হাফেজ মুহাম্মদ কাশেম, সাগর দিয়ে চোরাইপথে মালয়েশিয়াগামী ৭০ জন যাত্রী গতকাল ১৯ সেপ্টেম্বর সাঁতারে তীরে উঠেছে। চাঞ্চল্যকর এঘটনা ঘটেছে টেকনাফ উপজেলার উপকূলীয় ইউনিয়ন বাহারছড়ার কচ্ছপিয়া এলাকায়। অথচ এব্যাপারে স্থানীয় প্রশাসন একেবারে নির্বিকার। প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে- রোহিঙ্গা ও বাংলাদেশী মিলে ৭০ জন মালয়েশিয়াগামী যাত্রী ১৮ সেপ্টেম্বর রাত ১ টার দিকে বাহারছড়ার কচ্ছপিয়া থেকে নৌকায় করে সাগরে অপেক্ষমান ট্রলারে উঠে। এতে স্থানীয় বাসিন্দা, অনুপ্রবেশকারী রোহিঙ্গা, রেজিস্টার্ড ও আন-রেজিস্টার্ড ক্যাম্পের রোহিঙ্গা, কক্সবাজার জেলার বিভিন্ন উপজেলার বাসিন্দা, কক্সবাজার জেলার বাইরের বিভিন্ন উপজেলার বাসিন্দা ছিল। তারাই আবার গতকাল বুধবার ১৯ সেপ্টেম্বর সকাল ১০ টার দিকে কচ্ছপিয়া দিয়েই সাঁতরে কুলে উঠে ভেজা কাপড়ে যার যার গন্তব্য চলে যায়। ফিরে আসা মালেয়েশিয়াগামী যাত্রীরা জানায়- কচ্ছপিয়া গ্রামের ২ ফরিদ আহমদ ও বড়ডেইলের কামরুলসহ আদম পাচারকারী সিন্ডিকেট জনপ্রতি ১লাখ ৬০ হাজার টাকায় চুক্তিবদ্ধ হয়েছিল। জনপ্রতি ৩০ হাজার টাকা নগদ এবং ১লাখ ৩০ হাজার টাকা মালয়েশিয়া পৌঁছে পরিশোধ করার কথা। সেমতে তারা জনপ্রতি ৩০ হাজার টাকা করে দালালদের পরিশোধও করেছে। কিন্তু তাদের সাথে কথা ছিল সাগর উত্তাল বিধায় শিপে করে নিতে হবে। গভীর রাতে নৌকায় করে সাগরে অপেক্ষমান জাহাজে নেয়া বাবৎ এর বাইরে মাথাপিছু আরও ১ হাজার টাকা করে জোর পূর্বক নিয়েছে আদম পাচারকারী দালাল চক্র। কিন্তু যাত্রীরা সাগরে গিয়ে দেখে অপেক্ষমান জাহাজটি শিপ নয়, বড় সাইজের কাঠের তৈরী ট্রলার। তারা কাঠের ট্রলার দিয়ে পাড়ি দিতে জোর প্রতিবাদ জানালেও দালালচক্র তাদেরকে উঠিয়ে দ্রুত সটকে পড়ে। যাত্রীরা আরও জানায়- কাঠের ট্রলারটিতে কয়েকজন মগ(রাখাইন)রয়েছে। তাদের ধারণা এ্ই ট্রলার টেকনাফ স্থল বন্দরে পণ্য নিয়ে এবং শাহপরীরদ্বীপের করিডোরে গবাদিপশু নিয়ে মিয়ানমার থেকে আগত ও খালি ফিরে যাওয়া ট্রলার। দালাল তাদেরকে ট্রলারে তুলে দ্রুত সটকে এবং ট্রলার ছেড়ে দেওয়ার পর মাঝি-মাল্লার সাথে মালয়েশিয়াগামী যাত্রীদের ঝগড়া লেগে যায়। তারা কোন অবস্থাতেই কাঠের ট্রলারে করে যেতে রাজী হয়নি। ট্রলারটি ভোর হওয়ার আগেই সেন্টমার্টিনদ্বীপ অতিক্রম করে গভীর বঙ্গোপসাগরে গিয়ে পৌছে। কিন্তু যাত্রীদের প্রবল বাধার মুলে মাঝি-মাল্লারা ফিরিয়ে আনতে বাধ্য হয়। সকাল ১০ টার দিকে কচ্ছপিয়া শিলেরতুড়া নামক স্থানে পৌছলে যাত্রীরা সাগরে ঝাপ দিয়ে সাঁতরিয়ে তীরে উঠে। এদিকে শাহপরীরদ্বীপ বিওপির বিজিবি জওয়ানরা ১৯ সেপ্টেম্বর ভোর রাতে শাহপরীরদ্বীপ মিস্ত্রীপাড়া মালয়েশিয়া পাড়ি দিতে জমায়েত হওয়া ১১ জন যাত্রীকে আটক করেছে। এরা হচ্ছে- মহেশখালীর ছৈয়দ কবিরের পুত্র ছালামতুল্লাহ(২২), মৃত নুর আহমদের পুত্র আব্দুর রশিদ(৩২), টেকনাফের হোয়াইক্যং শাহআলমের পুত্র বেলাল উদ্দীন(৩০), বড়ইতলী মীর আহমদের পুত্র মোঃ আয়াজ(২৪), পল্লানপাড়া কালা মিয়ার পুত্র আব্দুর শুক্কুর(২৫), শাহপরীরদ্বীপ কেফায়তুল্লাহর পুত্র মোঃ জুবাইর(২১), নুর হোছনের পুত্র মোঃ হেরাল(২৫), মৃত নুর মোহাম্মদের পুত্র নুরুল আজিজ(২৩), মৃত নুর কাজীর পুত্র জাফর আলম(১৯), মংডু আশিক্যাপাড়া মৃত আবুল কাজীর পুত্র মোঃ ঈছমাইল(২০), বুচিদং নাকপ–রা মৃত নুরুল হকের পুত্র মোঃ ইছমাইল(১৮)। মিয়ানমার নাগরিক ২ রোহিঙ্গাকে পুশব্যাক এভং বাংলাদেশী ৯ জনকে টেকনাফ মডেল থানায় সোর্পদ করে আদম পাচারকারীদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।####
Leave a Reply