মমতাজুল ইসলাম মনু, টেকনাফের হ্নীলা রঙ্গিখালীর এক মেম্বার কর্তৃক নির্যাতনের অভিযোগ তুলেছেন স্থানীয় গৃহবধু খদিজা বেগম। গতকাল ১৬ আগষ্ট বিকাল ৫টায় হ্নীলা সিকদার প্লাজায় এক জনাকীর্ণ সংবাদ সম্মেলনে ওই গৃহবধু এ অভিযোগ তুলেন। উপজেলার হ্নীলা রঙ্গিখালী গাজী পাড়া এলাকার আবদুল হামিদ কাফিয়ার স্ত্রী খদিজা বেগম সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলেন, ‘তিনি পেশাগতভাবে একজন এনজিও কর্মী ও ব্যক্তিগতভাবে একজন নিরীহ আইন মান্যকারী মহিলা হন। গত ১৪ আগষ্ট রাত সাড়ে ৭টার দিকে ইফতারের পর তারাবিহর নামাজ পড়তে তাঁর স্বামী ও অন্যান্য পুরুষ সদস্যরা পার্শ্ববর্তী মসজিদে নামাজ পড়তে যাওয়ার কিছুক্ষণ পর বাড়ীর সদর দরজায় ধাক্কাধাক্কি শুনে দরজা খুলে তিনি দেখেন তাঁর এলাকার শফিক মেম্বারের আপন ছোট ভাই বেলাল, চাচাত ভাই ফয়সাল, মিজানুর রহমান বাগাইস্সা, লুৎফুর রহমান, শব্বির, জসিম ও জয়নালসহ আরো ১৫/২০ জনের একটি দল রড, লাঠি ও কিরিচসহ ধারালো অস্ত্র নিয়ে আমাদের বাড়ীর উঠানে দাঁড়িয়ে আছে। এ সময় শফিক মেম্বারের ভাই বেলাল তাঁকে হুংকার দিয়ে বলে যে, ‘তোদের বাড়ীতে অস্ত্র আছে। ওই অস্ত্র উদ্ধারের জন্য আমাদের সাথে সিভিল ড্রেসে পুলিশ এসেছে। আমরা বাড়ীতে ঢুকব। তখন তিনি বিনীতভাবে বলেন, বাড়ীতে কোন পুরুষ মানুষ নেই। ঘরে কয়েকজন যুবতী পর্দনসীন মহিলা আছে। বাড়ীতে পুরুষ মানুষ আসলে তিনি বাড়ীতে ঢুকতে পারবেন।’ খদিজা আরো জানান, এ সময় তাঁর কথা শুনে মেম্বারের ভাই বেলাল তেলে বেগুনে জ্বলে উঠে অশালীন ভাষায় গালিগালাজ করতে করতে তাঁর দিকে তেড়ে আসে। এরপরও তিনি বিনীতভাবে বারবার অনুরোধ করতে থাকলে বেলাল হঠাৎ এসে তাঁর তলপেটে লাথি মারে। এতে তিনি প্রচন্ড ব্যাথ্যায় চিৎকার করতে থাকলে বেলাল তাঁকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয় এবং গলা চেপে ধরে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। এ অবস্থায় বেলাল তাঁর গলায় থাকা ১ ভরি ওজনের স্বর্ণের চেইন ছিনিয়ে নেয়। এরপর তারা হুড়মুড় করে আমার বাড়ীতে প্রবেশ করতে চাইলে তাঁদের শোরচিৎকারে এলাকাবাসী এগিয়ে আসলে তারা পালিয়ে যায়। এরপর তিনিসহ তাঁর স্বামী শফিক মেম্বারকে ঘটনা জানালে তিনি তাঁকে ও তাঁর স্বামীকে অস্ত্র মামলায় জড়াবে বলে উল্টো আমাদের শাসায়। পরে তিনি প্রচন্ড অসুস্থতা বোধ করলে টেকনাফ হাসপাতালে ভর্তি হন।’
সংবাদ সম্মেলনে তিনি শফিক মেম্বার ও তার পেটোয়া বাহিনীর নির্যাতনের বর্ণনা দিয়ে জানান, গত ২ বছর ধরে তাঁর এবং তাঁদের পার্শ্ববর্তী আত্মীয় আবদুল মজিদ, মাস্টার ইসমাইল ও ছাবের আহমদের পরিবারের সদস্যদের বিভিন্নভাবে নির্যাতন-নিপীড়ন করে আসছে। তারা আবদুল মজিদের ১৫ বছর পূর্বে সৃজিত বিভিন্ন প্রজাতির বৃক্ষের বাগান জবর-দখল করে ১০ হাজার গাছ কেটে নিয়ে যায়। মাস্টার ইসমাইলের ২ পুত্র, ছাবের আহমদের ৫ পুত্র, আবদুল মজিদের ৫ পুত্রের বিরুদ্ধে বিভিন্ন মিথ্যা ও হয়রাণীমূলক মামলা দিয়ে জেল-হাজতসহ এলাকা ছাড়া করেছে। এমনকি বিগত ১৭ এপ্রিল রঙ্গিখালী ষ্টেশনে প্রকাশ্য দিবালোকে আমার চাচাত দেবর ছৈয়দুল আমিনের মোটর সাইকেল তার বন্ধু বিশিষ্ট ঠিকাদার হ্নীলার জাহাঙ্গীর আলম সোহেলের কাছ থেকে হাইজ্যাক করে নিয়ে যায়। এ নিয়ে সাংবাদিক সম্মেলনসহ বিভিন্ন সরকারী দপ্তরে স্মারকলিপি প্রেরণ করা হলেও এখনো ওই মোটর সাইকেল উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। সংবাদ সম্মেলনে তিনি উক্ত ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত পূর্বক বিহীত ব্যবস্থা নেয়ার জন্য উখিয়া-টেকনাফের মাননীয় সংসদ সদস্য, জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, টেকনাফ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, গণমাণ্য ব্যক্তিবর্গসহ সকল মহলের কাছে আকুল আবেদন জানান।
###############################
মমতাজুল ইসলাম মনু,
টেকনাফ ॥
মোবাইল নং-০১৪৪৩-৭২৫৩৪৩
Leave a Reply