টেকনাফ নিউজ ডেস্ক….কক্সবাজার-টেকনাফ ৭৯ কিলোমিটার সড়ক সংস্কারের কাজ চলছে জোড়াতালি দিয়ে। খানা খন্দকে ভরা এ সড়কের বিভিন্ন স\’ানে সড়ক ও জনপদ বিভাগের কর্মীরা ব্যবহার অনুপযোগী ইট ভাঙ্গা দিয়ে ভরাট করলেও সংস্কারের নামে প্রহসন করা হচ্ছে বলে যানবাহন মালিক শ্রমিকদের অভিযোগ। দীর্ঘ সড়ক পথের বেহাল অবস\’ার কারণে সড়ক দুর্ঘটনা বৃদ্ধি পাওয়ায় যাত্রী সাধারণের মাঝে বিরাজ করছে শংকা।
দেশের সীমান্ত শহর টেকনাফের নয়নাভিরাম পর্যটন স্পট নারিকেল জিঞ্জিরা (সেন্টমার্টিন), ছেরা দ্বীপ, মাথিনের কূপ, নাইট্যং পাহাড়ের কুদুম গুহা, স\’লবন্দর ও শাহ পরীরদ্বীপ করিডোর প্রভৃতির বাস্তব দৃশ্য অবলোকন করার জন্য প্রতিনিয়ত হাজার হাজার দেশী-বিদেশী পর্যটক কক্সবাজার-টেকনাফ সড়ক পথ দিয়ে আসা যাওয়া করছে। সড়কের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে খানা খন্দকে পড়ে যানবাহন বিকল হচ্ছে। এতে পর্যটকরাও দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন। সমপ্রতি টেকনাফ ভ্রমণে আসা পর্যটনবাহী একটি মাইক্রো বালুখালী টিভি সম্প্রচার কেন্দ্র এলাকায় দুর্ঘটনার শিকার হয়। এতে একই পরিবারের ৫জন গুরুতর আহত হয়। উখিয়া হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস\’ায় তারা সাংবাদিকদের জানান, টেকনাফ সড়কের এ করুণ অবস\’া জানলে আসতাম না। এভাবেই অনেক পর্যটক টেকনাফ ভ্রমণ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে। টেকনাফ লামার বাজারের ব্যবসায়ী মশিউর রহমান সওদাগর জানালেন, খানা খন্দকের কারণে এখানের মালামাল পরিবহনে যানবাহন শ্রমিকেরা অনিচ্ছা পোষণ করে। তাই মালামান আনতে তাদেরকে অতিরিক্ত ভাড়া দিতে হয়।
কক্সবাজার-টেকনাফ সড়কের ২১টি বাঁকে কোন প্রকার দিকনির্দেশনা সম্বলিত সাইনবোর্ড না থাকা সড়ক দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ বলে যাত্রীরা মনে করছেন। এছাড়াও সড়কের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে বিদ্যমান ব্রিজ কালভার্ট গুলো ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে দীর্ঘদিন থেকে। সড়ক ও জনপদ বিভাগ এসব ঝুঁকিপূর্ণ ব্রিজ কিছুটা মেরামত করে যানবাহন চলাচলের উপযোগী করে তুললেও ভারী মালামাল বোঝাই যানবাহন চলাচলের কারণে এগুলো যে কোন সময়ে ধসে পড়তে পারে বলে যানবাহন শ্রমিক ও যাত্রীরা আশংকা প্রকাশ করেন। সমপ্রতি সড়ক ও জনপদ বিভাগ পানের ছড়া ও খুনিয়াপালং এলাকায় ৩টি কালভার্ট পুনর্নির্মাণ কাজ শেষ করলেও এ সড়কের আরো প্রায় ১১টি ব্রিজ কালভাট ঝুঁকিপূর্ণ অবস\’ায় রয়েছে।
চলতি বর্ষা মৌসুমের শুরুতেই উখিয়া-টেকনাফের উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া ভয়াবহ প্রাকৃতিক দুর্যোগ পরবর্তী টানা বর্ষণে পাহাড়ি ঢলের পানিতে দীর্ঘ সড়কের একাধিক স\’ানে অংশবিশেষ ভেঙে গেছে। সড়কের বিভিন্ন স\’ানে সৃষ্টি হয়েছে অসংখ্য ছোট বড় খানা খন্দক। লণ্ডভণ্ড হয়ে যাওয়া উক্ত সড়কের ওপর দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে যানবাহন চলাচল করলেও যাত্রীসাধারণের সময় অপচয়ের পাশাপাশি যানবাহন মালিকেরা তাদের মূল্যবান গাড়ির যন্ত্রাংশ বিকল হয়ে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। হানিফ পরিবহনের চালক নুরুল ইসলাম জানান, এ সড়কে একবার আসা যাওয়া করলে ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকার যন্ত্রাংশ পরিবর্তন করতে হয়। টেকনাফ পরিবহন মালিক সমিতির সভাপতি মো. হাশেম মেম্বার জানান, সড়ক পথের বেহাল অবস\’ার কারণে যানবাহন মালিকেরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন অথচ সড়ক পথ ব্যবহারের জন্য যানবাহন মালিকদের রাজস্ব আদায় করতে হচ্ছে প্রচলিত নিয়মে। সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. জাহাঙ্গীর জানান, যানবাহন চলাচল নিশ্চিত করার জন্য প্রাথমিকভাবে সড়ক পথ সংস্কারের কাজ অব্যাহত রয়েছে। শুষ্ক মৌসুমে কক্সবাজার টেকনাফ সড়কপথ নতুন করে নির্মাণের কাজ শুরু করা হবে। এছাড়াও ঝুঁকিপূর্ণ ব্রিজ কালভার্টগুলো নতুন করে নির্মাণের আওতায় আনা হবে।
Leave a Reply