নুর হাকিম আনোয়ার,টেকনাফ / টেকনাফস্থ ৪২ বিজিবির সদস্যরা ৮ মিয়ানমার নাগরিককে আটক করে স্বদেশের উদ্দেশ্য ফেরত পাঠিয়েছে। ৯ নভেম্বর রাত ১টার সময় মিয়ানমার থেকে অবৈধভাবে স্বপরিবারে বাংলাদেশ সীমান্তের শাহপরীরদ্বীপ বিওপি এলাকা গোলাপাড়া থেকে অনুপ্রবেশকালে তাদেরকে আটক করে।আটককৃতদেরকে মানবিক সহযোগিতা দিয়ে রাত ৩টার সময় বিজিবির ক্যাম্পের শাহপরীর জেটি ঘাট দিয়ে ধৃত আটক ৮ রোহিঙ্গাকে পুশব্যাক করা হয়। আটককৃত ৮জনের মধ্যে ৫ মহিলা,৩ শিশু রয়েছে। টেকনাফস্থ ৪২ বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ ব্যাটালিয়ন সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। অপরদিকে হ্নীলা বিওপির সদস্যরা নাফ নদীতে অভিযান চালিয়ে ৫হাজার ৮শ’৪০ বিভিন্ন চোরাই পন্য আটক করে।
***টেকনাফ সীমান্তে দিয়ে মাদকসহ চোরাচালান ও আদম পাচার প্রতিরোধে কাঁটাতারের বেড়া দিতে সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) প্রস্তাব পাঠিয়েছে মন্ত্রালয়ে। একটি নির্ভরযোগ্য সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। এবার মিয়ানমারের পর সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া দিকে বাংলাদেশ। মিয়ানমার সরকার ২০১০ সালের প্রথমদিকে বাংলাদেশ সীমান্তের মিয়ানমারের অভ্যন্তরে কাটাঁতারের বেড়া দেয়া ও সীমানা নিয়ে বিরোধকে কেন্দ্র করে দুই দেশের সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর সাথে বিরোধ ও দেখা দেয়। এই নিয়ে বিওপি,কোম্পানী কমান্ডার,সেক্টর কমান্ডার সহ দুই দেশের নীতি নির্ধারক পর্যায়ে একাধিক বৈঠক ও অনুষ্ঠিত হয়।সর্বশেষ বান্দরবান জেলার নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা ও কক্সবাজার জেলার উখিয়া,টেকনাফ উপজেলার সীমান্ত বর্ডার ক্রস করে আশংকা জনক হারে মায়ানমারের নাগরিক (রোহিঙ্গা)বাংলাদেশে প্রবেশ করাতে দেশের অর্থনীতি ও শ্রম বাজার দখল নিয়ে সরকার শংকায় পড়ে । এরই অংশ হিসেবে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ রোধ করতে বাংলাদেশ সরকার অবশেষে মায়ানমার সীমান্তের বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ২২০ কিলোমিটার সীমান্ত এলাকা জুড়ে কাটাঁতারের বেড়া দেয়ার চিন্তাভাবনা করছে। এই নিয়ে মিয়ানমার সরকারকে চিঠি দেওয়ার প্রস্তুতি ও নিয়েছে বাংলাদেশ সরকার।এই নিয়ে সম্প্রতি রোহিঙ্গা আটকের অভিযানও জোরদার করা হয়েছে । এদিকে বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বর্ডার গার্ড ব্যাটালিয়ন (বিজিবি)’র পাশাপাশি আইন শৃংখলা বাহিনী থানা পুলিশ ও রোহিঙ্গা নাগরিক গ্রেফতার অভিযান অব্যাহত রেখেছে।১৭ বর্ডার গার্ড ব্যাটালিয়ন (বিজিবি)অধিনায়ক লেঃ কর্ণেল খালেকুজ্জামান পিএসসি জানান, বাংলাদেশ সরকার মিয়ানমার সীমান্তের ২২০ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে কাঁটাতারের বেড়া দিতে প্রস্তুতি নিচ্ছে। যা দুদেশের সম্মতিতেই করা হবে। তিনি আশা প্রকাশ করেন, কাঁটাতারের বেড়া তৈরী হলে সীমান্ত দিয়ে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ বন্ধ এবং ইয়াবাসহ মাদকসহ অবৈধ চোরচালান পাচার রোধ করা সম্ভব হবে। টেকনাফস্থ ৪২ বিজিবির অধিনায়ক লেঃ কর্ণেল জাহিদ হাসান জানান,টেকনাফ সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া দিতে মন্ত্রালয়ে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। অচিরেই দু-দেশের সূসম্পর্কের ভিত্তিতে অনুমোদন হলে শ্রীঘ্রই কাজ শুরু করা হবে। বিশ্বস্ত একাধিক সূত্র জানায়, গত জুন মাসে মুসলিম-রাখাইন দাঙ্গার পর থেকে মিয়ানমারের আরকান রাজ্যে রোহিঙ্গারা নিরাপদ আশ্রয়ে বাংলাদেশে ঢুকে পড়েছে ছোট ছোট দলে।আন্তর্জতিক সংস্থা রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে আশ্রয় জানালেও বিপর্যয়ের আশংকায় বাংলাদেশ সরকার রোহিঙ্গাদের শরনার্থী হিসেবে আর আশ্রয় দিচ্ছে না। এ ব্যাপারে বাংলাদেশ কঠোর অবস্থানে রয়েছে। সূত্র আরও জানায়,বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তের ২৭১ কিলোমিটারের মধ্যে ২২০ কিলোমিটার কাঁটাতারের বেড়া দেওয়ার প্রস্তাব নিয়ে সরকার ইতিমধ্যেই তৎপর হয়েছে। এ প্রস্তাব আগামী কিছুদিনের মধ্যেই দূতাবাসের মাধ্যমে মিয়ানমারের কাছে পাঠানো হবে। সেখান থেকে সম্মতি আসার পরপরই কার্যক্রম শুরু হবে। অবশ্য মিয়ানমার সরকার এর আগেই কক্সবাজার ও বান্দরবানের ওপারে নিজেদের অংশে প্রায় দুই শত কিলোমিটারের অধিক এলাকা জুড়ে কাঁটাতারের বেড়া নির্মান কাজ শেষ করেছে। কিছু এলাকায় নিজেদের সীমান্তে কাটাতারের বেড়া নির্মাণ করেছে। স্থানীয় কক্সবাজার পুলিশ সুপার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, রোহিঙ্গাদের অনুপ্রবেশ ঠেকাতে বিজিবিকে সহায়তা দিতে সীমান্তে পুলিশ ও আনসার পাঠানোর ভাবনা করছে সরকার। বৃহস্পতিবার ও গত রোববার এ বিষয়ে কক্সবাজার পুলিশ সুপার কার্যালয়ে বৈঠকও হয়। সীমান্তে ৩ শতাধিক সশস্ত্র পুলিশ ও আনসার মোতায়নের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। প্রথমে এ ধরনের সুপারিশ পর্যালোচনা করে পাঠানো হচ্ছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ে। অনুমোদন হলে বিজিবির সাথে তারা রোহিঙ্গা আটক ও পুশব্যাক অভিযান শুরু করবে ।
Leave a Reply