আমান উল্লাহ আমান, টেকনাফ। ঈদের পরদিন থেকে পর্যটক সমাগম বেড়েই চলেছে সীমান্ত ও পর্যটন নগরী টেকনাফ ও প্রবালদ্বীপ সেন্টমার্টিনে। কোথাও তিল ধরনের ঠাঁই নেই, চারদিকে পর্যটকের পদভারে মূখরিত। পর্যটকবাহী জাহাজ এলসিটি কুতুবদিয়া ও কেয়ারী সিন্দাবাদ ইতিমধ্যে নিয়মিত টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌ রুটে পর্যটক নিয়ে সেন্টমার্টিনে যাত্রা শুরু করেছে। জাহাজগুলোতে ধারন ক্ষতমার চেয়ে অতিরিক্ত যাত্রী বহন করতে দেখা গেছে। এতে যে কোন মূহুর্তে নৌ- দূর্ঘটনা ঘটতে পারে। কোন ঘাটে প্রশাসনের তৎপরতা চোখে পড়েনি।
৩০ অক্টোবর সকালে কুতুবদিয়া জেটি ঘাটে দেখা যায়, ঢাকা, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে পরিবার পরিজনসহ ভ্রমন পিপাসু পর্যটক সৌন্দর্যমন্ডিত প্রবাল দ্বীপ দেখার প্রবল ইচ্ছা নিয়ে টিকেটের জন্য ভিড় করছে। জাহাজ সকাল সাড়ে ৯ টায় সেন্টমার্টিনে উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়ে বিকাল ৫ টায় আবারো নিজ গন্তব্যে ফিরে যাচ্ছে পর্যটকরা। রাত্রি যাপনের জন্য আবাসিক হোটেল না পেয়ে অনেকে ফিরে যাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন ঢাকার পর্যটক আবিদুর রহমান আদিল। তাছাড়া প্রতিনিয়ত ভোগান্তির কথা জানিয়েছেন তিনি। সরকারী ব্যবস্থাপনায় কোন লঞ্চ টার্মিনাল না থাকায় সরকার হারাচ্ছে প্রচুর রাজস্ব। জাহাজগুলো টেকনাফের দমদমিয়া থেকে বেসরকারী উদ্যোগে কয়েকটি কাঠের জেটি দিয়ে সেন্টমার্টিন যাতায়াত করছে প্রতিদিন। হাজার হাজার পর্যটকের জন্য এখনো গড়ে উঠেনি পর্যটন বান্ধব কটেজ। পর্যটকদের ভীড়ের সুযোগ নিয়ে আবাসিক হোটেল ও রেস্তোরা মালিকসহ টেকনাফ সেন্টমার্টিনের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে পন্যের দাম অস্বাভাবিক ভাবে বাড়িয়ে দেয়া হয়েছে। ঢাকা থেকে সেন্টমার্টিন বেড়াতে আসা তরুণ আহসান বলেন, নাফ নদী ও বঙ্গোপসাগরের বুক চিরে অপরূপ সৌন্দর্য মন্ডিত প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিন দেখা ফিকে হয়ে যায় যখন দমদমিয়া জেটি ঘাটে পৌঁছি। তিনি পর্যটন শিল্প বিকাশে লঞ্চ টার্মিনালসহ নৌ-রুট ঘোষনা জরুরী বলে জানান। সচেতনমহলের জোর দাবী টেকনাফ-সেন্টমার্টিন পর্যটনকে সম্প্রসারিত করতে পরিকল্পিত ভাবে টেকনাফ সেন্টমার্টিন নৌ রুট গড়ে তোলার। এদিকে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর প্রায় ৬ কোটি টাকা ব্যয় ২০০৬ সালে পর্যটকদের সুবিধার্থে নির্মাণ করেছে শাহপরীরদ্বীপ ও সেন্টমার্টিনে ২ টি জেটি। এর মধ্যে সেন্টমার্টিন জেটিটির বিভিন্ন স্থানে ভাঙ্গন দেখা দেওয়ায় বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশংকা রয়েছে। কিন্তু জাহাজগুলো অধিক মুনাফার আশায় জেটি ব্যবহার না করে প্রায় ২৩ কিঃ মিঃ অতিরিক্ত দুরত্বে এসে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় জেটি নির্মান করে জাহাজ চলাচল অব্যাহত রেখেছে ২০০৪ সাল হতে।
এছাড়া সেন্টমার্টিনের জেটির অনেকাংশ ভেঙ্গে গেলেও সংস্কার করা হচ্ছেনা। রাত্রি বেলায় সেন্টমার্টিন থেকে টেকনাফ যাতায়াত করার জন্য এ রুটে স্থাপন করা হয়নি রাত্রি কালীন বয়া। রাত্রিকালীন যোগাযোগের জন্য কোন বয়া না থাকায় জরুরী ভিত্তিতে রাতের বেলায় টেকনাফ-সেন্টমার্টিন চলাচল করা যাচ্ছেনা। অপরদিকে টেকনাফ শহরের ৯ কিলোমিটার আগে দমদমিয়াতে পর্যটক নেমে যাওয়ার কারনে অনেক পর্যটক পর্যটন শহর টেকনাফ দেখা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। গোটি কয়েক পর্যটক ভ্রমনে গেলেও জরাজির্ণ সড়কের কারনে টেকনাফ বিমূখ হয়ে পড়ে। তাই টেকনাফ শহরকে পর্যটক বান্ধব হিসেবে গড়ে তোলতে সড়ক সংস্কারসহ পরিস্কার পরিছন্নতার তড়িৎ ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য উর্ধ্বতন মহলের হস্থক্ষেপ কামনা করে সচেতনমহল।
Leave a Reply