হাফেজ মুহাম্মদ কাশেম, টেকনাফঃ…ইউনিয়ন এক, নিয়মানুযায়ী চেয়ারম্যানও থাকার কথা একজন। কিন্তু রীতিমত চেয়ার টানাটানিতে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন ২ চেয়ারম্যান। এঘটানাটি ঘটেছে টেকনাফের উপকূলবতী ইউনিয়ন বাহারছড়ায় । বর্তমানে ২ জন চেয়ারম্যান ক্ষমতা চালিয়ে যাচ্ছেন। দু’জনই নিজকে বৈধ চেয়ারম্যান বলে দাবী করে যাবতীয় দায়িত্ব পালন করছেন। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসাবে শামশুদ্দিন আহমদ মেম্বার দক্ষিণ শীলখালী ইউনিয়ন পরিষদ ভবনে এবং মাওঃ হাবিবুল্লাহ নিজ বাড়ীর পাশে পরিত্যক্ত ইউপি ভবনে দাপ্তরিক কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। তাঁরা দু’জনই চেয়ারম্যান হিসাবে প্রতিদিনই জাতীয়তা সনদ, ওয়ারিশ সনদ, জন্ম নিবন্ধন সনদ দিয়ে যাচ্ছেন। এনিয়ে সাধারণ মানুষ বিভ্রান্তির মধ্যে পড়লেও প্রশাসন এব্যাপারে কোন ব্যবস্থা নিচ্ছেনা। চেয়ারম্যান দু’জন হলেন- বিএনপি নেতা নির্বাচিত চেয়ারম্যান মাওঃ হাবিবুল্লাহ ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ৩নং ওয়ার্ড মেম্বার শামশুদ্দিন আহমদ। জানা যায়- সরকারী বরাদ্দ আত্মসাৎসহ বিভিন্ন দূর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ প্রমানিত হওয়ায় স্থানীয় সরকার মন্ত্রনালয় গত ৩০ আগষ্ট এক আদেশে টেকনাফ উপজেলার বাহারছড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাওঃ হাবিবুল্লাহকে সাময়িক বরখাস্ত করেন। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় ও কক্সবাজার জেলা প্রশাসকের নির্দেশনা অনুসারে প্রয়োজনীয় আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করে টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ সামছুল ইসলাম মেহেদী গত ১২ সেপ্টেম্বর উক্ত ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের মেম্বার শামশুদ্দিন আহমদকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব প্রদান করেন। এরপর থেকে শামশুদ্দিন আহমদ চেয়ারম্যান হিসাবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। এদিকে দূর্নীতির দায়ে সাময়িক বরখাস্তকৃত মাওঃ হাবিবুল্লাহ হাইকোর্টে রিট করলে বিজ্ঞ আদালত ১৭ সেপ্টেম্বর উক্ত বরখাস্ত আদেশ ৩ মাসের জন্য স্থগিত ঘোষণা করেন। মাওঃ হাবিবুল্লাহ ঢাকা থেকে ফিরে অবস্থা বেগতিক দেখে ২১ সেপ্টেম্বর আনুষ্ঠানিক ভাবে আওয়ামীলীগে যোগদান করে চেয়ারম্যান হিসাবে দায়িত্ব পালন শুরু করেন। গ্রামাঞ্চলের অশিক্ষিত সাধারণ মানুষ কারটা বৈধ এবং কারটা অবৈধ তা বুঝছেনা। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান শামশুদ্দিন আহমদ ৪ অক্টোবর বিকালে এপ্রতিবেদককে বলেন- গত ১২ সেপ্টেম্বর টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী অফিসার লিখিতভাবে আমাকে দায়িত্বভার অর্পন করেছেন। এরপর কোন প্রকার আদেশ নিষেধ দেননি। সে হিসেবে আমি এখনও বাহারছাড়া ইউনিয়নের বৈধ চেয়ারম্যান। তাই আমি সনদপত্র প্রদানসহ যাবতীয় দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছি। অপরদিকে এব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে মাওঃ হাবিবুল্লাহ বলেন- আদালত স্থগিতাদেশ দেওয়ার পরপরই আমি চেয়ারম্যান। এজন্য আমি যাবতীয় সনদ দিয়ে যাচ্ছি। এদিকে গত ৪অক্টোবর বিকালে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান শামশুদ্দিন আহমদ টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট একটি আবেদন দাখিল করেছেন। এতে উল্লেখ করা হয়েছে- ১২ সেপ্টেম্বর ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব ভার অর্পন করার পর থেকে এপর্যন্ত দায়িত্বে নিয়োজিত রয়েছেন। পক্ষান্তরে মাওঃ হাবিবুল্লাহকে গত ৩০ আগষ্ট স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় থেকে সাময়িক বরখাস্ত হবার পর এখনও তাঁর কাছে সরকারী বৈধ কোন কাগজপত্র নেই। তা সত্বেও বিধি বহির্ভূত ভাবে টিআর প্রকল্পের কমিটি দাখিলসহ চেয়ারম্যান হিসাবে কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। আবেদনে দাখিলকৃত কমিটি অনুমোদন না করতে অনুরোধ জানানো হয়েছে। প্রসঙ্গতঃ মাওঃ হাবিবুল্লাহ দুঃস্থ মহিলাদের ভিজিডি কর্মসূচীর চাল নিজেই টেকনাফ উপজেলা খাদ্য গুদাম থেকে উত্তোলণ করে নিয়ে গিয়ে নিজ বাড়ীর পাশে পরিত্যক্ত ইউপি ভবনে রাখেন। এর পর ২ অক্টোবর সরকারী ভাবে দায়িত্বপ্রাপ্ত ট্যাগ অফিসার ও মেম্বারদের অবহিত না করে নিজেই চাল বিতরণ করেন। বাহারছড়া ইউনিয়নের মেম্বারগণ জানান- ইউনিয়নের অধিকাংশ ওয়ার্ডেই এই চাল বিতরণ হয়নি। কিন্তু মাওঃ হাবিবুল্লাহ দাবী করেছেন-১ও২নং ওয়ার্ড ছাড়া সব ওয়ার্ডেই চাল বিতরণ এবং ট্যাগ অফিসারকে ফোনে অবহিত করা হয়েছে। ট্যাগ অফিসার উপজেলা সমবায় অফিসার মোঃ বখতেয়ার কামাল বলেন- আমাকে ভিডিজি চাল বিতরণ বিষয়ে অবহিত করা হয়নি। #########
Leave a Reply