বাদশা মিয়া চৌধুরী বিরুদ্ধে ও অপপ্রচার চালানো হয়েছে। বাদশা মিয়া চৌধুরী জানান, আমি এ ধরনের ঘটনার সাথে জড়িত নয়, কিছু স্বার্থন্বেষী মহল আমার ভাবমূর্তী ক্ষূন্ন করার জন্য এ কাজ করেছে।
ঘুমধুম ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি খারেস সরওয়ার চৌধুরী, বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক মোঃ শাহ জাহান, শিক্ষক প্রতিনিধি ও বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক খোকন কান্তি দাশ জানান, একজন ব্যক্তির কারণে বিদ্যালয়ের ক্ষতি হতে পারে না। এ ব্যাপারে বিদ্যালয়ের অভিভাবক ও সচেতন মহলকে স্কুলের বৃহত্তর স্বার্থে উক্ত ষড়যন্ত্রকারীর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে এবং মিথ্যা অভিযোগ দায়েরকারীর বিরুদ্ধেও শাস্তি মূলক ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য প্রশাসনের কাছে দাবী জানান। অভিভাবক এনামুল হক সচেতন ব্যক্তি ডাঃ নুরুল কবির শিক্ষার্থী ফরিদুল আলম, সাইফুল ইসলাম, আব্দুল করিম ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, জনৈক স্বার্থন্বেষী ব্যক্তির কারনে বিদ্যালয়ের কোন ক্ষতি হলে তাকে ছাড় দেওয়া হবে না। জন সম্মূখে প্রতিবাদ করা করা হবে।
ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান দীপক বড়–য়া এ প্রসঙ্গে জানান, ঘুমধুম উচ্চ বিদ্যালয় অত্র ইউনিয়নের ঐতিহ্যবাহী মেধাবী শিক্ষার্থী গড়ে তুলার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এই বিদ্যালয়ের রোহিঙ্গা ছাত্র ভর্তি সংক্রান্ত যে অভিযোগ তোলা হয় তা সঠিক নয়। ওই সব ছাত্রদের পরিবার এ এলাকার স্থায়ী বাসিন্দা। সুতরাং তাদের সন্তানদের ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে জন্ম নিবন্ধন সনদ দেওয়া হয়েছে।
শফিউল ইসলাম আজাদ
উখিয়া, কক্সবাজার।
০১৮১৯৭৮৫৪৯৬
Leave a Reply